দিনহাটা: গত ২৬ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর হাত ধরে সূচনা হয়েছিল দিনহাটা মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের। উদ্বোধনের পর থেকেই সেটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পাইওনিয়ার ক্লাবের হাতে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম খেলোয়াড়দের জন্য উন্মুক্ত করে দেয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপর মাত্র তিনদিন কাটতে না কাটতেই সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় ওই ইন্ডোর স্টেডিয়ামের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে খেলোয়াড়দের একাংশ। আর সেখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। যেমন- কোথাও ইন্ডোর স্টেডিয়ামের ভিতরে থাকা সাদা রং নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তো কোথাও আবার স্টেডিয়ামের ফ্লোর নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এর পাশাপাশি ওই ইন্ডোর স্টেডিয়াম ব্যবহারের জন্য কর্তৃপক্ষের তরফে মাসিক যে এন্ট্রি ফি ধার্য করা হয়েছে সেটাও অত্যধিক বলে মনে করছেন খেলোয়াড়দের একাংশ। এর সঙ্গে দিনহাটার অনেক পরিচিত খেলোয়াড়দের সেখানে স্লট না পাওয়ার অভিযোগও সামনে এসেছে।
এবিষয়ে পাইওনিয়ার ক্লাবের সম্পাদক দীপঙ্কর দত্তকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর বক্তব্য, ‘সবে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হয়েছে। খেলোয়াড়দের আগেই বলেছি ১৫ দিন এখানে খেলার পর কোথায় কোথায় সমস্যা হচ্ছে সেগুলো বিস্তারিতভাবে আমাদের জানাতে।’ যদিও যাঁরা খেলছে তাঁদের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাননি বলেই তিনি জানান। তবে স্লট পাওয়া নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে সেটা ঠিক নয়, তাঁদের তরফে সকলকেই সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
অন্যদিকে, বিষয়টিতে ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় কৃষ্ণ বসু জানান, ইন্ডোর স্টেডিয়ামে একদিন খেলার পর তাঁর মনে হয়েছে সেখানকার ফ্লোর খেলার জন্য উপযুক্ত নয়। ওই ফ্লোরের ওপর ম্যাট বা বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না নিলে খেলা চলাকালীন খেলোয়াড়রা স্লিপ করে বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে পারে। তাঁর কথায়, ‘আমি একাধিক বড় বড় ইন্ডোর স্টেডিয়ামে খেলেছি, সেখানের ফ্লোরটা অন্যরকম হয়ে থাকে। এবিষয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে ভাবতে হবে।’ অপর খেলোয়াড় রূপায়ণ চক্রবর্তীর কথায় আবার উঠে এসেছে ওই ইন্ডোর স্টেডিয়ামের রং নিয়ে সমস্যার প্রসঙ্গ। তিনি জানান, ইন্ডোর স্টেডিয়ামের ভেতরের দেওয়ালে সাদা রং থাকায় ব্যাডমিন্টনের ফেদার খেলোয়াড়দের নজরে কম পড়বে, যার ফলে অনুশীলনে সমস্যা হবে।
এদিকে, ক্রীড়াবিদ কল্লোল রায় সিংহ আবার প্রশ্ন তুলেছেন প্রতি মাসে খেলোয়াড়দের জন্য ৫০০ টাকা এন্ট্রি ফি ধার্য করা নিয়ে। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে এই এন্ট্রি ফি অনেকটাই বেশি বলে মনে হয়েছে। এবিষয়ে ক্লাব কর্তৃপক্ষের ভাবা উচিত।’ পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন, দিনহাটার বহু পরিচিত খেলোয়াড় এই ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অনুশীলনের জন্য স্লট পাননি, এই বিষয়টিও কর্তৃপক্ষের উচিত গুরুত্ব দিয়ে দেখা। দিনহাটা মহকুমায় অনেক দিনের দাবি ছিল একটি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের। বছর দুয়েক আগে পাইওনিয়ার ক্লাবের সদস্যরা মন্ত্রীর কাছে এবিষয়ে দাবি জানান। এরপর বছরখানেকের মধ্যেই উওরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের অর্থানুকূল্যে পাইওনিয়ার ক্লাব গ্রাউন্ডেই তৈরি করা হয় মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম।