কলকাতা : এমন পরিস্থিতি ক্লাবের ইতিহাসে আগে আসেনি তা নয়। ডার্বিতে কয়েক কদম পিছিয়ে থেকে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে বাজিমাত করেছে ইস্টবেঙ্গল, তা দৃষ্টান্তও ময়দানে ঢের আছে।
কিন্তু এই লাল-হলুদ যেন অতীতের ছায়ামাত্র। আইএসএলের ১৩ ম্যাচে জয় মাত্র একটিতে। শেষ ম্যাচে বিশ্রী চার গোল হজম। সব দেখেশুনে হাত তুলে দিয়েছেন চিরলড়াকু সমর্থকরাও। উল্টে ডার্বিতে নামার আগেই গ্রাস করতে শুরু করেছে হারের আতঙ্ক।
সমর্থকরা হাল ছাড়লেও আশা ছাড়ছেন না কোচ মারিও রিভেরা। এসসি ইস্টবেঙ্গলের প্রশিক্ষকের গলায় দৃঢ় প্রত্যয়ী সুর, এসসি ইস্টবেঙ্গলও ডার্বি জিততে পারে। তাঁর যুক্তি, লিগটেবিলের অবস্থান ডার্বিতে গুরুত্বপূর্ণ নয়। ম্যাচটা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে। এবং যেকোনও মূল্যে সেটা আমরা জেতার চেষ্টা করব।
দুই প্রধানের ডার্বি যুদ্ধে সমর্থকরাই প্রাণভ্রোমরা, ইস্টবেঙ্গলে আলেহান্দ্রো জামানায় সহকারী হিসেবে তা চাক্ষুষ করে গিয়েছেন মারিও। সেই সূত্র ধরে দলের বিদেশি তারকাদের তাতানোর চেষ্টায় নেমে পড়েছেন তিনি। রিভেরা বলেন, কলকাতা ডার্বির মাহাত্ম্য বিদেশি প্লেয়ারদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। সমর্থকরা অধীর আগ্রহে এই ম্যাচের অপেক্ষায় থাকেন। তাদের গুরুত্ব প্লেয়ারদের বুঝতে হবে। দর্শকঠাসা সল্টলেক স্টেডিয়ামের বেশকিছু ভিডিও প্লেয়ারদের দেখিয়েছি। আমি জানি, সমর্থকদের জন্য এই ম্যাচটা জেতা কতটা জরুরি।
ধারেভারে এটিকে মোহনবাগান যে তাঁর দলের চেয়ে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে সেটা ভালোই বুঝতে পারছেন এসসি ইস্টবেঙ্গল কোচ। আর তা বুঝেই বড় ম্যাচে নামার আগে চাপের কৌশলী খেলা শুরু করে দিয়েছেন লাল-হলুদের স্প্যানিশ হেডস্যর। বলেছেন, এটিকে মোহনবাগান প্রথম চারে ফেরার দৌড়ে রয়েছে। ফলে ওদের ওপর চাপ অনেক বেশি থাকবে। তিন পয়েন্ট এটিকে মোহনবাগানের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জন্যও তাই। তাছাড়া সবুজ-মেরুনের আক্রমণভাগ সেরা। জিততে গেলে ওদের দৌড় থামাতেই হবে।
ডার্বিতে নিজেদের আন্ডারডগ মানলেও লড়াই ছুঁড়ে দেওয়ার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর এসসি ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডার অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়ে। তাঁর কথায়, বড় ম্যাচে কেউ এগিয়ে কিংবা পিছিয়ে থাকে না। লড়াইটা ৫০-৫০। নতুন কোচ মারিও আসার আগে রেনেডি (সিং) ভাই আমাদের মানসিকভাবে অনেকটাই উজ্জীবিত করেছেন। আমরা নিজেদের কিছু ভুলভ্রান্তির জন্য হায়দরাবাদ ম্যাচে গোলহজম করেছি। নয়তো ম্যাচটায় খুব খারাপ খেলেছি, তা নয়।
চোটআঘাত সমস্যা দলের পারফরমেন্সে প্রভাব ফেলছে। সঙ্গে কড়া কোভিডবিধি ফুটবলারদের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করছে দাবি অঙ্কিতের। তিনি বলেন, চোটআঘাত সমস্যা আমাদের ভুগিয়েছে। শুরুতে আমার চোট ছিল। মার্সেলা, পর্চেও চোটের কবলে পড়ে। হীরার কোভিড ধরা পড়ে। আদিল (খান) ভাইয়েরও সমস্যা ছিল। সবমিলিয়ে ডিফেন্সিভ লাইনআপ কখনও সেট হয়নি। তবে সব প্রতিকূলতা জয় করে শনিবার এসসি ইস্টবেঙ্গলকে জেতাতে মরিয়া লাল-হলুদের এই বাঙালি তারকা।
আরও পড়ুন : ডার্বি জয়ের আত্মবিশ্বাসে ফুটছে সবুজ-মেরুন