কোচবিহার: কোচবিহার-১ ব্লকের ঘেঘিরঘাট ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠল। আর এই ঘটনা ঘিরে সোমবার বিকাল থেকে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় স্থানীয় গ্রাহকদের মধ্যে। গ্রাহকদের দাবি, দিনের পর দিন কষ্টার্জিত টাকা ওই পোস্ট অফিসে জমা করে আসছেন তাঁরা, কিন্তু সেই টাকার পুরো অংশ তাঁদের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। উল্লেখ্য, এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি টাকা তছরুপের হিসাব উঠে এসেছে।
কিন্তু কীভাবে হয়েছে এই দুর্নীতি? স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত রাজভরের কথায়, ‘আমি গত বছর ডিসেম্বরে বাড়ি বিক্রির ৫ লক্ষ টাকা ওই পোস্ট অফিসে ফিক্সড করি। সে সময় পোস্টমাস্টার আমাকে একটি সাদা কাগজে টাকার পরিমাণ লিখে সিল,সই করে দিয়েছিলেন। এদিন দেওয়ানহাট পোস্ট অফিসে গিয়ে দেখতে পাই আমার নামে শুধুমাত্র দেড় লক্ষ টাকা জমা হয়েছে।’ এলাকারই চন্দ দম্পতিও এই আর্থিক তছরূপের শিকার হয়েছেন। জনৈক কালু চন্দ জানান, ‘এখানে আমার ও স্রী অনিতা চন্দর নামে দু’টি পাশ বই আছে। আমরা প্রতিমাসে আলাদাভাবে সেগুলিতে ৩ হাজার টাকা করে জমা দিতাম। উনি তা পাশ বইয়ে হাতে লিখে দিতেন। এদিন হিসাব মেলাতে গিয়ে দেখি দুজনের পাশবইয়ে ১৫ হাজার টাকা করে কম আছে।’
এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় দু’শো জন গ্রাহকের তরফে এমন আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছে। এলাকার জনৈক নির্মল গোস্বামী দু’লক্ষ টাকা, কালিদাস দাস ৩৫ হাজার টাকা তছরুপের অভিযোগ করেছেন। এদিন প্রতারিত গ্রাহকেরা সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযুক্ত ওই পোস্টমাস্টারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তবে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ সেখানে পৌঁছয়নি। অভিযুক্ত ওই পোস্টমাস্টার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে ডাক বিভাগের কোচবিহার ডিভিশনের সুপারিনটেনডেন্ট অজয় শেরপার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওই পোস্ট অফিস নিয়ে আমাদের কাছে এর আগে কোনও অভিযোগ আসেনি। বর্তমানে যে অভিযোগ উঠেছে তা প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।উপযুক্ত প্রমাণ থাকলে গ্রাহকদের টাকা ফেরত পেতে কোনও সমস্যা হবে না।’ এর পাশাপাশি তিনি আরও জানান,এর আগে যে সমস্ত পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরূপের অভিযোগ উঠেছে তাদেরকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।