দীপঙ্কর মিত্র, রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ (Raiganj Government Medical College And Hospital) চত্বরে এবং সিঁড়িজুড়ে থাকছে অবাঞ্ছিত লোকজনের আনাগোনা। ফলে মাঝেমধ্যে ঘটছে চুরির ঘটনা। সিঁড়িগুলিতে নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় এই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে অসামাজিক লোকজন।
হাসপাতালের একতলা থেকে দশতলায় যাওয়ার সিঁড়ি জুড়ে অবাঞ্ছিত অচেনা লোকজনদের ভিড়ে সরগরম। এক তলা থেকে অন্য তলায় যাওয়ার মুখে একজন নিরাপত্তারক্ষী নেই। এমনকি বিভিন্ন ফ্লোরের ওয়ার্ডগুলোতে ভর্তি থাকা রোগীদের কাছে অবাধে রোগীর (Patients) স্বজন ছাড়াও অপরিচিত লোকজন ভিড়ে মিশে থাকছেন। সকাল এবং বিকেলে ভিজিটিং আওয়ারে মেডিকেল কলেজে গেলে দেখা যায় অন্তর্বিভাগগুলিতে রোগী দেখার নাম করে একাধিক ব্যক্তি ঢুকে পড়ছে। আবার কিছু জায়গায় নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও তাদের কথায় কর্ণপাত করে না কেউ।
নেতার পরিচয় দিয়ে অথবা কোনও নেতার অনুগামী বলে যখন তখন নানা লোকজন যে কোনও ওয়ার্ডে নিশ্চিন্তে ঢুকে পড়ছে। বিভিন্ন ফ্লোরে ওঠানামায় রোগী ও চিকিৎসকদের আলাদা চারটি লিফট রয়েছে। কিন্তু তারপরও একতলা থেকে দশতলার কংক্রিটে বাঁধানো অপরিসর সিঁড়ি জুড়ে সন্দেহজনক আগন্তুকদের আনাগোনা। প্রায়ই সিঁড়ি দখল করে চলে খাওয়া-দাওয়ার পালা। ওয়ার্ডের রোগীদের শৌচাগারগুলিও বহিরাগতদের ব্যবহার করতে দেখা যায়। কোনও নেতা রোগী দেখতে আসলেই তার সঙ্গে ২০-২৫ জন কর্মী ঢুকে পড়ে। কারও কথাই তারা শোনেন না। সন্ধ্যার পর ভিড়ের বহর অপেক্ষাকৃত বেশি। আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক চিকিৎসক পড়ুয়া তরুণীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় আলোড়ন আছড়ে পড়তেই নিরাপত্তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষগুলোর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী, চিকিৎসক ও রোগীর পরিবারের সদস্যরা। তৃণমূল রোগী পরিষেবা কেন্দ্রের আহ্বায়ক তপন নাগ বলেন, ‘বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী দায়িত্ব নেওয়ার পর মেডিকেল কলেজের সামগ্রিক পরিবর্তন হয়েছিল। আশা করি উনি আবার দায়িত্ব নেবেন এবং বহিরাগতদের বিষয়টি তাঁর নজরে আনব। বহিরাগতরা মেডিকেল কলেজের ওয়ার্ডগুলিতে ঢুকে যাওয়ায় প্রায়ই চুরির ঘটনা ঘটছে। আমাদের কাছে আজও একজন অভিযোগ জানিয়েছেন।’
বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী জানিয়েছেন, ‘মেডিকেল কলেজের যাবতীয় দেখভালের জন্য শীঘ্রই স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করা হবে। তারা মেডিকেল কলেজের ভেতরে ও বাইরে লোকজন যাতে না ঢোকে সেজন্য কর্তৃপক্ষকে বলা হবে।’ তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে মেডিকেল কলেজের কর্তৃপক্ষের দাবি, মেডিকেল ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার পরিকাঠামো আরও বাড়ানো হবে। তবে ক্যাম্পাসে পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। ফলে অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।