বিশ্বজিৎ সাহা, মাথাভাঙ্গা: দুর্গাপুজো আসতে এখনও মাস চারেকের বেশি বাকি। তবে মাথাভাঙ্গার (Mathabhanga) কুমোরপাড়ায় এখন থেকেই প্রতিমা তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্য সময় এত আগে থেকে কাজ শুরু না হলেও এবার পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। পাঁজি বলছে, চলতি বছরে বিশ্বকর্মাপুজো ও দুর্গাপুজোর মধ্যে মাত্র নয়দিনের ব্যবধান। তাই মাটির প্রতিমা তৈরি করাই যাঁদের পেশা তাঁদের মাথায় কার্যত হাত পড়েছে। এত কম সময়ে কী করে বিশ্বকর্মা ও দুর্গা প্রতিমা একসঙ্গে তৈরি হবে তা নিয়ে সকলের চিন্তার শেষ নেই। কুমোরপাড়ায় প্রতিমা তৈরির চাহিদার ক্ষেত্রে যদি প্রথম স্থানে দুর্গা প্রতিমা থাকে তবে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে থাকে সরস্বতী এবং বিশ্বকর্মা। গত বেশ কয়েক বছর ধরেই প্রতিমাশিল্পী নির্মল পালের কারখানায় কোচবিহার জেলার সবচেয়ে বেশি দুর্গা প্রতিমা তৈরি হয়। তিনি বলেন, ‘সাধারণত বিশ্বকর্মা ও দুর্গাপুজোর মধ্যে বেশ কয়েকদিনের তফাত থাকে। ফলে বিশ্বকর্মার মূর্তি ডেলিভারি দেওয়ার পরও দুর্গা প্রতিমা তৈরির জন্য বেশ কিছুদিন সময় পাওয়া যায়। তবে এবছর সেই সময় পাওয়া যাবে না।’
নির্মল একা নন, মাথাভাঙ্গা শহরের অন্যান্য প্রতিমাশিল্পী বিশ্বজিৎ পাল, বিজয় পালরাও একই সমস্যার মুখে পড়ছেন। তাই এখন থেকেই মাথাভাঙ্গার কুমোরপাড়ার কারিগররা দিনরাত এক করে কারখানাগুলিতে প্রতিমা তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আরেক শিল্পী জগন্নাথ পাল বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বিশ্বকর্মা প্রতিমা তৈরি শুরুর আগেই দুর্গা প্রতিমা কাজ ৮০ শতাংশ এগিয়ে রাখা। সেই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছি। অন্যান্য বছর এই সময় দুর্গাপুজো কমিটিগুলি প্রতিমার বায়না দেওয়া শুরু করে না। কিন্তু এবছর অনেকেই বেশ কয়েকটি দুর্গা প্রতিমার বায়না দিয়ে দিয়েছেন।’
মাথাভাঙ্গা শহরের অন্যতম দুর্গাপুজো কমিটি সুভাষপল্লি ইউনিটের অন্যতম কর্মকর্তা জয় পাল। এবিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর স্থানীয় প্রতিমাশিল্পীর তৈরি প্রতিমা দিয়েই আমাদের পুজো হত। তবে এবছর প্রতিমায় কিছুটা বৈচিত্র্য আনার জন্য সুদূর মেদিনীপুরের এক প্রতিমাশিল্পীর কাছে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করার বরাত দেওয়া হয়েছে। এবছর সেপ্টেম্বর মাসে দুর্গাপুজো। এছাড়া বিশ্বকর্মাপুজোর মাত্র নয়দিনের মাথায় এবার দুর্গাপুজোর তারিখ। তাই সেই বিষয়টির কথা মাথায় রেখেই আগে আগে প্রতিমার বায়না দেওয়া হয়েছে।’