উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ “ওরা আমাকে জেলের ভিতরে বিষ ইঞ্জেকশান প্রয়োগ করে মেরে ফেলতে পারে”, এমন আশঙ্কাই করছেন আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় গ্রেপ্তার ইমরান খান। বুধবার ইসলামাবাদ আদালতে এমন বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়াও তাকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টা পরও শৌচাগারে যেতে দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ করেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী।
মঙ্গলবার ইসলামাবাদ আদালতের সামনে থেকে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের চেয়ারম্যান ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করে পাক রেঞ্জার্স। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি পাকিস্তা্নের। বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হয়। এজলাসে ইমরান বলেন, “ওরা বিষ ইঞ্জেকশান দেয়। যার জেরে ধীরে ধীরে একজনের মৃত্যু হয়। ওরা হয়তো আমাকে মকসুদ চাপরাশির মতো খুন করবে। সেই ভয়টাই পাচ্ছি।”
কে এই মকসুদ চাপরাশি? বর্তমান পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক তছরুপ মামলার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন মকসুদ চাপরাশি। আচমকাই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। এর পরই শাহবাজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিষ ইঞ্জেকশান দিয়ে চাপরাশিকে হত্যার অভিযোগ তোলেন ইমরান খান।
এদিকে, গ্রেপ্তারির একদিনের মাথাতেই তোষাখানা মামলায় প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে অভিযুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছে পাক আদালত। ফলে এই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের ক্ষেত্রে আর কোনও বাধাই রইল না।
পাশাপাশি, ইমরানকে হেফাজতে নিতে এদিন আদালতে আবেদন জানায় ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো। যার বিরোধীতা করেন ইমরানের আইনজীবী। যদিও তাঁকে ৮ দিনের জন্য তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত।
এদিন ইমরানের সঙ্গেই গ্রেপ্তার হন তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত আসাদ উমর। গতকাল ইমরানের গ্রেপ্তারির খবর ছড়িয়ে পড়তেই পাকিস্তানের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। অবিলম্বে ইমরানের মুক্তির দাবিতে পথে নামে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। লাহোর, মুলতান থেকে শুরু করে ইসলামাবাদ, কোয়েট্টা বা করাচি – সর্বত্রই শুরু হয় বিক্ষোভ। হামলা হয় একের পর এক পাক সেনা শিবিরে। অশান্তি এড়াতে খাইবার পাখতুনখোয়া ও পঞ্জাবে নেমেছে সেনা। দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট। এছাড়া আগামী বেশ কয়েকদিন স্কুল বন্ধ থাকবে বলেও ঘোষণা করেছে প্রশাসন। দেশের এই অস্থির পরিস্থিতিতে হু হু করে পড়ে যাচ্ছে টাকার দাম। পাকিস্তানি টাকার দাম পড়েছে ১.৩ শতাংশ। এদিন এক মার্কিন ডলারের দাম ২৮৮ পাক টাকা ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া পাক বন্ডের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমেছে ০.৪ শতাংশ।