নয়ারহাট: নয়ারহাট সহ মাথাভাঙ্গা-১ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এখনও নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের জলজীবন মিশন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে মাথাভাঙ্গা-১ ব্লকের পানিগ্রামের দুটি মৌজায় বড় মাপের দুটি জলাধার তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। জলাধার তৈরির কাজ শেষ। তবু পরিষেবা চালু হয়নি। এর ফলে স্থানীয় মানুষকে বাধ্য হয়েই এখনও নলকূপের আয়রনযুক্ত জল পান করতে হচ্ছে। বাড়ছে ক্ষোভ। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের মাথাভাঙ্গা শাখার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ঋষিন ঘোষ কিছুদিন আগে বলেছিলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিষেবা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’ এই বক্তব্যের পরও কেন পরিষেবা চালু করা হল না এই বিষয়ে জানতে চেয়ে মঙ্গলবার ঋষিনকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
ঘরে ঘরে নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকারি তরফে অনেকদিন ধরেই তৎপরতা দেখানো হচ্ছে। এই লক্ষ্যে ব্লকের অনেক জায়গায় জলাধার, পাম্পহাউস তৈরি, পাইপ পাতার মতো কাজও করা হয়েছে। কিন্তু এখনও ব্লকের অনেক বুথে এই পরিষেবা চালু হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মাথাভাঙ্গা-১ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মজিরুল হোসেন বলেন, ‘জলাধার তৈরির কাজ শেষ, কিন্তু এখনও পরিষেবা চালু হয়নি।’ মহেশচন্দ্র বর্মন পানিগ্রামের একজন বাসিন্দা। তাঁর জমিতেই জলাধারটি তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে জল সরবরাহ শুরু করা হলেও কোথাও কোথাও পাইপ ফুটো থাকায় পুরোদমে পরিষেবা চালু করা যাচ্ছে না।’ পরিস্রুত পানীয় জলের পরিষেবা না চালু হওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে নয়ারহাট গ্রাম পঞ্চায়তের প্রধান মাম্পি বর্মন বলেন, ‘আশা করছি খুব দ্রুত পরিষেবা চালু হবে।’ মাম্পির গলায় আশার ছোঁয়া থাকলেও সঞ্জয়কুমার বর্মনের গলায় কিন্তু ক্ষোভের আঁচ স্পষ্ট টের পাওয়া গেল। সঞ্জয় পুঁটিমারি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। তিনি বলেন, ‘আমার বুথের অনেক বাড়িতে এখনও জলের সংযোগ দেওয়াই হয়নি। সংযোগ দেওয়া বাড়িগুলিতেও পরিষেবা মিলছে না।’
শুধু নয়ারহাট বা পুঁটিমারি নয়, একই অবস্থা বৈরাগীরহাটের দুয়াইসুয়াইতেও। বঞ্চনার তালিকায় রয়েছে হাজরাহাট-১, হাজরাহাট-২, শিকারপুর, কেদারহাট, গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নামও। স্থানীয় মানুষের এই দুর্ভোগ কবে শেষ হবে এই প্রশ্নের উত্তরে মাথাভাঙ্গা-১’এর বিডিও শুভজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরে আনা হবে।’

