তুফানগঞ্জ: তীব্র গরমের হাত থেকে বাঁচতে ব্যাঙের বিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরা। এটা নতুন ঘটনা নয়, এর আগেও ব্যাঙের বিয়ে দেওয়ার পর বৃষ্টি হয়েছে এই বিশ্বাসকে হাতিয়ার করেই সোমবার ফের ব্যাঙের বিয়ে দিলেন গ্রামবাসীরা। যদিও লোকমুখে প্রচলিত ব্যাঙের বিয়ে দিলেই বৃষ্টির আবির্ভাব ঘটে। বিয়েতে সব ধরনের আয়োজনই ছিল। তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের অন্দরানফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের গঙ্গাবাড়ি এলাকায় গ্রামবাসীরা এই বিয়ের আয়োজন করেছেন। সকাল থেকেই মন্ডপ সাজানো থেকে প্যান্ডেল তৈরি ভোজনের সবজি কাটা ইত্যাদি ছিল চোখের পড়ার মতো। সকাল থেকেই বাজছিল মাইক। সন্ধ্যা হতেই চলে আসেন ঢাকিরা। ঢাকের তালে এলাকার মহিলারাই নাচছিল। পাশেই রায়ডাক নদী থেকে বিয়ের জল ভরা, ব্রাহ্মণ, নাপিত, বউ, জামাই এর আয়োজন ছিল। বউ, জামাই দুজনের কোলে একটি করে ব্যাঙ রেখে বিবাহ হয়। মালাবদলও হয়ে থাকে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই এই বিয়ে দেখার জন্য হাজির হয়েছিলেন।
এই বিয়ের সমস্ত রকমের আয়োজন করেছেন গ্রামের ২০-২৫ জন মহিলারা। পুরুষরা শুধু উপভোগ করেছেন। মোট খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। সাধারণ একটি বিয়ের মতোই সমস্ত রকমের আয়োজন ছিল। উদ্যোক্তা কাঞ্চন দাস, মুক্তি বর্মন জানান, আমাদের ভারতবর্ষ কৃষি প্রধান দেশ। বেশ কিছু দিন থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় জমির মাটি ফেটে চৌচির। কৃষকেরা ক্ষতির সম্মুখীন। লৌকিক প্রথা অনুয়ায়ী ব্যাঙের বিয়ে দিলেই বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায়। এই বিশ্বাসকে পাথেয় করে গ্রামের মহিলারা মিলেই ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করে থাকি। আয়োজনের কোনও ঘাটতি ছিল না। এর আগেও দুবার ব্যাঙের বিয়ে দেওয়ার পর বৃষ্টি হয়েছিল। আমাদের বিশ্বাস, জমির ফসল বাঁচাতে, গ্রামকে রক্ষা করতে আমরা এই ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করি। বিয়ের শেষে সকলকেই পেটপুরে খিচুড়ি, সবজি খাওয়ানো হয়।
পরিবেশ বিদ তথা তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের জীববৈচিত্র্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সরোজ পঞ্চানন বলেন, লোক মুখে প্রচলিত অনুয়ায়ী ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হয়। ব্যাঙ আমাদের নানা ভাবে উপকার করে থাকে। ব্যাঙকে বাঁচাতে হলে আমাদের বৃষ্টির প্রয়োজন। তাই গ্রামবাসীরা এটাকে বিশ্বাস করেই বিয়ে দিচ্ছে।