বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: শুধুমাত্র একটা নৌকার ভরসায় ৭৫ বছর ধরে মুখ বুজে অসহায়ের মতো টিকে রয়েছে আস্ত একটা গ্রাম। রোজকার বাজার হাট থেকে মুমূর্ষু রোগীর চিকিৎসার জন্যও ছুটতে হয় নদীর বুকের ওপর দিয়ে। বাহন সেই নৌকা। সেটাও আবার নিজেদের চালিয়ে নদী পারাপার করতে হয়। মাঝির দেখা মেলে না। হাতেগোনা কয়েকটি ছেলেমেয়ে স্কুলে পড়াশোনা করে। নেই কোনও হাইস্কুল। ভিনগাঁয়ের হাইস্কুলে পড়তে যেতে সেই নৌকাই ভরসা।
পূর্বদিক দিয়ে বয়ে যাওয়া নাগর ও কুলিক নদী। পশ্চিমে মহানন্দা। মাঝখানে বাংলা বিহার সীমান্ত দিয়ে ঘেরা একখণ্ড জমি। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের রহমতপুর গ্রামের মানুষের দিন কাটে এভাবেই। বর্ষার সময় নৌকায় ভরসা। কিন্তু গ্রীষ্মকালে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার করে গ্রামের বাসিন্দারা।
এদিন সাঁকো ছাড়িয়ে গ্রামে পা ফেলতেই অসহায়তার ছবিটা আরও স্পষ্ট হল। অন্তত ৬০০ পরিবারের বাসভূমি। ঢিল ছোড়া দূরত্বে বিহারের আবাতপুর। মাঝে ব-দ্বীপের মতো উত্তর দিনাজপুরের রহমতপুর জেগে আছে। নদী পারাপারের পাকা সেতু দূরের কথা, বাঁশের সাঁকোটুকুও নড়বড়ে। বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে যাওয়ার মুখে বালিজোল হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণির সেলেকা খাতুনের কথায়, ‘বর্ষার সময় নৌকা চালানোর কেউ না থাকলে সেদিন স্কুলে যাওয়া হয় না।’
বাজার করে গ্রামের মেঠো পথে ফিরছিলেন মধ্য ত্রিশের আমজাদ আলি। সমস্যার কথা জিজ্ঞাসা করতেই রীতিমতো বিরক্ত গলায় বললেন, ‘ভোটের সময় সবাই আসেন। তারপর কেউ কথা রাখেন না।’ অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা ৬০ বছরের রোশেনারা বিবি আক্ষেপের সুরে জানান, ‘কতবার সেতু গড়ার কথা বলেছিল ওরা। কিন্তু সেসব আর হল কোথায়। উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লক অফিস থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরত্বে গোরাহার, বিষাহার ঘাট, রায়গঞ্জ থেকে ১২ কিমি দূরত্বে গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়।
২৫ কিলোমিটার ফাঁকে গোয়ালদহ গ্রাম। এরপর ধানখেতের মধ্যে দিয়ে আলপথ ধরে কয়েক কিলোমিটার সন্তর্পণে হাঁটলে কুলিক ও নাগর নদীর পাড়। সেখান থেকে নৌকায় চেপে রহমতপুর গ্রাম। বাম আমল থেকে তৃণমূল আমল। দীর্ঘ সময় কেটে গিয়েছে। একটিমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা খাতায়-কলমে ৯৯। রোজ গড়ে হাজিরা দেয় টেনেটুনে ৩৩ জন। স্কুলে পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। পাশের একমাত্র গভীর নলকূপ থেকে জল আনতে হয়। বর্ষার সময় নৌকোতে নদী পার করে জল নিয়ে আসতে হয়।
রহমতপুর ও দ্বীপনগর গ্রামে নেতা-মন্ত্রীরা আসেন না বলে অভিযোগ করলেন সাবিনা সুলতানা। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ৭২ বছরের কুদ্দুস আলি বলেন, ‘প্রতিবার ভোট এলেই সব পার্টির দরদ উথলে পড়ে। ভোট শেষ হয়ে গেলেই সেতু নিয়ে কোনও নেতাই ভাবেন না।
পাড়ে এসে বাঁশের মাচায় উঠতে স্নান সারতে সারতে এক যুবক আখতার আলি মুখ বাড়িয়ে বললেন, ‘আর কিছুই চাই না। সেতুটা করে দিলেই হবে।’
হবে কি? প্রশ্নটা তোলা রইল আপাতত আগামীর জন্য।
হিলি: যৌনাঙ্গে লুকিয়ে শোনা পাচারের ছক ভেস্তে দিল সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। সোমবার বিকেলে হিলি সীমান্ত…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বলিউডের অভিনেত্রীকে সামনে দেখেও নিষ্পৃহ একটি ফুড ডেলিভারি অ্যাপের ডেলিভারি বয়।…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বিক্ষিপ্ত কিছু উত্তেজনার ঘটনা ছাড়া মোটের উপর শান্তিতেই মিটল পঞ্চম দফার…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের (Lok Sabha Election 2024) আবহে রাজ্য পুলিশে (Bengal Police) রদবদল…
শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতে এসে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় তরুণী ছাত্রী ববিতা দত্তের। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই…
আসানসোল: বন্ধুদের সঙ্গে দামোদর নদীতে স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হলো এক স্কুল পড়ুয়ার।…
This website uses cookies.