সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫

কবিতা

শেষ আপডেট:

ভদ্রলোক

পিনাকেশ সরকার

যেহেতু তুমিও ভদ্রলোক

     তোমার কি এইসব তীব্র শোক

 বিরহ নামক

             ক্ষুব্ধ অন্তরীপে

কিংবা দূর মেঘের সমীপে

       চুপচাপ বসে থাকা সাজে?

কাজে ও অকাজে

    তুমি যে প্রান্তরজোড়া বাঁধের ছিদ্র খুলে

অবান্তর জল ডেকে আনো

              মাঠ কি কখনও

নদী বা সমুদ্র হতে পারে?

             শক্ত মাটি হবে জেনো

 নিরাকার স্বপ্ন ফেনিল

            তাতে কোনও লাভ নেই

যেহেতু তুমিও এক ভারসাম্যবাদী

         তোমার উচিত অকৃত্রিম ও আদি

 নিজস্ব উঠোনে ফিরে যাওয়া

                বিরহে ও বিপ্লবে

 অযাচিত বসন্ত উৎসবে

            তুমি কেন যোগ দেবে?

অন্ধ হয়েছে দুই চোখ?

                তুমি তো সুচারু ভদ্রলোক!

দ্বিধাগ্রস্ত সন্ধ্যা

তাপস ওঝা

অনিবার্য পরিণতি দ্বিধাদীর্ণ করে দেয়

                              কখনো-কখনো।

পুরোপুরি সচেতন থেকেছি,

নতুন ঘরটির জানলা বন্ধ রেখেছি,

ধারাবাহিকতা কিন্তু রাখা হল না।

বড়ই বিভ্রান্ত হয়ে

অপছন্দের মানুষদের একটি তালিকা

নির্মাণ করি,

হল সেসব –

অসমান ইচ্ছেগুলোকে আর একমুখী

                                      করা গেল না।

নিমগ্ন থাকি বা না থাকি –

বেলা বয়ে আমার ঘরটিতে সন্ধ্যা নামে।

দান 

নির্মাল্য ঘোষ 

 

বইয়ে যতটুকু লেখা আছে…
তুমি ততটুকুই জানো। তার বেশি নয়।
তাই তো…
তুমি জেনে এসেছ – প্রেম এক অধিকার।

স্বামী স্ত্রী’র সম্পর্কের মতোই  যেন এক অধিকার।

শুধু জানোনি… প্রেম এক দান।

দানের বিনিময়ে কোনও প্রত্যাশা হয় না –

কোনও অধিকার হয় না।

তা না হলে…

বসন্তও প্রেমের গন্ধ ছড়িয়ে কিংবা

পলাশকে অকাতরে দান করে

বিনিময়ে কিছু চাইত।

জল
আশিস চক্রবর্তী

অনন্ত পিপাসা নিয়ে অপেক্ষায়  থাকি
সততার নির্যাসের ফোঁটা ফোঁটা স্বচ্ছ জল ভেতরে তেষ্টা মেটায়
দূষণের অপেয় জলে ভরে আছে অবিশ্বাসের জলাশয়
কুয়োয় দড়ি বালতি নামিয়ে মৃত্তিকা নিংড়ে জল তোলে
একরত্তি  ফুটফুটে বালিকা; জল ওঠে না, জল ওঠে না
খরতাপে কপালে চিবুকে বিন্দু বিন্দু স্বেদ জমে
সেও তো জলেরই অন্যরূপ অপেয় লালিত্যে ভাসে
পিপাসা বুকে সেই মূর্ত ছবি আঁকি সুষমা ও বিভাসে
জল যে এতো মহার্ঘ দুটো তৃষিত চোখে বালিকাও বোঝে
আর জলকে উপেক্ষা করে স্বেচ্ছায় চলে গেছো দূরে
অবিশ্বাসের  অপেয় জল তুলে দিয়ে আমারই পিপাসার্ত বুকে।

সংরাগ

মধুছন্দা  মিত্র  ঘোষ

তোমাকে বোঝার আগেই

তোমার দূরত্ব, আমাকে অগোছাল করে দেয়

তোমার নিকটতা, তোমার দূরূহতা,

সরলরেখা টেনে এঁকে দেয়

      অস্থির আলাপন

যাপন ও অনুভবের অবয়ব ভেঙে শোনায়

রোদ-বৃষ্টির নিরন্তর আঁকিবুকির গল্প

স্থাবর সম্পত্তির মতো

নতজানু প্রবোধে বাঁধা থাকে

      সংরাগের রেখাচিত্র…

মায়ের উনুন

অভিজিৎ সরকার

 

উনুন জ্বলতে জ্বলতে উনুনের মাটি পুড়ে যায়

ক্রমশ রং পালটে নেয় সেই মাটির উনুন।

তবুও আগুন জ্বলে, রান্না হয়

মা কাদা জল মেখে লেপে দেয় উনুনের বুক

রোজ আগুন জ্বলে

কত শত ভাত হয়,

আমি তাকিয়ে থাকি উনুনের দিকে

আগুনকে দেখি,

মাকে দেখি,

আর দেখি কীভাবে আগুনের তাপে পুড়ে যাচ্ছে মা ও মায়ের উনুন।

 তৃষ্ণা 

 তাপস চক্রবর্তী

সব তৃষ্ণা

একদিন জীবন হয়ে যায়,

সূর্য দাউদাউ করে জ্বলে

তৃষ্ণার আকাশ জলের

সমার্থক শব্দ হয়ে ভাসে।

আমি অন্ধকারে সাঁতার কেটে

দ্বীপে উঠি

যেখানে অবসাদ শবকে

ছুঁয়ে থাকে তৃষ্ণা হয়ে।

Sabyasachi Bhattacharya
Sabyasachi Bhattacharyahttps://uttarbangasambad.com/
Sabbyasachi Bhattacharjee Reporter based in Darjeeling district of West bengal. He Worked in Various media houses for the last 23 years, presently working in Uttarbanga Sambad as Sr Sub Editor.

Share post:

Popular

More like this
Related

সরকারি চাকরি মানেই শান্তির জীবন নয়

মানসী কবিরাজ অ্যালবামের পাতা ওলটালেই দেখা যাবে  আমাদের প্রায় ...

কবিতা

১ অ-কৃতজ্ঞ সোমা দে সভ্যতার ভেতরে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বর্বরতা শরীর থেকে...

সোনার সংসার, যুদ্ধের সংসার

অরিন্দম ঘোষ বাংলায় ‘সোনার-সংসার’ বলে একটা শব্দবন্ধ আছে। এই...

গুজরাট যখন বাংলাকে মনে করায়

দেবদূত ঘোষঠাকুর  সম্প্রতি গুজরাটের পশ্চিম উপকূল ধরে ঘুরে একটা...