রায়গঞ্জ: ‘জনতার দরবারে রায়গঞ্জের বিধায়ক।’ সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে কৃষ্ণ কল্যাণীর (Krishna Kalyani) এমন পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে তর্জা। ওই পোস্টে বিধায়ক জানিয়েছেন, প্রতি রবিবার মানুষ তাঁদের সমস্যা নিয়ে বিধায়কের কার্যালয়ে দেখা করতে পারবেন। সকাল ১১টা থেকে ২টো ও বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কার্যালয়ে থাকবেন। বিধায়কের এমন পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
গেরুয়া শিবিরের সাফ কথা, লোকসভা ভোটে বিপুল ভোটে হারার পর উপনির্বাচনে ছাপ্পাবাজদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভোট লুঠ করে বিধায়ক হন। এরপর থেকেই রায়গঞ্জের মানুষ তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়েছেন। জনসংযোগ হারিয়ে যাচ্ছে বলেই তাঁর এই কৌশল।
অন্যদিকে বাম ও কংগ্রেসের দাবি, রায়গঞ্জের মানুষের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য, বাহিন সেতু সহ প্রধান সমস্যাগুলির সমাধান না করে নাটক করছেন বিধায়ক। মানুষের ভোটে জয়ী হলে দায়বদ্ধতা থাকত। মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবে।
যদিও বিরোধীদের অভিযোগ একযোগে উড়িয়ে দিয়েছেন বিধায়ক। তাঁর দাবি, ‘মুখ্যমন্ত্রীর জনমুখী প্রকল্পগুলি মানুষের কাছে আরও সহজে পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ। তাছাড়া মানুষ আমার কাছে আসেন। বিজেপি সহ বিরোধীরা কোনও ইশ্যু না পেয়ে সাধারণ বিষয়কে ইশ্যু করতে চাইছেন।’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘আমি মানুষের সঙ্গে সাতদিন দেখা করি। শিলিগুড়ি মোড়ে নিজস্ব কার্যালয়ে প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সাধারণ মানুষকে সময় দিই। গ্রামের ও শহরের মানুষ দেখা করেন। তাঁদের সমস্যার কথা জানান। আমি সমাধানের চেষ্টা করি। সমস্যা না থাকলেও অনেকে আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। তাই প্রতি রবিবার সমাধান অফিসে বসছি। বিরোধীদের পায়ের তলায় মাটি নেই বলেই সমালোচনা করছেন।’
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী চক্রবর্তী বলেন, ‘বিজেপি থেকে জেতার পর রায়গঞ্জের বহু মানুষ বিধায়কের কাছে যেতেন। কিন্তু তিনি রায়গঞ্জবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে দলবদল করেছেন। সেই জবাব তিনি লোকসভা নির্বাচনে পেয়েছেন। কিন্তু উপনির্বাচনে দেখা গেল, ২০১৭ সালে যাঁরা ছাপ্পা করে পুরসভা দখল করেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে মিশে তিনি জয়ী হলেন। এখন তিনি উপলব্ধি করছেন তাঁর সঙ্গে মানুষ নেই। কেউ যাচ্ছেন না। সেই কারণে এই দরবার।’
এদিকে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য উত্তম পালের কটাক্ষ, ‘যাহাই বিজেপি, তাহাই তৃণমূল। আজ রায়গঞ্জের বিধায়ককে দেখে মানুষের কাছে সত্যিটা প্রকাশ্যে এসেছে। তাই ওঁরা নাটক করছে। সাধারণ মানুষের প্রকৃত সমস্যার সমাধান এঁরা কোনওদিন করবেন না। তাই বিধায়কের জনতার দরবার নিয়ে আমাদের কোনও উৎসাহ নেই।’