বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক মাদ্রাসা পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানতে পারার পরেই সালিশি সভা বসে গ্রামে। সেই সালিশিতে দু’জনের বিয়ের নিদান দেওয়া হয়। কিন্তু ছেলেটির বাবা রাজি না হওয়ায় মেয়ের মা মাতব্বরদের পরামর্শে থানায় অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ পরীক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে। ফলে সোমবার ওই পরীক্ষার্থীর অঙ্ক পরীক্ষা দেওয়া হয়নি।
ধৃত পরীক্ষার্থীর বয়স ১৮ বছর। রায়গঞ্জ থানার একটি গ্রামে তার বাড়ি। মাস চারেক আগে মাসির মাধ্যমে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে ওই তরুণের সাক্ষাৎ হয়। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জনের মধ্যে ফোনে কথাবার্তাও হত। সম্প্রতি মাসির বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগ নিয়ে ছাত্রীটিকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ওই পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় গ্রামে সালিশি সভা বসে। সেখানে নবম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে ওই পরীক্ষার্থীর বিয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নির্দেশ না মানায় নাবালিকার মা ভাটোল ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
সোমবার ছিল মাদ্রাসা বোর্ডের অঙ্ক পরীক্ষা। সেইমতো ছাত্রটি বাড়িতে প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। কিন্তু আচমকাই বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের পকসো ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ধৃতের বাবার বক্তব্য, ‘আমার ছেলে মাদ্রাসা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তিনটে পরীক্ষা দিয়েছে। আজ তার অঙ্ক পরীক্ষা ছিল। কিন্তু গ্রেপ্তারের জন্য পরীক্ষা দিতে পারল না।’
তাঁর আরও অভিযোগ,‘ওই নাবালিকার সঙ্গে আমার ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি সালিশি সভা হয়েছে। সেখানে আমার ছেলেকে ওই নাবালিকাকে বিয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু নাবালিকা হওয়ার কারণে আমরা সময় চেয়েছিলাম। তার আগেই আমাদেরকে না জানিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়। মাতব্বরদের ফতোয়া জারি করায় এই মামলা রুজু করেছে পরিবারের সদস্যরা।’ রায়গঞ্জ থানার আইসি বিশ্বেশ্বর রায় সরকার বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’ রায়গঞ্জ জেলা আদালতের পকসো কোর্টের সরকারি আইনজীবী সুজিত সরকার বলেন,‘এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্রটিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’