উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ দিন দিন বাড়ছে বেকারের সংখ্যা। চাকরির বাজারে বড় আকাল। আর বেকারত্বের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশে এবার এল অভিনব কাজের ‘টোপ’। লক্ষ লক্ষ টাকা আয়ের সুযোগ পাবেন বেকার যুবকরা। কাজ অবশ্য বিশেষ কিছু নয়, সক্ষম পুরুষ চাই। যিনি মহিলাদের গর্ভবতী করতে পারবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার ছক কষেছিল একটি চক্র। সেই ফাঁদে পা দিয়ে ঠকতে হয়েছে বহু মানুষকে। বিষয়টি নজরে পড়তেই সক্রিয় হল পুলিশ।
ঘটনাটি নতুন নয়, এর আগে এমনই এক চক্র সক্রিয় ছিল হরিয়ানায়। এবার সেই চক্রের হদিশ মিলল বিহারের নওয়াদা জেলায়। জানা গিয়েছে, জেলার নারদীগঞ্জ মহকুমার কহুয়ারা গ্রামে ঘাঁটি গেড়েছিল মোটা টাকা রোজগারের দুর্নীতিচক্র। প্রতারণার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত বিহার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে তিন জনকে। এর নেপথ্যে আর কে বা কারা যুক্ত ছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘নিঃসন্তান মহিলাদের গর্ভবতী করে টাকা কামাও’, এটাই লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে ছিল প্রতারণা চক্রের ট্যাগলাইন। ভালই পসার জমিয়ে ফেলেছিল প্রতারকরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পর্দাফাঁস হয়ে গেল। বিজ্ঞাপন দিয়ে চক্রটি প্রলোভন দেখাতো, নিঃসন্তান মহিলাদের গর্ভবতী করতে পারলে মিলবে ১০ লক্ষ টাকা। এমনকি মহিলা গর্ভবতী না হলেও টাকা আয়ের সুযোগ থাকবে। সেক্ষেত্রে দেওয়া হবে ৫০ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে, এই বিজ্ঞাপনের প্রলোভনে পা দিয়ে ইতিমধ্যে অনেকেই টাকা পাওয়ার বদলে খুঁইয়েছেন মোটা অংকের টাকা। এমনকি ব্ল্যাকমেলও করা হতো বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। ওই বিজ্ঞাপন দেখে টাকা রোজগারের আশায় অনেকেই ওই কাজে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁদের কাছ থেকে কখনও আইনি প্রক্রিয়ার নামে, কখনও আবার অন্য কোনও অজুহাত দেখিয়ে টাকা আদায় করা হতো। ওই ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে ব্ল্যাকমেল করা হতো তাঁদের।
বিহারের নওয়াদা জেলা পুলিশের ডেপুটি সুপার ইমরোজ পারভেজ জানিয়েছেন, এই প্রতারণা চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতরা হলেন, প্রিন্স রাজা, ভোলাকুমার এবং রাহুল কুমার। এদের হেপাজত থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ছ’টি মোবাইল ফোন। হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট, গ্রাহকদের ছবি, অডিও রেকর্ডিং, ব্যাঙ্কের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্যও পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞাপন দেখে আগ্রহীরা ফোন করলে হোটেল বুকিংয়ের নামে তাঁদের প্যানকার্ড, আধার কার্ডের তথ্য, সেলফি চাইত দুষ্কৃতীরা। ফাঁদে পা দিয়ে ফেঁসে যেতেন অনেকে। তাঁদের ব্ল্যাকমেল করে টাকা আদায় করত দুষ্কৃতীরা।