মহম্মদ হাসিম, নকশালবাড়ি: সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে র্যাশন দোকানের একজনের ডিলারশিপ অন্যজনকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নকশালবাড়িতে। র্যাশন দোকানের ডিলারশিপ ফিরে পেতে লক্ষাধিক টাকা দিয়েও ডিলারশিপ ফিরে পাননি নকশালবাড়ি ব্লকের মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের অলডাঙ্গি এলাকার বাসিন্দা গৌরী মায়া শর্মা ও তাঁর গোষ্ঠী।
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৬ সালে। অভিযোগ, মাটিগাড়া ব্লকের পাথরঘাটার বাসিন্দা বিমল রায়ের নামে। এই বিমল রায়কে র্যাশনের ডিলারশিপের জন্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা দিতে হয়েছে গৌরীদেবী ও তাঁর সংঘকে। এর জন্য গৌরীদেবীর নিজের বাড়ির ছয় কাঠা ভিটে পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছিল বলে দাবি। র্যাশন ডিলারশিপের জন্য শিলিগুড়ির সেবক মোড়ের এক হোটেলে খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর একটি মিটিং করিয়েছিলেন বিমল রায় বলেও দাবি গৌরী মায়া শর্মার। সেই মিটিংয়ে বিমল রায় এবং তৎকালীন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গৌরীকে র্যাশন ডিলারশিপ ফিরে পেতে আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু গত আট বছর ধরে গৌরী ও তাঁদের দলের সদস্যদের ডিলারশিপের আশ্বাস দিয়ে ঘুরিয়েছেন বিমল রায় বলে অভিযোগ। খাদ্যমন্ত্রী ইডির হাতে গ্রেপ্তার হতেই গৌরীদেবীদের স্বপ্ন ভেঙেছে। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, প্রতারিত হয়েছেন।
২০০৭ সালে থেকে মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিলা উন্নয়ন সংঘের সভাপতি ছিলেন গৌরী মায়া শর্মা। সেই সুবাদে র্যাশনের ডিলারশিপ পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে রাজ্য সরকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে র্যাশন ডিলারশিপ তুলে দিতে উদ্যোগী হয়েছিল। সরকারের সেই নির্দেশমতো ২০১৬ সালে শিলিগুড়ি মহকুমার ৪১টি চা বাগানের ডিলারশিপ স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের নামে বরাদ্দ করা হয়েছিল। সেই সময় গৌরী মায়া শর্মার সংঘের নামে বেলগাছি, মানঝা ও মারাপুর চা বাগানের র্যাশনের ডিলারশিপের লাইসেন্স বরাদ্দ হয়েছিল। তাঁরা দুমাস র্যাশন বিতরণও করেন। কিন্তু অভিযোগ, হঠাৎ দুমাস পরেই তাঁদের ডিলারশিপ বন্ধ হয়ে যায়। তাঁদের জায়গায় অন্য লোকের নাম চলে আসে। যাঁরা বিমল রায়ের খুব কাছের লোক। এই নিয়ে গৌরীদেবীরা বিমল রায়ের দ্বারস্থ হন। বিমল তাঁদের মন্ত্রীর কাছে নিয়ে যান। বেশ কয়েকবার কলকাতা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এভাবে দীর্ঘ আট বছর কেটে গেলেও লাইসেন্স ফিরে পাননি।
এদিন অলডাঙ্গি এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, গৌরী মায়া তাঁর র্যাশন ডিলারশিপ লাইসেন্সের কাগজ হাতে নিয়ে কেঁদেই চলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সব জমা পুঁজি চলে গেল। আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বিমল রায়। আমাদের ১৩ জন মহিলাকে ভুল বুঝিয়ে ২০১৬ সালে মাটিগাড়ার একটি হোটেলে ডেকে বিমল রায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছিলেন। তারপরে মেডিকেল মোড়ে একটি দোকানে আমাদের বহুবার স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপরেই আমাদের লাইসেন্স বাদ হয়ে যায়।’ তাঁরা কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীরা দেখা করতে দেননি সেসময়। তাই মুখ্যমন্ত্রীর পিএর কাছে সমস্ত নথিপত্র দিয়ে আসেন।
যদিও বিমল রায় বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে ডিলারশিপ থাকুক। এতে আমারই লাভ হত। গৌরী মায়া শর্মা খুবই গরিব। তার জন্য আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু তাঁরা যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় লাইসেন্স ফিরে পাননি। যে টাকা ওঁরা দিয়েছিলেন সেটা আমারই টাকা ছিল। আমি তাঁদের ডিলারশিপের লাইসেন্স কেটে অন্যজনের নাম ঢুকিয়েছি এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা গল্প।’
এদিকে, শিলিগুড়ি মহকুমা খাদ্য সরবরাহ আধিকারিক তারিক আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘২০১৬ সালে হাইকোর্টের আদেশে ৪১টি চা বাগানে ডিলারশিপ বরাদ্দ হয়। লাইসেন্সে কারচুপি নিয়ে আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ জানালে খতিয়ে দেখা হবে।’
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ল শক্তিশালী সৌরঝড় (Solar storm)। বিগত দুই দশকের…
চ্যাংরাবান্ধা: বাবার ফলের দোকান। মাঝে মধ্যে বাবাকে সাহায্য করতে দোকানে গিয়ে বসতে হয় সম্রাটকে। কারণ…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের (C. V. Anand Bose) বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ শেয়ার বাজারেও বাজিমাত করলেন বিরাট কোহলি ও অনুষ্কা শর্মা। ২০২০ সালে…
চ্যাংরাবান্ধাঃ অন্যের জমিতে চাষবাস করেই চলে সংসার। নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর পরিস্থিতি। এই আর্থিক প্রতিকূলতা…
This website uses cookies.