অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: যাত্রীবাহী টোটোতে বোঝাই করা যাবে না কোনওরকম পণ্য। শহরকে যানজটমুক্ত করতে এমনই নির্দেশ দিয়েছে জলপাইগুড়ি সদর ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু মাল বহনের নয়া পদ্ধতি অবলম্বন করছেন বেশকিছু পণ্য সরবরাহকারী ড্রিস্টিবিউটার সহ ব্যবসায়ী।
বাইকে করে চার-পাঁচটি বাক্স, ব্যাগ কিংবা বস্তা নিয়ে যাতায়াত করছেন তাঁরা। অথচ ট্রাফিক আইন বলছে, বাইকে শুধু চালক এবং একজন যাত্রী নেওয়ার অনুমতি রয়েছে। কোনওরকম মালপত্র বোঝাই করার নিয়ম নেই। কিন্তু এভাবেই বাইকে করে মাল বহন চলছে জেলা শহরজুড়ে।
যদিও জেলা ট্রাফিক পুলিশের দাবি, নিয়ম না মেনে মালবোঝাই বাইক নজরে পড়লেই সেগুলি বাজেয়াপ্ত করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি ট্রাফিক ডিএসপি অরিন্দম পালচৌধুরী জানান, ‘বাইক মানুষ নিয়ে চলার জন্য। মাল বহন করার জন্য নয়। আমরা এমন কাউকে দেখলে অবশ্যই তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নিই। তবে যাঁরা এগুলো করছেন তাঁদেরও সচেতন হওয়া উচিত।’ ট্রাফিক ডিএসপি যাই বলুন না কেন, নিয়ম ভাঙার এমন ছবি শহরে দেখা যায় হামেশাই। প্রায়ই যাত্রীর বদলে বাইকে নেওয়া হয় চাল, মুড়ি, প্লাস্টিকের জিনিস সহ একাধিক পণ্যসামগ্রী। এমনকি দড়ি দিয়ে বেঁধে বড় বড় বস্তা নিয়ে যাওয়া হয়।
এই অবস্থায় রাস্তায় চলাচল করা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে, তেমনই দুর্ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি দিনবাজারে এমনই এক মালবোঝাই বাইক উলটে পড়ে ক্রেতা স্বপ্না কুণ্ডুর উপর। কোমরে চোটও পান তিনি। পঞ্চাশোর্ধ্ব সেই ক্রেতার কথায়, ‘বাজারে এমনিতে এত ভিড়ে হাঁটাচলা করা দায়। তার উপর বাইকে করে এভাবে পণ্য নিয়ে যাওয়ায় আমাদের মতো পথচারীদের সঙ্গে গুঁতো লাগছে। অল্পের জন্য এ যাত্রায় বেঁচে গেলাম। বেশি চোট লাগেনি। কিন্তু বড় কিছু হলে এর দায় কে নিত? উনি কি দিতেন আমার চিকিৎসার খরচ?’
শহরবাসীর অভিযোগ, এমনিতে শহরের রাস্তা সংকীর্ণ। তার উপর টোটো, রিকশা, চারচাকা গাড়ি, সাইকেল, বাইক সহ আরও নানা যানবাহন চলে। এমন অবস্থায় মালবাহী বাইক যেন গোদের ওপর বিষফোড়া। এ বিষয়ে বাইকচালক অসীম সরকার বলেন, ‘এখন শহরে টোটোর সংখ্যা বেড়েছে। তার উপর বাইকেও মালবোঝাই করছেন অনেকে। হঠাৎ অন্য গাড়ির সঙ্গে গুঁতো লেগে কিংবা ব্যালেন্স হারালে ঘটতে পারে বড়সড়ো দুর্ঘটনা। যাঁরা এই কাজ করছেন, তাঁদেরও বিষয়টি ভাবা উচিত।’
এমনই এক মালবাহী বাইকচালকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি নিজের নাম বা আইনবিরুদ্ধ এই কাজ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।