ঘোকসাডাঙ্গা: গোরুর ঘাস কাটতে গিয়ে বন্য শুয়োরের হামলায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। মঙ্গলবার ঘোকসাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের খোপাডুলির তেঁতুলেরছড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম ধীরেন বর্মন (৪৯)। ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া।
মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের ঘোকসাডাঙ্গার বড় শিমুলগুড়ির বাসিন্দা ধীরেন। এদিন বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে তেঁতুলেরছড়া এলাকায় ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন তিনি। জমির আলে বসে ঘাস কাটছিলেন তিনি। সেইসময় আচমকা একটি বন্য শুয়োর এসে পেছন থেকে তাঁকে আক্রমণ করে। পাশেই কাজ করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা দুধেশ্বর বর্মন। বিষয়টি লক্ষ করে তিনি এগিয়ে আসেন। তিনি দৌড়ে এলে বুনোটি পালিয়ে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় দ্রুত ধীরেনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঘোকসাডাঙ্গা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রেবতী বর্মনের কথায়, ‘কয়েকদিন আগে হাতি লোকালয়ে এসে ঘরবাড়ি ও কলাখেত নষ্ট করেছে। এদিন বন্য শুয়োরের আক্রমণে মৃত্যু হল একজনের। আমরা চিন্তায় রয়েছি।’ অপর বাসিন্দা কমল বর্মনের কথায়, ‘লোকালয়ের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে তোর্ষা। আর তোর্ষা নদী পেরিয়ে মাঝেমধ্যেই লোকালয়ে চলে আসছে বন্যপ্রাণী। অথচ বন দপ্তরের তেমন নজরদারি নেই। ফলে আতঙ্ক নিয়েই বাস করি আমরা। এদিনের পর উদ্বেগ আরও বেড়েছে।’ এদিন ঘটনার খবর পেয়ে ধীরেন বর্মনের বাড়িতে আসেন মাথাভাঙ্গার এসডিপিও সমরেণ হালদার, ওসি, বনকর্তা, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সাবলু বর্মন সহ তৃণমূল নেতারা। সাবলুর কথায়, ‘আমরা ওই পরিবারের পাশে আছি। সরকারি সাহায্যের জন্য চেষ্টা করছি।’
মাথাভাঙ্গার রেঞ্জ অফিসার সুদীপ দাস বলেছেন, ‘মৃত ব্যক্তির পরিবার নিয়ম মেনে আবেদন করলে সরকারিভাবে সাহায্য করা হবে।’ এদিকে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ধীরেনের ছেলে ভিনরাজ্য কর্মরত। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভারী বৃষ্টির কারণে তোর্ষা নদীতে গত কয়েকদিনে ব্যাপক জলস্ফীতি লক্ষ করা গিয়েছে। নদীর জলে ভেসে বহু বন্যপ্রাণী লোকালয়ে চলে এসেছে। মঙ্গলবার খোপাডুলিতে তোর্ষার চর থেকে একটি সম্বর প্রজাতির পূর্ণবয়স্ক হরিণ উদ্ধার করে বন দপ্তর। আবার মাথাভাঙ্গা-২ ব্লকের ভেলাকোপায় একটি কচ্ছপ উদ্ধার হয়েছে। গন্ডার, হরিণ, অজগর সহ নানা প্রাণীর লোকালয়ে আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশ ও বন দপ্তরের তরফে মাইকিং করে বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে। তারই মধ্যে এদিন বুনোর হামলায় একজনের মৃত্যু হল। কোথাও বন্যপ্রাণী দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ, প্রশাসন বা বন দপ্তরে খবর দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। মাথাভাঙ্গার রেঞ্জ অফিসার সুদীপ দাসের কথায়, ‘আমরা নিয়মিত টহল ও সচেতনতামূলক প্রচার চালাচ্ছি।’

