বালুরঘাট: ১০ মাসে সরকারি যুব আবাসে থাকেনি ১৫ জনও। কোটি টাকার আবাস বর্তমানে ধুঁকছে। বছর কয়েক আগে ঘটা করে উদ্বোধন করা হয়েছিল বালুরঘাট যুব আবাসের। বর্তমানে এখানে ঘর ভাড়া দেওয়া হয়। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকজনই এই আবাসে ঘর ভাড়া নিয়ে থেকেছেন। মাসখানেক আগে রাজ্য যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরের পক্ষ থেকে এনিয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও এই আবাসে কেউ থাকার আগ্রহ প্রকাশ করছেন না। অনলাইনে আবাসের ঘর বুক করা যায় বলে জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা জানিয়েছেন।
প্রায় ছয় বছর আগে বালুরঘাট ব্লকের ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের হোসেনপুর এলাকায় শুভায়ন হোমের পাশে তৈরি করা হয় বালুরঘাট যুব আবাস। উদ্বোধনের পর তা তালা বন্ধ অবস্থায় ছিল। তবে করোনার সময় আবাসটিকে কোয়ারান্টিন হোম ও পরে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করে জেলা প্রশাসন। করোনার সময় রোগীদের এই আবাসনে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হত। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর আবাসনটি ফের তালাবন্ধ হয়ে যায়।
কয়েক মাস আগে আবাসনটি খোলা হয়। বর্তমানে আবাসনে মোট ৩১টি ঘর রয়েছে। এর মধ্যে নন এসি ডবল বেড রুম ১২, নন এসি ট্রিপল বেড রুম ৮, নন এসি ফোর বেড রুম ২, ভিভিআইপি রুম ২, ভিআইপি রুম ২ এবং স্মল সাইজ ডবল বেড রুম ৫টি রয়েছে। যেখানে এক সঙ্গে ৭৪ জন থাকতে পারবেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি অত্যাধুনিক সুবিধাযুক্ত। যে গুলি ভাড়া দেওয়া হয়। সব থেকে কম ভাড়া ৫৫০ টাকা ও সর্বোচ্চ ভাড়া ২ হাজার টাকা জন প্রতি। এছাড়াও এই ভবনের নীচে অনুষ্ঠান ভবন রয়েছে। যে কোনও অনুষ্ঠানের জন্য এটি ভাড়া দেওয়া হয়। নীচের অনুষ্ঠান ভবনের ভাড়া ঠিক করা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। এই আবাসে তিন জন নিরাপত্তা রক্ষী রয়েছেন। এছাড়াও তিন জন কর্মী রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টাই খোলা থাকে যুব আবাস। শুধু স্টুডেন্ট নয় যে কেউ ভাড়া নিতে পারে বলেই জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। ঝা চকচকে আবাস হলেও কেন ভাড়া হচ্ছে না তা নিয়ে সদুত্তর মেলেনি।
এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশে এই যুব আবাস রয়েছে। বেশ কয়েক বছর আগে এটি তৈরি করা হয়। মাঝে এই আবাসে করোনা রোগীদের রেখে চিকিৎসা করা হত। তারপর তা বন্ধ ছিল। যুব আবাসটি বর্তমানে ভাড়া দেওয়া হয়। তবে আবাসে সেরকম কাউকে ভাড়া থাকতে দেখি না।’ এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রিঙ্কু মণ্ডল বলেন, ‘শহর থেকে বেশ কিছুটা বাইরে হওয়ার কারণে হয়তো যুব আবাসে সেভাবে কেউ থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন না। রেল স্টেশন বা বাসস্ট্যান্ড অনেকটাই দূরে।’
এবিষয়ে যুব আবাসের কর্মী প্রশান্ত দত্ত বলেন, ‘নিরাপত্তারক্ষী সহ মোট ছয় জন কর্মী কাজ করি। প্রতিদিন আমরা তিন শিফটে আমরা কাজ করি। তবে খুব বেশি ভিড় হয় না।’
অন্যদিকে, এবিষয়ে জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, ‘বালুরঘাট যুব আবাসে ঘর ভাড়া দেওয়া হয়। যে কেউ যে কোনও জায়গা থেকে অনলাইনে ঘর বুক করতে পারবেন। সব রকম সুবিধা রয়েছে আবাসে। এই আবাসে সাধারণ মানুষ যাতে থাকে তার জন্য নানারকম ভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে।’