মেলবোর্ন: গত ২৯ জুন স্বপ্নের রাত। টি২০ বিশ্বকাপ হাতে নিয়ে কুড়ির আন্তর্জাতিক ফর্ম্যাটকে ‘আলবিদা’ জানিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। অধিনায়কের যে সিদ্ধান্তের শরিক হন বিরাট কোহলি, রবীন্দ্র জাদেজাও।
মাথা উঁচু করে বিদায়। যদিও বছর ঘোরার আগে ছবিটা বদলে গিয়েছে। আরও এক বিদায়ের হাতছানি। ব্যর্থতার দায়, হতাশা মাথায় নিয়েই সরে দাঁড়ানোর চাপ। রোহিতের টেস্ট কেরিয়ার ঘিরে এমনই আশঙ্কার মেঘ।
সিডনিতে অনুষ্ঠিত নিউ ইয়ার টেস্টের পরই সম্ভবত ইতি পড়তে চলেছে হিটম্যানের টেস্ট-সাফারির। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড সূত্রের খবর, নির্বাচক কমিটির প্রধান অজিত আগরকার রোহিতের সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠকে বসবেন।
নির্বাচকরা কী চাইছেন, বোর্ডও বা কী ভাবছে, তা পরিষ্কার করে দেবেন রোহিতের কাছে। ভাবনায় রাতারাতি কোনও পরিবর্তন না হলে আগরকারের সঙ্গে বৈঠকেই সিলমোহর পড়তে চলেছে সিডনিতে রোহিতের বিদায়ি টেস্টে।
ঘরের মাঠে বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড সিরিজে দৃষ্টিকটূ ব্যাটিং, চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। লাল বলের ক্রিকেটে টি২০ সুলভ ব্যাটিং করতে গিয়ে বারবার উইকেট দিয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে রোহিতের টেস্ট টেম্পারামেন্ট নিয়ে। অজি সফরেও লুজ শটের তালিকা আরও দীর্ঘ।
লজ্জার পরিসংখ্যানে হতাশা বাড়াচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়া সফরকারী বিদেশি দলের অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সর্বনিম্ন ব্যাটিং গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রাক্তন অধিনায়ক কোর্টনি ওয়ালশকে (৭.৭৫, ১৯৯৬-’৯৭ সফর) পিছনে ফেলে দিয়েছেন রোহিত (গড় ৬.২০, ৫ ইনিংসে ৩১ রান)।
রোহিত-ভক্তরা আশায় ছিলেন, মেলবোর্নের অনুকূল ব্যাটিং পরিস্থিতিতে জ্বলে উঠবেন হিটম্যান। ঘুরে যাবে পরিস্থিতি। যদিও তা হয়নি, জোড়া ব্যর্থতা আরও ত্বরান্বিত করছে রোহিতের বিদায়ের সম্ভাবনাকে।
দেওয়াল লিখন বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না রোহিতেরও। ঘনিষ্ঠ মহলে সিডনির পর সরে দাঁড়ানোর কথা নাকি জানিয়েছেন। রোহিতের লক্ষ্য ছিল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে খেলা। কিন্তু আজকের হারে সেই আশা অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে।
চলতি সিরিজে পাঁচ ইনিংসে রোহিতের সংগ্রহ ৩, ৬, ১০, ৩ ও ৯ রান। রবি শাস্ত্রীও বলছিলেন, ‘রোহিতকে নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এসেছে। ওর পা নড়ছে না। আমার মনে হয় এটাই ওর শেষ সিরিজ। তবে বিরাট আরও কিছুটা সময় হয়তো পাবে।’
সঞ্জয় মঞ্জরেকারও দাবি করেন, ‘বিরাট গ্রেট টেস্ট ব্যাটার। সেখানে রোহিত শুধু ভালো। তুলনা অনুচিত। আরও সময় প্রাপ্য বিরাটের। আর জানতে ইচ্ছে করে, ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ কী করছে। কেন আমরা ওর সমস্যার হাল করতে পারছি না?’