কোচবিহার: কোচবিহারের পাতলাখাওয়াতে গন্ডার ছাড়ার প্রকল্প বিশবাঁও জলে। এই বনাঞ্চলের উন্নয়নে ও গন্ডার ছাড়ার প্রকল্পে তিন কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তারপর এক বছরেরও বেশি সময় হলেও বন দপ্তর দিয়েছে মাত্র ২১ লক্ষ টাকা। তাতে কিন্তু কাজের কাজ সেভাবে কিছুই হয়নি। তাই আগামী দু’বছরের মধ্যে পাতলাখাওয়াতে গন্ডার আসার কোনও সম্ভাবনাই নেই। কারণ তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে মন্থরগতিতে। বন দপ্তরের এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলছেন, ‘গন্ডার আনার প্রকল্পটির কাজ চলছে। প্রথম ধাপে তিনটে করে গন্ডার দু’বার আনা হবে। প্রকল্পটি সম্পূর্ণভাবে হতে আরও দু’বছর সময় লাগবে।’
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পাতলাখাওয়া বনাঞ্চল ১৫০০ হেক্টর এলাকায় রয়েছে। তার মধ্যে গন্ডার প্রোজেক্ট এরিয়া ৯৩০ হেক্টর এলাকায় করা হবে। গন্ডারের বাসস্থান তৈরির কাজ চলছে। সবমিলিয়ে গন্ডারের খাবার ২৩০ হেক্টর জমিতে, সেখানে চেপ্তি, ঢাড্ডা, পুরুন্ডি ঘাস লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার মধ্যে আগে থেকে ৭০ হেক্টর এলাকায় ঘাস লাগানো ছিল। ২০২৩-’২৪ আর্থিক বর্ষে তারা ২০ হেক্টর জমিতে ঘাস লাগিয়েছেন। ২০২৪-’২৫ আর্থিক বর্ষে ৫০ হেক্টর জমিতে ঘাস লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার সঙ্গে নতুন চারটি ওয়াচটাওয়ার তৈরি, জলাশয় তৈরি, নতুন রাস্তা তৈরি করার কাজগুলো করা হবে। সবমিলিয়ে এই কাজ করতে প্রায় আট–নয় কোটি টাকা লাগবে। তার মধ্যে এই পর্যন্ত মাত্র দু’ধাপে ২১ লক্ষ টাকা পেয়েছেন তাঁরা। তাই আর্থিক সমস্যা রয়েছে। তবে দপ্তরের আধিকারিকরা তা মানতে চান না। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে কোচবিহারে এসে রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তিন কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বলেছিলেন। পর্যটন ও পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে দু’-তিন মাসের মধ্যে ঢেলে সাজিয়ে গন্ডার আনার ঘোষণা করেন। কিন্তু সেই সব বাস্তবে হয়নি।
রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী বিনযকৃষ্ণ বর্মনের সময়কালেও ১২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়। সেখানে তখন তারকাটার বেড়া দেওয়া, গন্ডারের খাবারের জন্য তৃণভূমি তৈরি, কিছু কটেজ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রকল্প মাঝপথে থমকে যায়। সবমিলিয়ে দেখা যাচ্ছে কোচবিহারের এই পাতলাখাওয়াকে সামনে রেখে যেভাবে প্রচার করা হয়েছিল তা কিছুই হয়নি। বারবার বড় বড় ঘোষণা করা হলেও তা বাস্তবতা পায়নি। অথচ সম্ভাবনা ছিল প্রবল। এখন দেখার কবে এখানে গন্ডার ছাড়া হয়।