কামাখ্যাগুড়ি: ঠিক এক সপ্তাহ সময় লাগল শহিদ ক্ষুদিরাম কলেজ নিয়ে জট কাটতে। গত মঙ্গলবার কামাখ্যাগুড়ির ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্যরা বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠকেই কলেজের অধ্যক্ষ শ্যামলচন্দ্র সরকারকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আর সোমবার পরিচালন সমিতি সিদ্ধান্ত নিল, আবার কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দিতে পারবেন শ্যামল। এদিন পরিচালন সমিতি ও অধ্যক্ষ, যুযুধান দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করিয়ে দিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিকবড়াইক। আলিপুরদুয়ার জেলার শিক্ষাক্ষেত্রে সরাসরি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের উদাহরণ হয়ে থাকল শহিদ ক্ষুদিরাম কলেজের এই ঘটনা।
সোমবার এই নিয়ে জরুরি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শহিদ ক্ষুদিরাম কলেজের অপসারিত অধ্যক্ষ, কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি শুক্লা ঘোষ, সেই সমিতির সরকার মনোনীত প্রতিনিধি বিপ্লব নার্জিনারি, ওয়েবকুপার জেলা সভাপতি দোলন সরকার প্রমুখ। প্রকাশ বলেন, ‘কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালন সমিতির প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা করেছি। শ্যামলকে পুনরায় এই কলেজের অধ্যক্ষ পদে চাকরির জন্য আবেদনের কথা বলেছি। পরিচালন সমিতিকেও বিষয়টি মিটিয়ে নিতে বলেছি। উভয়পক্ষ বিষয়টি মেনে নিয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।’
সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে অধ্যক্ষের পুনর্বহালের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে ঠিকই, তবে তাঁকে স্থায়ীপদে এখনই নিয়োগ করা হচ্ছে না। তিনি সেই প্রবেশন পিরিয়ডেই থাকছেন। এবার তাঁর মেয়াদ দশ মাস পর্যন্ত বাড়ানোর কথা হয়েছে।
এদিন বৈঠকের পর বিপ্লবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি অধ্যক্ষকে পুনর্বহাল নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কেবল বলেন, ‘রাজ্যসভার সাংসদ প্রকাশ চিকবড়াইকের উপস্থিতিতে এবিষয়ে কথা হয়েছে। আমরা কেউ দলের বাইরে নই। দল যা বলবে, তাই হবে।’ পরিচালন সমিতির সভাপতি শুক্লাও একই সুরে বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’
অপসারিত অধ্যক্ষ শ্যামল বলেন, ‘আমাকে অপসারণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলাম। পরিচালন সমিতি জানিয়েছে, তারা সদর্থক সিদ্ধান্ত নেবে। গত এক সপ্তাহে যাঁরা আমার পাশে থেকেছেন, তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই।’
শহিদ ক্ষুদিরাম কলেজের অধ্যক্ষকে অপসারণ করার পর যে প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছিল, তাতে অল বেঙ্গল প্রিন্সিপাল কাউন্সিলের সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তাঁরা পরিচালন সমিতির সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। পরবর্তীতে অধ্যক্ষের পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছিলেন। এদিন বৈঠকের পর সেই সংগঠনের সদস্য পঙ্কজকুমার দেবনাথ সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বলেন, ‘শ্যামলকে অপসারণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে তাঁকে পুনর্বহাল করলে তার থেকে ভালো আর কিছু হতে পারে না। যাঁদের উদ্যোগে এটা সম্ভব হচ্ছে তাঁদের সকলেরই সাধুবাদ প্রাপ্য।’