বারবিশা: গ্রামের সরু রাস্তায় বালি-পাথর বোঝাই ট্রাক, ডাম্পার সহ ভারী যানবাহন চলাচল রুখতে ফের বিধায়কের দ্বারস্থ হলেন ভল্কা চড়াইমহল গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামবাসীর ডাকে সাড়া দিয়ে সোমবার চড়াইমহলে যান কুমারগ্রামের বিধায়ক মনোজকুমার ওরাওঁ। সেখানে সভা করে নিজেদের অভাব-অভিযোগ, সমস্যা এবং অসহায়তার ব্যাপারে বিধায়ককে জানান গ্রামবাসী। সেসব শুনে সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে কয়েকদিন সময় চেয়ে নেন মনোজ। গ্রামবাসীর অভিযোগ, সমস্যা মেটানোর জন্য লিখিত দাবি তাঁরা মাস দেড়েক আগে জেলা শাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারকে জানিয়েছিলেন। মাঝে কিছুদিন গ্রামের পথে ভারী যান চলাচল বন্ধ ছিল। এখন ফের শুরু হয়েছে। এব্যাপারে পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘অভিযোগ জমা পড়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
এদিকে গ্রামবাসীর সঙ্গে সভা শেষে মনোজ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘গ্রামের বেশ কয়েকজন বয়স্ক মানুষ আমার বাড়িতে গিয়ে সমস্যার কথা জানান এবং আলোচনার জন্য গ্রামে ডাকেন। সবার কথা শুনলাম। রাস্তায় দাঁড়িয়ে বালি-পাথরের ট্রাক, ডাম্পার আটকে ঝামেলা সৃষ্টি না করার আবেদন গ্রামবাসীকে জানিয়েছি। দিনরাত গ্রামের সরু পথে ভারী যানবাহন চলাচল নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। বালি-পাথরের কারবারিরা নানাভাবে গ্রামবাসীদের ভয় দেখাচ্ছে। শুনে অবাক হলাম যে, প্রশাসনের কর্তারাও গ্রামবাসীর পক্ষে নেই। উলটে প্রশাসনই গ্রামবাসীর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। কাজ না হলে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব।’
গ্রামবাসীদের মধ্যে অসিত সরকারের বক্তব্য, ভারী যানবাহনের দৌরাত্ম্যে রাতে তাঁরা ঘুমোতে পারছেন না। গ্রামের রাস্তা ভাঙছে। দুর্বল সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছে। দিনে ছয় চাকার ট্রাক চলাচল করলেও সূর্য ডোবার পর থেকেই ১০-১৮ চাকার দৈত্যাকার ডাম্পার রাস্তা, সেতু এবং ঘরবাড়ি কাঁপিয়ে চলাচল শুরু করে। বাধা দিলে নানা হুমকি দিচ্ছে বালি-পাথরের কারবারিরা। এমনকি ২০-৩০ জনের লেঠেলবাহিনীর রোষের মুখেও পড়তে হচ্ছে তাঁদের। গ্রামবাসীদের একটাই দাবি, ভল্কা চড়াইমহল দিয়ে বালি-পাথর পরিবহণ বন্ধ হোক। এলাকায় একটি হাইস্কুল, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি শিশুশিক্ষাকেন্দ্র আছে। এছাড়া দুটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রও রয়েছে। সরু পথে দিনরাত ট্রাক, ডাম্পার চললে পাশ দিয়ে যাতায়াতের পরিস্থিতি থাকে না। কোনওদিন অঘটন ঘটে গেলে সেই দায় কে নেবে? প্রশ্ন এলাকাবাসীর। প্রতিবাদ জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে বলে বক্তব্য তাঁদের।