আলিপুরদুয়ার: শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের এক নেতার বিরুদ্ধে প্রতিবেশী গৃহবধূকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠল শনিবার। ঘটনায় আলিপুরদুয়ার শহরে শোরগোল তৈরি হয়েছে। আলিপুরদুয়ার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই নির্যাতিতা। তারপর ওই মহিলার সঙ্গে কথাও বলেন তদন্তকারী পুলিশ অফিসার। যদিও ওই শ্রমিক নেতাকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি।
নির্যাতিতার অভিযোগ, বিভিন্ন সময় ছলেবলে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। মানা করলে প্রাণনাশের হুমকি দিত। শুক্রবার স্বামী সহ পরিবারের সদস্যদের মারধর করা হয়। তারপর থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। অপরাধীর যা শাস্তি হওয়া উচিত, তেমনই শাস্তি দেওয়া হোক এই নেতার, বক্তব্য নির্যাতিতার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শ্রমিক নেতা ওই গৃহবধূর পূর্বপরিচিত। একই এলাকার বাসিন্দা। এমনকি তাঁর স্বামীরও চেনা পরিচিত। ওই নেতার নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে সম্প্রতি স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে অন্য জায়গায় থাকতে শুরু করেন ওই গৃহবধূ। কিন্তু তাতেও রেহাই মেলেনি। কথামতো না চলায় শুক্রবার ওই গৃহবধূর বাড়িতে ওই নেতা চড়াও হয় বলে অভিযোগ। দুপুরে দলবল নিয়ে চড়াও হওয়ায় দুই পক্ষের বচসা বাধে। পরে পাঁচ-ছয়জনের একটি দল ওই গৃহবধূর স্বামী সহ পরিবারের সদস্যদের মারধর করে বলে অভিযোগ। তারপরেই আলিপুরদুয়ার থানার দ্বারস্থ হন ওই নির্যাতিতা।
এই বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলার শান্তনু দেবনাথ বলেন, ‘প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত করুক এটাই চাই।’ এলাকায় ওই নেতার বিশেষ পরিচয় এই ‘মার, দাঙ্গা’ করাই। নিউ আলিপুরদুয়ার স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় কয়েক বছর আগে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল ওই নেতার বিরুদ্ধে। একজন গুরুতর আহতও হয়েছিলেন। সেই ঘটনার পর চর্চায় না থাকলেও ফের ধর্ষণের অভিযোগে চাপে পড়ে ওই নেতা। কিন্তু এতদিন পর কেন অভিযোগ দায়ের করলেন? এই বিষয়ে নির্যাতিতা বলেন, ওই শ্রমিক নেতার দাপটে ভয়ে ভয়ে ছিলেন। এলাকা ছাড়ার পর সাহস করে অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে, আইএনটিটিইউসি’র টাউন ব্লক সভাপতি মনোজ নন্দী এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে বলেন, ‘এমন কোনও অভিযোগ আমরা পাইনি। তবে এটা দলের কোনও বিষয় নয়। ব্যক্তিগত বিষয়ে দলের কোনও মতামত নেই। তবে অভিযুক্ত শ্রমিক নেতা পিঠ বাঁচাতে ওই নির্যাতিতা গৃহবধূর বিরুদ্ধে পালটা মামলা করেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এই বিষয়ে আলিপুরদুয়ার থানার আইসি অনির্বাণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’