উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ একসময়ে মমতার ছায়াসঙ্গী সোনালি গুহ বর্তমানে প্রাক্তণ। সর্বদাই এই জাঁদরেল নেত্রীকে দেখা যেত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে। কপালে বড় টিপ পরে সোনালি গুহকে দেখা গিয়েছে বিধানসভায় ভাঙচুর চালাতে, থানায় ঢুকে ওসিকে শাঁসাতে। ফলে বাম আমল থেকে মমতার গুড বুকেই ছিলেন প্রাক্তণ বিধায়ক।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট না পেয়েই সোনালি গুহ দূরত্ব তৈরি করেন তৃণমূলের সঙ্গে। অভিমানে বিজেপিতে যোগ দিলেও ফল বেরনোর পর ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ‘নতুন তৃণমূল’-এ স্থান হয়নি একদা মমতা ঘনিষ্ঠ এই নেত্রীর। সম্প্রতি একের পর এক ইস্যুতে মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে শুরু করেছেন তিনি। ফের সংবাদে শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছে সাতগাছিয়ায় প্রাক্তন। তাঁর একের পর এক মমতা অভিষেকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্যে অস্বস্থিতে পরতে হচ্ছে তৃণমূলকে।
সামনেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ক্ষমতার রাশ নিজেদের হাতে রাখতে যখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রামে গ্রামে ঘুরে নবজোয়ার কর্মসূচী করছেন, তখন তাদের বিরুদ্ধেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেই চলেছেন সোনালি গুহ। এবার ২০১৮-র পঞ্চায়েতে সন্ত্রাস ও ভোট লুঠের জন্য অভিষেকের দিকেই আঙুল তুললেন সোনালি। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিরোধীদের কোথাও মনোনয়ন জমা দিতে দেননি অভিষেক। আমাকে তিনি বলেছিলেন, সোনালি পিসি আমি পঞ্চায়েত ভোটের দিন কোনও গণ্ডগোল করব না। কিন্তু, বিরোধীরা যাতে মনোনয়ন দিতে না পারে তার বন্দোবস্ত করব।’
তিনি আরও বলেন, অভিষেককে তখন এমনকাজে দলের তরফে নিষেধ করা সত্ত্বেও তৃণমূল সাংসদ তাঁর কোনও কথা শোনেননি বলেই দাবি সোনালির। বিরোধীরা যাতে নমিনেশন দিতে না পারে, সেই কারণে জেলাশাসকের অফিসে তৃণমূলকর্মীদের বসিয়ে রাখা হয়েছিল। এটা অভিষেকের নির্দেশেই হয়েছিল। একদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, আরেকদিকে অনুব্রত মণ্ডল। দু’জনেই এক কাজ করেছেন। অনুব্রত এখন তিহাড়ে, অভিষেককেও সেখানে যেতে হবে।’
সোনালি গুহের অভিযোগ, ‘২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের সময় ভোটের কাজের জন্য আমি গাড়ি চেয়েছিলাম, কিন্তু আমাকে তা দেওয়া হয়নি। করোনার সময় অভিষেক যে কল্পতরু রান্নাঘর থেকে মানুষকে খাবার দিয়েছেন, সেই কাজে বিপুল পরিমান অর্থ খরচ করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখের স্বামী রমজান শেখ। নাম হয়েছে অভিষেকের। যদিও এখন কেউ এটা স্বীকার করবেন না। ইদের সময় সংখ্যালঘু এলাকাতেও অভিষেক যেতেন না। কিন্তু এখন রেড রোডে ইদের অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে তাঁকে দেখা যায়। এই নিয়ে যত কম বলা যায়, তত ভালো’