গৌরহরি দাস, কোচবিহার: ঘরে ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য জল জীবন মিশন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে কোচবিহার জেলায় (Cooch Behar)। খাতায়-কলমে কাজের নিরিখে রাজ্যে অনেকটা ভালো জায়গাতেও রয়েছে এই জেলা। অথচ সেখানেই কোচবিহার শহর ঘেঁষা হরিণচওড়ার গুদাম মহারানিগঞ্জে দেখা গেল ভিন্ন ছবি। পানীয় জলের অভাবে এখানে প্রচুর মানুষ এখনও স্নান, জামাকাপড় ধোয়া থেকে শুরু করে রান্না পর্যন্ত করতে বাধ্য হচ্ছেন নদীর জলে। যদিও বিষয়টি নিয়ে জলের দায়িত্বে থাকা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর একেবারেই উদাসীন। অতিরিক্ত জেলা শাসক সোমেন দত্ত বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’ জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত ধর বলেন, ওই এলাকাটি উঁচু হওয়ায় জল পৌঁছাতে সমস্যা হয়েছিল। এবার যে নতুন লাইন করা হচ্ছে তাতে সমস্যা নেই। আশা করছি শীঘ্রই সেখানে জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।’
এলাকার বাসিন্দা আমিনা বিবি বলেন, ‘বাড়িতে চাপাকল থাকলেও সেই জল ব্যবহার করা যায় না। যে কারণে স্নান করা, জামাকাপড় ধোয়া থেকে শুরু করে রান্নার জন্য আমরা নদীর জলই ব্যবহার করি। তবে বর্ষার সময় নদীর জল ঘোলা থাকায় তখন খুব অসুবিধা হয়। সেসময় আমরা বৃষ্টির জল ধরে রেখে তা দিয়ে রান্না করি।’ এলাকার আরেক বাসিন্দা রিনা বিবির কথায়, এলাকায় অধিকাংশ বাড়িতে ট্যাপকল বসানো হলেও তাতে জল আসে না।
কোচবিহার শহর থেকে মেরেকেটে এক-দেড় কিলোমিটার দূরে হরিণচওড়া এলাকায় তোর্ষা নদীর রেলসেতু লাগোয়া হল গুদাম মহারানিগঞ্জ। এলাকায় বেশ কয়েকশো লোকের বাস। বাসিন্দারা বলছেন, ৮-১০ মাস আগে এলাকায় অধিকাংশ বাড়িতে সরকারের তরফে জলের লাইন বসানো হয়। কিছু বাড়িতে অবশ্য লাইন এখনও বসানো হয়নি। অভিযোগ, জলের লাইন থাকলেও তাতে জল আসে না। এই অবস্থায় এলাকার গরিব বাসিন্দাদের হাতেগোনা কয়েকজন গাঁটের কড়ি খরচ করে বাড়িতে চাপাকল বসিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু সেই জল পান করা তো দূরের কথা, তা ব্যবহারেরও অযোগ্য। যে কারণে, স্নান করা, জামাকাপড় কাচা থেকে শুরু করে এমনকি রান্না করার জন্য অনেকেই নদীর জলই ব্যবহার করেন।
এলাকার বাসিন্দা আছিরণ বিবি বলেন, ‘বাড়িতে প্রায় এক বছর আগে কল বসিয়ে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কল দিয়ে জল পড়ে না। ফলে খাওয়ার জল অনেক দূর থেকে আনতে হয়। রান্না করি নদীর জল দিয়ে।’ শায়রা বিবি, মনোরা বিবি বলেন, পানীয় জলের খুবই সমস্যা। অনেক দূর থেকে জল আনতে হয়। আমাদের সমস্যা নিয়ে কেউ ভাবে না।