রায়গঞ্জ: ক্যাগ রিপোর্ট সামনে আসার পর রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে (Raiganj University) ব্যাপক চাপানউতোর শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে। মূলত টেন্ডার ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র কেনা, নির্মাণ কাজ করানো হয়েছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এবার বিস্ফোরক দাবি করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ফিন্যান্স অফিসার (Former finance officer) সত্যেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে জানিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত জিনিসপত্র কেনা হয়েছিল।
প্রাক্তন ফিন্যান্স অফিসার সত্যেন্দ্রনাথ রবিবার বলেন, ‘কিছু জিনিস রয়েছে যেগুলি কিনতে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক টেন্ডারের দরকার হয় না। সেগুলো গভর্নমেন্ট ই-মার্কেটপ্লেস-এর মাধ্যমে কেনা হয়। উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে জানিয়েই ওই সমস্ত জিনিস কেনা হয়েছিল। সরকারই তো জিনিসপত্র কিনতে টাকা দিয়েছিল। কম্পিউটার সামগ্রী এবং আসবাবপত্র সবকিছু সরকারকে জানিয়ে কেনা হয়েছিল।’ যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজের নির্দেশ কীভাবে দেওয়া হয় তা তিনি ভুলে গেছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অনিল ভুঁইমালি ক্যাগ রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রার, ফিন্যান্স অফিসার ও তৎকালীন একটি কমিটির উপর সমস্ত কিছুর দায় চাপিয়েছিলেন। প্রাক্তন রেজিস্ট্রার পঙ্কজ কুণ্ডু আবার তৎকালীন ফিন্যান্স অফিসার ও তৎকালীন উপাচার্যের উপর সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, তিনি রেজিস্ট্রার হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ে টেন্ডার কমিটি গঠিত ছিল। অথচ প্রাক্তন ফিন্যান্স অফিসার সত্যেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য অন্য কথা বলছেন। সত্যেন্দ্রনাথ জানান, ‘সেই সময় কোনও টেন্ডার কমিটি ছিল না। টেন্ডার কমিটি তৈরি হয়েছে অনেক পরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্যাটুট তৈরি হওয়ার পরে টেন্ডার কমিটি গঠন হয়েছিল। তৎকালীন উপাচার্যের নির্দেশে কিছু কিছু টেন্ডার কমিটি তৈরি হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সেইসব টেন্ডার কমিটির কোনও গুরুত্ব নেই।’
প্রাক্তন ফিন্যান্স অফিসারকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাহলে কি ক্যাগের সম্পূর্ণ রিপোর্ট ভিত্তিহীন? সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ক্যাগের রিপোর্টকে ভিত্তিহীন বলছি না। কিন্তু সরকারি নির্দেশ মেনে সেই সময় যে পদ্ধতিতে কেনা হয়েছিল এখন তার থেকে পুরোপুরি অন্য পদ্ধতিতে কেনা হয়। হতে পারে ক্যাগের হাতে সমস্ত অফিশিয়াল কাগজপত্র যায়নি। সম্পূর্ণ কাগজপত্র ক্যাগের হাতে গেলে এই ধরনের বিষয়গুলি সামনে আসত না। আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে পদত্যাগ করি। সেই সময়কালের মধ্যে দুইবার ক্যাগকে অডিট করার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ক্যাগ কোনও উত্তর দেয়নি।’