স্বরূপ বিশ্বাস, কলকাতা: সুযোগ পেয়েও আরজি কর নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলনের ঝাঁঝ ধরে রাখতে প্রায় ব্যর্থই বঙ্গ বিজেপি। এই মূল্যায়নে অসন্তুষ্ট দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিশেষ করে আন্দোলন চলার সময় দলীয় নেতৃত্বের ছন্নছাড়া ভাব কাটিয়ে উঠতে পারেননি রাজ্য নেতৃত্ব। বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দিল্লিতে পার্টির শীর্ষস্তরে এখন এই অভিযোগ উঠেছে বলে গেরুয়া শিবিরের খবর।
আরজি কর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে বঙ্গ বিজেপিতে কিছুটা স্বস্তির পরিবেশ ফিরলেও পুজোর আগে এই নিয়ে আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে ভরসা পাচ্ছেন না দলের শীর্ষ রাজ্যনেতারা। জানা গিয়েছে, এই ব্যাপারে জুনিয়ার ডাক্তারদের পরবর্তী ভূমিকা কী হবে, তার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। সঙ্গে ২০২৬ রাজ্যে বিধানসভার ভোটের দিকে তাকিয়ে আরজি কর ইস্যু জিইয়ে রাখতে সাদামাঠা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছেন তাঁরা। মঙ্গলবার ‘উত্তরবঙ্গ সংবাদ’-কে দিলীপ বলেন, ‘আরজি কর নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন বিষয়ের অবতারণা করে রাজ্য সরকারকে চাপে রেখেছে এটা একটা ভালো দিক। জুনিয়ার ডাক্তাররা পরবর্তী সিদ্ধান্ত বা কর্মসূচি কী নেন সেটাও আমাদের দেখা দরকার। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিশেষ করে বিরোধীদল হিসাবে আমাদের একটা দায়িত্ব থেকে যায় রাজ্যের মানুষের স্বার্থে। এই নিয়ে রাজ্যস্তরে দলে এখনও কোনও আলোচনা হয়নি। তবে আরজি করের ইস্যুতে পুজো পর্যন্ত দল রাজ্যজুড়ে সর্বত্র পথসভা করবে। বড় কোনও কর্মসূচি এই ইস্যুতে দল এখনও নেয়নি। অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী তাঁর মতো করে ‘নবান্ন অভিযান’ আবার হবে বলে জানিয়েছেন। একদিকে লালবাজার ও নবান্ন অভিযান হবে বলে মাঝে বিরোধী দলনেতা ঘোষণাও করেছিলেন। এসব নিয়ে অবশ্য এখনও দলের রাজ্যস্তরে কোনও আলোচনা হয়নি।’
রাজ্যে দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথাতেই রাজ্য নেতৃত্বের ‘ছন্নছাড়া’ ভাব কিছুটা হলেও স্পষ্ট। যদিও দিলীপ তা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘আন্দোলন তো রাজনৈতিক দল হিসেবে আরজি কর ইস্যুতে বিজেপিই করছে। এখন তা ধরে রাখতেই পদক্ষেপ করতে হবে আমাদের।’
বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণাই এখন চর্চা হয়ে দাঁড়িয়েছে দিল্লিতে পার্টির শীর্ষ শিবিরে। এরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত দুই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকের কাছে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এই মনোভাবের স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর।