কোচবিহার: জানুয়ারি থেকেই উপাচার্য নেই পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই সময়ে অ্যাকাডেমিক এবং প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়ে সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। এরই মধ্যে জুলাইয়ে একই দিনে মেয়াদ শেষ হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও ফিন্যান্স অফিসারেরও। এর আগে বিজ্ঞান ও কলা বিভাগের ডিনদের কার্যকালের মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজকর্মের পাশাপাশি গবেষণা এমনকি কর্মচারীদের বেতন নিয়েও সমস্যায় পড়তে হতে পারে বলে মনে করছেন অধ্যাপক থেকে শুরু করে শিক্ষাকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে চলবে বিশ্ববিদ্যালয়? তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। অধ্যাপক, শিক্ষকদের একাংশ বলছেন, শীঘ্রই উপাচার্য নিয়োগ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কিছু না জানালেও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আব্দুল কাদের সাফেলি বলেন, ‘আগামী ৩১ জুলাই আমার এবং ফিন্যান্স অফিসারের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এই বিষয়টি উচ্চশিক্ষা দপ্তর জানে।’ একই কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অফিসার তাপসকুমার মান্নাও। তিনি বলেন, ‘জুলাইতে যে আমার মেয়াদ শেষ হচ্ছে তা উচ্চশিক্ষা দপ্তর জানে।’
অধ্যাপকদের একাংশ জানিয়েছেন, জুলাইয়ের মধ্যে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য আসেন কিংবা বর্তমান রেজিস্ট্রারের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে যদি কোনও নির্দেশিকা আসে, তাহলেই রক্ষা। নয়তো রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে অবসর নিতে হবে আব্দুল কাদের সাফেলিকে। আর বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে পড়বে রেজিস্ট্রারহীন। অর্থাৎ একেবারেই অভিভাবকহীন হয়ে পড়বে বিশ্ববিদ্যালয়। জেলার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত পড়ুয়ারাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উত্তম ঘোষের কথায়, ‘এমনিতেই উপাচার্য না থাকায় সমস্যা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে রেজিস্ট্রার না থাকলে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী সকলকেই সমস্যায় পড়তে হবে।’
স্থায়ী উপাচার্য না থাকায় প্রায় বছরখানেক ধরে প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। এবার রেজিস্ট্রারের মেয়াদ ফুরোলে সমস্যা আরও মারাত্মকভাবে বেড়ে যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে। এমনটাই আশঙ্কা শিক্ষা মহলের। এই পরিস্থিতির বিষয়ে কিছুদিন আগেই উচ্চশিক্ষা দপ্তরকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওয়েবকুপার রাজ্য কমিটির অ্যাসোসিয়েট সেক্রেটারি পিয়াল বসু রায়। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক স্বার্থে যত তাড়াতাড়ি উপাচার্য আসেন, ততই মঙ্গল। এরপর রেজিস্ট্রার এবং ফিন্যান্সের মেয়াদ শেষ হলে এবিষয়ে চিন্তা আরও বাড়বে।’
এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সভাপতি রুয়েল রানা আহমেদও। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন থাকায় আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ শীঘ্রই পদক্ষেপ না করলে পড়ুয়া থেকে শুরু করে আমাদেরও সমস্যায় পড়তে হবে।’