দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: শহরে একের পর এক পুকুর এবং জলাশয় ভরাট হয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় দমকলের গাড়িতে জল তোলার জন্য নির্দিষ্ট কোনও ব্যবস্থা নেই। যার ফলে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিপদে পড়েন দমকলের কর্মীরা। যার সর্বশেষ উদাহরণ, রায়গঞ্জের সোহারইয়ে বিশালাকার বিস্কুট কারখানায় বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড।
মঙ্গলবার রাতে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দমকল কর্মীদের অভিযোগ, কারখানায় অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। গাড়িতে জল ভরতে আসতে হয়েছে ৬ কিমি দূরে রায়গঞ্জ দমকল কেন্দ্রে। তাঁদের গাড়িতে জল তুলতে নিজেদের দপ্তরে ছুটে আসতে হয়। ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় কর্মীদের। এর মূল কারণ, কাছাকাছি কোনও জলাশয় না থাকা।
রায়গঞ্জ পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন অরিন্দম সরকার বলেন, ‘পুকুর ও জলাশয় যাতে কেউ ভরাট না করে সেদিকে আমাদের নজর রাখতে হবে সকলকে।’ রায়গঞ্জ দমকল কেন্দ্রে আছে ৪ টি ইঞ্জিন। ২টি তে ১৮ থেকে ২০ হাজার লিটার, ১টিতে ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার লিটার এবং আরেকটিতে ২ থেকে আড়াই হাজার লিটার জল ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ৪ টি ইঞ্জিন দিয়েও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায় না। সেসময় ভরসা করতে হয় আশেপাশের দমকল কেন্দ্রের উপর।
দপ্তরের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, রায়গঞ্জে পুকুর ও জলাশয়গুলি ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমরা বিপদে পড়ছি। মানুষ আমাদের দোষারোপ করেন। গত মঙ্গলবার একই ঘটনা দেখলাম। জলের ব্যবস্থা না থাকলে আমরা কি করব? ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার শিবানন্দ বর্মন বলেন, ‘আমাদের এখানে ৪ টি গাড়ি থাকলেই তো একসঙ্গে বেরোবে না। রায়গঞ্জ ফায়ার স্টেশনে ২ জন ড্রাইভার আছেন। ওইদিন গোয়ালপোখরের ড্রাইভার অসুস্থ থাকায় রায়গঞ্জ থেকে একজনকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বাইরে থেকে ইঞ্জিন এসেছিল। বিস্কুটের ফ্যাক্টরিতে ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম ছিল না।’ তিনি আরও জানান, এই ধরনের কারখানায় জলের রিজার্ভার, হাই ড্রেন এবং হোর্স পাইপ থাকার কথা। প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণ তাঁদেরই নিয়ে আসার কথা। কিন্তু সে ব্যবস্থা ছিল না।
অথচ ক্ষতিগ্রস্ত বিস্কুট কারখানার মালিক দীনেশ মুন্দ্রা সম্পূর্ণ উলটো মন্তব্য করেন। জানান, রায়গঞ্জ দমকলের কোনও পরিকাঠামো নেই। আমাদের কারখানায় জল তোলার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু রায়গঞ্জ দমকল কেন্দ্রের জল তোলার মেশিন ছিল না।