১
অভিলাষ
- দুর্গাশ্রী মিত্র
অবিরাম বৃষ্টির পর গাছের গা বেয়ে
চুইয়ে পড়া জলে অভিমান লেগে থাকে
বিনিদ্র রাত্রির বুকে নেমে আসা ঝরনায় ধৌত হয় প্রহরী
অপেক্ষার ভোরে শোনা যায় নীলাভ কলির সুর
বাতাসের হিমেল স্পর্শ শুষে নেয়
অভিমানসিক্ত নোনা জল
বেহায়া মন নিমেষে ভুলে যায় সব ভুল!
প্রেম যাপনের দিনে অভিমান মুছে,
আরও একবার, বারবার
রক্তাক্ত নগরী বাঁচে ভালোবাসায়…
২
ক্ষমতার পেরেক
- কিশোর মজুমদার
কখন ছড়াবো সেমিকলন, মেঘ,
চিলেকোঠায় আলোক বিচ্ছুরণ?
প্রশ্নমালায় শরীর ধারণ – বিষণ্ণ আবেগ
শীততাপে জর্জড়িত মন নির্যাতন;
অতীতমালায় কেস-স্টাডি, থ্রেট কালচার
সময়ের ডাস্টবিন-এ গুঁজে রাখা
ক্ষমতার পেরেক
গণতন্ত্র তুমি কার? একা আমার, না সবার?
লঙ্ঘিত কানাগলি শিল্পিত বিবেক।
মনে পড়ে অরুণাভ রক্তিম আভায়
গীতাঞ্জলি সত্যি জাগে রবীন্দ্রভাষায়
৩
একটা কবিতার জন্য
- রাজু সাহা
একটা কবিতার জন্য আমার দীর্ঘ
রাত জাগা,
একটা কবিতার জন্য গভীর ঘুমে
স্বপ্ন খোঁজা।
একটা কবিতার জন্য অনন্ত
পথ হাঁটা,
একটা কবিতার জন্য আনমনে
বসে থাকা।
একটা কবিতার জন্য অনেক
দুঃখ গড়া,
একটা কবিতার জন্য কাঁটার
মুকুট পরা।
একটা কবিতার জন্য তোমায়
ভালোবাসা,
একটা কবিতার জন্য এই
ধরায় আসা।
৪
ঠিক ভুল
- তাপসী লাহা
জলঝড়ের রাতগুলো
সঙ্গতে তার অসমাপিকা কান্নাবালারা
সহজভাবে ঝরে যাওয়াদের চেয়ে এক অনাকর্ষক মুখ নিয়ে দিব্যি বেঁচে থাকারা
টিপ্পনী কাটল পথ পেরিয়ে যেতে যেতে যেমন
এভাবেই হয়তো পথ হয়
দুমড়ানোর গন্ধ, রক্তাক্তের রাত
পথ্যদের ফুল হয়ে ফুটে থাকা মাত্র আসা যাওয়ার রুটে।
ঝড় এল কত
কতই বা গেল
শব্দের জিঘাংসা লেখা
অশ্লীল জীবনজুড়ে।
৫
বসন্ত রঙের সকাল
- বিপুল আচার্য
দৌড়াতে থাকি যেভাবে রঙিন চাদর ছুঁয়ে
তাতে তথ্য গোপন থাকে না নিরিবিলি বার্তালাপে…
ঠোঁট পর্যন্ত হেঁটে থমকে দাঁড়ালে
উপোসি মনে হয় নিদারুণ দুপুরে
এই যে একটা ভালোবাসার চাঁদ
কপাল ঘাম মুছে দেয় জ্যোৎস্না রাত্তিরে
ওসব বলা থাকে না চাওয়াপাওয়ার হিসেবে
এসব বরং শিখিয়ে দেয় মুক্তির কথা, তাই
চুপচাপ ধ্যানমগ্ন রই বসন্ত রঙের সকালের কাছে…!
৬
ভাঙন
- নির্মাল্য ঘোষ
ভাঙতে ভাঙতে যখন একদম শেষ
দেখি
মেঘ ভাঙা বৃষ্টির স্বস্তি।
ভাঙতে ভাঙতে যখন হতাশ
দেখি
লাঙল ভাঙা মাটির উর্বরতা।
ভাঙার যখন আর শেষ নেই
দেখি
বীজ ভেঙে নতুন জীবনের অঙ্কুরোদ্গম।
তাই,
ভাঙতে আর ভয় পাই না…
এখন…