Friday, February 14, 2025
Homeউত্তরবঙ্গPaush-Sankranti | পিঠে পুলির উৎসবের প্রস্তুতি তুঙ্গে, মাটির সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ততা মৃৎশিল্পীদের

Paush-Sankranti | পিঠে পুলির উৎসবের প্রস্তুতি তুঙ্গে, মাটির সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ততা মৃৎশিল্পীদের

রাজু হালদার ও বিশ্বজিৎ প্রামাণিক, গঙ্গারামপুর ও কুমারগঞ্জ: পৌষ-সংক্রান্তি ঘিরে বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠেপুলির উৎসবের প্রস্তুতি তুঙ্গে। এটা তৈরি করতে দরকার মাটির সরা, কড়াই, ছাঁচ এবং ঢাকনার। কুমারগঞ্জের গোপালগঞ্জ, বিশ্বনাথপুর, সাফানগর, চকবড়ম এবং পারপতিরামে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। গঙ্গারামপুর শহর সংলগ্ন বিভিন্ন কুমোরপাড়ায় জোরকদমে তৈরি হচ্ছে পিঠে ভাজা মাটির সরা। সেই সঙ্গে পৌষ-পার্বণকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পিঠে ভাজা মাটির সরার পসরা সাজিয়ে বসছেন মৃৎশিল্পীরা। তবে বর্তমান প্রজন্ম পিঠের প্রতি খুব বেশি আকৃষ্ট না হওয়ার ফলে, পিঠে ভাজা মাটির সরার কাটতি আগের থেকে অনেকটাই তলানিতে নেমেছে।

বেলবাড়ি পালপাড়ার মৃৎশিল্পী সন্তোষ পালের কথায়, ‘আগে পৌষ-পার্বণের প্রায় একমাস আগে থেকে মাটির সরা তৈরি করা হত এবং ১৫ দিন আগে থেকে বিক্রি শুরু হত। সেসময় প্রতিটি বাড়িতেই পিঠেপুলি তৈরি হত। এখন সেই জৌলুস অনেকটাই কমেছে। ফলে আগের থেকেও মাটির সরা তৈরি অনেকটাই কমেছে, বিক্রিও স্বাভাবিকভাবেই কমেছে।’

মৃৎশিল্পী রেবা পাল জানান, ‘আগে মাটির সরা তৈরি করে বাজারে নিয়ে গেলে নিমিষে বিক্রি হয়ে যেত। এখন অনেকটাই বিক্রি কমেছে। কারণ নতুন প্রজন্ম, আগের মতো পিঠেপুলি খান না বলে চাহিদা কমেছে। এখন ২৫-৩০ টাকা দরে মাটির সরা বিক্রি করছি।’

পানসমিতি এলাকার মৃৎশিল্পী মাধব পাল বলেন, ‘মাটির সরার উৎপাদন আগের থেকে প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। মাটির সরায় ভালো পিঠে তৈরি করতে মূলত কাঠের উনুনের প্রয়োজন হয়। এখন কাঠের উনুন অনেকটাই কমেছে। ফলে মাটির সরার চাহিদা অনেকটাই কমেছে। বিক্রিও তলানিতে নেমেছে।’

এবিষয়ে প্রবীণ সাহিত্যিক সুবোধ দে বলেন, ‘ছেলেবেলায় মা-দিদিমারা পৌষ-পার্বণের সময় মাটির সরাতে নানান পিঠা তৈরি করত এবং আমরা সেসব খেতাম। স্বাদ যেন অমৃত। বর্তমান সময়ে ছেলেমেয়েদের একটা বড় অংশ পিঠে সেভাবে তৈরি করতে পারেন না। সেই সঙ্গে পিঠে খাওয়ার আগ্রহ অনেকটা কমেছে। ফলে পৌষ-পার্বণে মাটির সরার সঙ্গে সঙ্গে পিঠে তৈরি সংক্রান্ত দ্রব্যের চাহিদা অনেকটাই কমেছে।’

পাশাপাশি, কুমারগঞ্জের বিশ্বনাথপুরের রতন পাল জানান, ‘প্রতি বছর এই সময় আমরা প্রচুর মাটির সামগ্রী তৈরি করি। বাজারে এগুলোর চাহিদা খুব বেশি থাকে। ৩০ টাকা থেকে ৬০ টাকার মধ্যে ছোট-বড় বিভিন্ন পিঠে তৈরির সরঞ্জাম বিক্রি করি। কয়েকদিন পর বিক্রি আরও বাড়বে।’ সরা, মাটির কড়াই, ছাঁচ-ঢাকনা তৈরি করেন কার্তিক পাল। বলেন, ‘এই পেশার ওপর আমাদের জীবিকা নির্ভরশীল। পৌষ-সংক্রান্তির সময় বাড়তি আয়ে অনেকটাই উপকার হয়।’

তবে আধুনিক সময়ে প্লাস্টিক বা লোহার সরঞ্জামের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা তাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও বাঙালির ঐতিহ্য আর আবেগের কারণে মাটির সামগ্রীর কদর এখনও রয়েছে। তবে কদর থাকলেও বিক্রি কতটা হবে তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন এলাকার সব মৃৎশিল্পী।

Sandip Sarkar
Sandip Sarkarhttps://uttarbangasambad.com/
Sandip Sarkar Reporter based in Darjeeling district of West bengal. He Worked in Various media houses for the last 22 years, presently working in Uttarbanga Sambad as Sr Sub Editor.
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
- Advertisment -spot_img
[td_block_21 custom_title="LATEST POSTS"]

Most Popular