নির্বাচন কমিশনের আবেদনে সাড়া, হাইকোর্টে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সিদ্ধান্ত খারিজ

কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নোটিশ খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে অশান্তির ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মানবাধিকার কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে কমিশনের ডিজি (তদন্ত) রাজ্যের স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করবেন বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এর পালটা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল নির্বাচন কমিশন। সেই মামলায় শুক্রবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওই নোটিশ খারিজ করে দিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। স্পর্শকাতর এলাকা মানবাধিকার কমিশনের ডিজি চিহ্নিত করতে পারবেন না বলেও জানিয়েছে আদালত। গত কয়েকদিনে আইনি লড়াইয়ে বারবার আদালতের রায় নির্বাচন কমিশনের বিপক্ষে গেলেও এই প্রথম কোনও মামলায় রায় কমিশনের পক্ষে গেল।

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বে অশান্তির আবহে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছিল, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ডিজি। পাশাপাশি পঞ্চায়েত ভোটের সময় যে সব এলাকায় অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে, সেই স্পর্শকাতর এলাকাগুলি চিহ্নিত করবেন ডিজি। স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করার পর কমিশনকে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেবেন ডিজি। নির্বাচনের আগে এবং পরে মানবাধিকার যাতে লঙ্ঘন না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিবকেও নোটিশ দিয়েছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। তবে এদিন কমিশনের পক্ষে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

এতদিন নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে আইনি লড়াইয়ে বারবার মুখ থুবড়ে পড়েছে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। রাজ্যের সব জেলাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। প্রথমে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানিয়েছিলেন, আদালতের নির্দেশমতো পদক্ষেপ করা হবে। পরে সেই অবস্থান বদল করে কমিশন। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। গত মঙ্গলবার সেই মামলায় রাজ্য এবং কমিশনের আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখে শীর্ষ আদালত। আদালতের নির্দেশের পর নির্বাচনে ২২টি জেলার জন্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল কমিশন। কিন্তু এত কম সংখ্যাক বাহিনী দিয়ে কীভাবে নির্বাচন সম্ভব? বুধবার সেই বাহিনী চাওয়া নিয়ে আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে কমিশন। এই আবহে প্রথম কোনও আইনি লড়াইয়ে আদালতের নির্দেশ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষে গেল।