রায়গঞ্জ: কথায় আছে ‘রতনে রতন চেনে’। তা চিনে থাকতে পারে। তবে এই রতন আবহাওয়ার চরিত্র চেনেন। ইনি হলেন রায়গঞ্জের(Raiganj) দুর্গাপুর হাটখোলার রতন সরকার।
নতুন দোকানের জন্য ছাদ ঢালাই হবে। সকালে উঠেই বেকারির মালিক ফোন করলেন রতনবাবুকে। জানতে চাইলেন, আজ কী বৃষ্টি হবে? ঘুমচোখেই উত্তর এল, ‘না আজ আর বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।’ খুশি মনে ছাদ ঢালাই করলেন বেকারির মালিক গণেশ দাস।
বামনগ্রামের সুখেন হালদার, শ্রাবণের মাঝামাঝি সময়ে তাঁর জমিতে রাসায়নিক সার দেবেন কি না? ভাবছিলেন। ফোন গেল এলাকার মসিহা রতনবাবুকে। তাঁর পরামর্শ মেনে ১ দিন পর জমিতে সার মেশানোর কাজ করলেন সুখেনবাবু। এভাবে আবহাওয়ার তথ্য পৌঁছে দিয়ে রতন সরকার এখন এক চলমান আবহাওয়া অফিসের নাম।
স্মার্টফোনে আবহাওয়ার(Weather) তথ্য পৌঁছে দেন। আগামীতে বাড়ির সামনে বসাতে চলেছেন ডিসপ্লে বোর্ড। যেখানে সাধারণ মানুষ এসে দেখে নিতে পারবেন আবহাওয়ার পূর্বাভাস। কীভাবে এই নিখুঁত কাজ করেন তিনি? উত্তরে জানালেন, ‘ভূগোল নিয়ে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রির পড়া শুরু করলেও শেষ করতে পারিনি। কিন্তু মনের মধ্যে ভূগোলের ছাত্র হিসেবে কিছু করার ইচ্ছে ছিল। সেই থেকে বাতাসের তাপমাত্রা, চাপ আর বায়ুর চলাচলের দিক নিয়ে প্রতিদিন তথ্য সংগ্রহ করি। অনলাইনে নানা অ্যাপে এই তথ্য পাওয়া যায়। সেগুলোকে একসঙ্গে করে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পূর্বাভাস দিই। সেটাই সঠিক হয়।’
তিনি আরও জানান, ‘আলিপুর বা মাঝিয়ানের পূর্বাভাস বিস্তৃত এলাকার জন্য। আমাদের মধ্যবঙ্গের স্বল্প জায়গার জন্য কেউ কোনও সঠিক পূর্বাভাস দিত না। তাই আমাদের এলাকার চাষিভাইদের জন্য এই কাজ শুরু করি। এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত আমার ফলোয়ার বাড়ছে। আপডেটগুলো বহু মানুষ শেয়ার করছে। এতে কৃষকরা যদি লাভবান হন। সেটাতেই আমার স্বপ্ন সফল হবে।’
পেশায় গৃহশিক্ষক। ৩৯ বছরের রতনবাবুর এই কাজে খুশি বাবা রমেশ সরকার, মা খুকি রানি সরকার, স্ত্রী সীমা সরকার। আবহাওয়ার সঠিক তথ্য সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে সাধারণ মানুষের মন জয় করেছেন রতন।