নিজস্ব সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: করোনা পরিস্থিতিতে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ট্রেনের টিকিটে ছাড় তুলে দিয়ে ছিল ভারতীয় রেল। সেই ‘অস্থায়ী’ সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত রয়ে গিয়েছে। প্রবীণদের জন্য টিকিটে ছাড় আর চালু হয়নি। তার ফলে গত পাঁচ বছরে রেলের ঘরে ঢুকেছে অতিরিক্ত ৮,৯১৩ কোটি টাকা। এমনটাই জানাচ্ছে সরকারি তথ্য।
সেন্টার ফর রেলওয়ে ইনফরমেশন সিস্টেম জানিয়েছে, ২০২০-র ২০ মার্চ থেকে ২০২৫-এর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩১.৩৫ কোটি প্রবীণ নাগরিক বিনা ছাড়ে টিকিট কেটে ট্রেনে যাতায়াত করেছেন। এর ফলে রেল অতিরিক্ত আয় করেছে প্রায় ৯,০০০ কোটি টাকা। ২০২০-র আগে ৬০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষ, ৫৮ বছরের বেশি বয়সি মহিলা ও তৃতীয় লিঙ্গের যাত্রীদের জন্য টিকিটে যথাক্রমে ৪০ শতাংশ ও ৫০ শতাংশ ছাড় ছিল। সব শ্রেণির দুরপাল্লার ট্রেনেই মিলত এই সুবিধা। কিন্তু কোভিড অতিমারীর সময় রেলমন্ত্রক তা স্থগিত করে দেয়। তারপর কেটে গিয়েছে পাঁচ বছর, কিন্তু ছাড় ফিরে আসেনি।
মধ্যপ্রদেশের আরটিআই কর্মী চন্দ্রশেখর গৌর জানিয়েছেন, ২০২০ সালের মার্চ থেকে একাধিকবার রেলমন্ত্রকের কাছে তথ্য জানতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন তিনি। তাঁর শেষ আবেদনটি জমা পড়ে ২০২৫ সালের মার্চে। তার ভিত্তিতে উঠে এসেছে এই বিপুল আয়ের তথ্য। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো আগেই জানিয়েছেন, প্রবীণদের জন্য আলাদা করে ছাড় চালু করার পরিকল্পনা আপাতত রেলের নেই। তাঁর যুক্তি, রেলযাত্রীদের জন্য ইতিমধ্যে গড়ে ৪৬ শতাংশ ভরতুকি দেওয়া হচ্ছে। ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে রেল যাত্রী পরিবহণে ভরতুকি দিয়েছে ৫৬,৯৯৩ কোটি টাকা। প্রশ্ন উঠছে, অসুস্থ, অক্ষম ও বয়সজনিত সমস্যায় জর্জরিত প্রবীণদের জন্য ছাড় তুলে নেওয়া কি ন্যায্য সিদ্ধান্ত? সংসদে বিরোধীরা বারবার এই ছাড় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠলেও এখনও পর্যন্ত রেল কোনও ইতিবাচক বার্তা দেয়নি।