আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার এমন একটি জেলা যেখানে আদিবাসী ভোটকে টার্গেট করে থাকে সব রাজনৈতিক দল। এই সূত্র ধরে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি জেলা সভাপতি পদে আদিবাসী নেতাকে বসিয়ে মুখ করেছে। এতে ভোটের অঙ্কে লাভবান হয়েছে দুই দলই। সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব এনিয়ে কিছু না ভাবলেও দলের অন্দরে আদিবাসী মুখ নিয়ে বেশ ভালোরকম চর্চা চলছে। কয়েকদিন পরেই দলের চতুর্থ জেলা সম্মেলন। তার আগে দলের মধ্যে এমন গুঞ্জন ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও দলের শৃঙ্খলার বিষয়টি মাথায় রেখে এব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ সিপিএম নেতৃত্ব।
জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিদ্যুৎ গুনের কথায়, ‘আমাদের দলে জেলা সম্পাদক কে হবেন সেটা এভাবে আগে থেকে ঠিক হয় না। সম্মেলনে নাম প্রস্তাব করে তারপর তা ঠিক হবে। তবে আমাদের দলেও আদিবাসী সম্প্রদায়ের অনেক নেতা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন।’
এদিকে, জেলা সম্মেলনে আদিবাসী সহ বিভিন্ন জনজাতি নেতা ও মহিলাদের গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে ওপর মহল থেকে। দলীয় সূত্রে খবর, জেলায় বেশ কয়েকজন আদিবাসী মুখ রয়েছে যাঁরা এলাকায় বেশ পরিচিত। এঁদের মধ্যে যদি কাউকে জেলা সম্পাদক পদে বসানো হয় তাহলে চা বাগান এলাকায় তাঁর যে একটা প্রভাব পড়বে সেব্যাপারে দলের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে সেটা আদৌ হবে কি না সেনিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলের অন্দরেই।
২০২১ সাল থেকে জেলা সম্পাদক পদে রয়েছেন কিশোর দাস। কিশোরের আগের সম্পাদক ছিলেন মৃণাল রায়। মৃণাল মারা যাওয়ায় সেই সময় কয়েক মাস দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন কিশোর। মৃণালের আগে সম্পাদক ছিলেন কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা কেউই আদিবাসী ছিলেন না। তবে কিশোরই যে পুনরায় সম্পাদক হতে পারেন সেনিয়েও চর্চাও চলছে দলের অন্দরে।
১১ ও ১২ জানুয়ারি সিপিএমের আলিপুরদুয়ার জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ফালাকাটা জুনিয়ার বেসিক স্কুল মাঠে। সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। বিভিন্ন জায়গায় প্রচার, দেওয়াল লিখন, পোস্টার লাগানো, মিছিল, মিটিং সহ বিভিন্ন কর্মসূচি সারছেন সিপিএম কর্মীরা। জেলা সম্পাদক কিশোর দাস বলেন, ‘দু’দিনের জেলা সম্মেলনে প্রথম দিন রয়েছে প্রকাশ্য সমাবেশ। সেখানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাজ্য নেতা সুজন চক্রবর্তী।’
২০২১ সালে আলিপুরদুয়ার জেলায় সিপিএমের ১৬টি এরিয়া কমিটি ছিল। দলের সদস্য সংখ্যা বাড়ায় এবছর সেটা বাড়িয়ে ২২টি করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ার-২, আলিপুরদুয়ার শহর, কামাখ্যাগুড়ি, দেওগাঁও, কুমারগ্রাম এলাকায় এরিয়া কমিটি বেড়েছে। সদস্য বেড়েছে যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের। গত বছর তাদের প্রায় ৪২ হাজার সদস্য থাকলেও এবছরের শেষপর্যন্ত সদস্য হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার। ডিওয়াইএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রশান্ত ঘোষ জানালেন, সরকারের বিভিন্ন অনৈতিক কাজে যেভাবে ডিওয়াইএফআই আন্দোলন করেছে তা দেখে অনেকেই তাঁদের সদস্যপদ নেওয়ার জন্য আবেদন করছেন।