উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ সিমেন্টের বিজ্ঞাপনে বেলুর মঠের নাম। এমনই বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গিয়েছে কলকাতা। হোর্ডিংয়ে ব্যবহার করা হয়েছে মঠের নাম। তাতে লেখা রয়েছে, ‘হাওড়ার বেলুড় মঠ আর সিমেন্টে কনক্রিটো নামটাই যথেষ্ট’। বিজ্ঞাপনী ভাষায় এটা স্পষ্ট যে, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রধান দপ্তর সম্পর্কে ভক্তদের যে ভরসা ও বিশ্বাস, তাকেই সিমেন্ট প্রস্তুতকারী সংস্থার ‘ইউএসপি’ (ইউনিক সেলিং পয়েন্ট) হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও মিশনের দাবি, বিজ্ঞাপনে বেলুর মঠের নাম ব্যবহার করার জন্য অনুমতি নেয়নি সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সংস্থা।
হাওড়া ব্রিজ থেকে ব্রেবোর্ন রোড ফ্লাইওভারে ওঠার পরেই বাঁ’হাতে চোখে পড়ে মস্ত এক বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং। সংস্থার দু’টি হোর্ডিংয়ের নীচেরটিতে ব্যবহার করা হয়েছে বেলুড় মঠের নাম। রামকৃষ্ণ মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজ মঙ্গলবার বললেন, ‘‘আমরা কোনও রকম বিজ্ঞাপন করি না। অথচ আমাদের নাম ব্যবহার করেই বিজ্ঞাপন করা হয়েছে শুনে অবাক লাগছে! কাউকে কখনওই এই ধরনের অনুমতি দেওয়া হয় না। এ ক্ষেত্রেও অনুমতি দেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। এটা ভক্তদের বিশ্বাসকে আঘাত করতেই পারে। আমরা ওই ছবি পেলেই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাব।’’
বিজ্ঞাপনে বেলুরমঠের নাম ব্যবহার প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সিমেন্ট প্রস্তুতকারী সংস্থা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। তাঁদের বক্তব্য, অভিযোগ উঠলে হোর্ডিংটি তাঁরা সরিয়ে নেবেন। সিমেন্ট কোম্পানির তরফে নবীন খান বলেন, ‘‘বিষয়টা আমার জানা নেই। তবে বিজ্ঞাপনের জন্য কেউ যদি পুলিশের কাছে যেতে চাইলে যাক! আমাদের কোনও সমস্যা নেই।’’ সংস্থার ব্র্যান্ড ম্যানেজার অয়ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যদি এটা নিয়ে কারও কোনও অভিযোগ থাকে বা বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষের কোনও আপত্তি থাকে, তবে ওই হোর্ডিং আমরা সরিয়ে নেব।’’
প্রসঙ্গত, বহু বছর আগে বিজ্ঞাপনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ব্যবহার করেছিল একটি চপ্পল প্রস্তুতকারী সংস্থা। কারণ, মমতা তখন নীল-সাদা হাওয়াই চপ্পল পরতেন। সে ক্ষেত্রেও মমতার অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে পুলিশেও বিষয়টি জানানো হয়েছিল। তার পরে বিজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কিন্তু এ ভাবে কোনও বেলুরমঠকে ‘ব্যবহার’ করে ভরসা এবং বিশ্বাসের বিপণন করার ঘটনা সাম্প্রতিক কালে বিরল। তা-ও আবার বেলুড় মঠের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে।