দীপঙ্কর মিত্র: ভগ্নপ্রায় জমিদারবাড়ি এলাকায় একসময়ে আসর বসত সমাজবিরোধীদের। অপরাধ করে নাগর নদী পার হয়ে সমাজবিরোধীরা সহজে এসে ডেরা বাঁধত জমিদারবাড়ি চত্ত্বরে। দিবারাত্রি চলত মদ-জুয়ার আসর। ফলে আতঙ্কে দিন কাটত এলাকাবাসীর। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর বাহিন রাজবাড়িতে পুলিশ ক্যাম্প বসার পর এলাকা একেবারে সমাজবিরোধী মুক্ত। ভগ্নদশাগ্রস্ত জঙ্গলাকীর্ণ বাহিন রাজবাড়ির আগাছা কেটে পুলিশ ক্যাম্প তৈরি হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা।
রায়গঞ্জ শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে ঐতিহ্যবাহী বাহিন জমিদারবাড়ি। ষাট বা সত্তর দশকে জমিদার পরিবার এই বিশাল দুর্গ ছেড়ে রায়গঞ্জ রবীন্দ্রপল্লিতে আসেন। ফলে ওই জমিদারবাড়ি দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে চারিদিক আগাছায় ভরে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা দরজা জানালা ভেঙে নিয়ে চলে যায়। এরপরই সমাজবিরোধীদের আস্থানা হয়ে ওঠে এই জমিদারবাড়ি। বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নাগর নদী। নদী পার হলেই বিহার। বিহার থেকে সমাজবিরোধীরা বাংলায় এসে অপরাধমূলক কাজকর্ম করে বিনা বাধায় বিহারে ফিরে যেত। রায়গঞ্জ থানা থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরত্বে হওয়ায় রায়গঞ্জ পুলিশ খুব বেশি সেখানে নজর দিতে পারত না। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি মেনে ২০২০ সালে ভগ্নদশাগ্রস্ত জঙ্গলাকীর্ণ বাহিন রাজবাড়িতে গড়ে তোলা হয় পুলিশ ক্যাম্প। বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ ক্যাম্প হওয়ায় এলাকায় সমাজবিরোধীদের যেমন আনাগোনা বন্ধ হয়েছে, তেমনি মদ-জুয়ার পাশাপাশি চুরি-ছিনতাই কমেছে। তবে গোটা অঞ্চল সেভাবে মদ-জুয়া মুক্ত হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা মুলুকচন্দ্র দাস জানান, পুলিশ ক্যাম্প হওয়াতে মদ-জুয়ার পাশাপাশি চুরি-ছিনতাই অনেকটা বন্ধ হয়েছে। তবে ক্যাম্পের পরিকাঠামো বাড়ানো হলে পুলিশকর্মীরা আরও ভালভাবে কাজ করতে পারবেন।’
পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ প্রলয় লাকড়া জানান, ফোর্স ছাড়া আর কিছুই নেই। তাই সমস্যাতো আছেই। রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার জানান, ক্যাম্পের নিজস্ব গাড়ি না থাকলেও মোটর বাইক দেওয়া হয়েছে। কোনও ঘটনা ঘটলে রায়গঞ্জ থেকে পুলিশ কর্মীরা সেখানে যান। ক্যাম্পের জন্য যখন যা প্রয়োজন তা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : পড়ুয়া ও অভিভাবকদের সঙ্গে সমন্বয় রাখতে চা বাগানে ট্যাবলো