তিরুবনন্তপুরম: জাতগণনা ইস্যুতে ভিন্ন বার্তা দিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) (RSS)। সংঘের মুখপাত্র সুনীল আম্বেদকার সোমবার ইঙ্গিত করেছেন, জাতগণনার দাবি মেনে নিতে তাঁদের আপত্তি নেই। উন্নয়নের প্রয়োজনে জাতগণনা করা যেতেই পারে। তবে বিরোধীরা যেভাবে ইস্যুটিকে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারের হাতিয়ারে পরিণত করেছে তাকে গ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে না সংঘ পরিবার।
লোকসভা ভোটের আগে থেকেই জাতগণনার দাবিতে সরব রাহুল গান্ধি। কংগ্রেসের সুরে সুর মিলিয়েছে আরজেডি, এসপি, ডিএমকে সহ ইন্ডিয়া জোটের অধিকাংশ শরিক দল। বিজেপি শুরু থেকে জাতগণনার বিরোধিতা করছে। লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, তামিলনাডু, রাজস্থানে এনডিএ’র খারাপ ফলে পিছিয়েপড়া শ্রেণির জনসমর্থনে ফাটল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশে সপা, কংগ্রেসের অভাবনীয় সাফল্যে যাদব-মুসলিম ভোটের পাশাপাশি পিছড়েবর্গের সমর্থন যে অনুঘটকের ভূমিকা নিয়ে সেই ব্যাপারে ভোট বিশেষজ্ঞরা একমত।
সামনেই মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা সহ কয়েকটি বড় রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে জাতগণনা নিয়ে আরএসএসের বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ। কেরলের পালক্কড়ে সংঘের ৩ দিনের অখিল ভারতীয় সমন্বয় বৈঠক শেষে সুনীল আম্বেদকার বলেন, ‘মানুষের উন্নয়নের জন্য জাতগণনার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করে না আরএসএস। কিন্তু একে ভোট রাজনীতিতে ব্যাবহার করা অনুচিত। সরকারের উচিত তথ্য সংগ্রহের জন্য জাতগণনা করা। মনে রাখতে হবে এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এর সঙ্গে রাষ্ট্রীয় একতার প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে।’
বিরোধীদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতি নজর দেওয়া দরকার। সেজন্য সরকারের সব শ্রেণির জনসংখ্যার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। উদাহরণ হিসাবে সম্প্রদায় ভিত্তিক পুরুষ, মহিলা, শিশুর সংখ্যা নির্ধারণের কথা বলা যেতে পারে। তবে জাতগণনাকে যেন কল্যাণকর কাজের মধ্যে সীমাবন্ধ রাখা হয়। এ বিষয়ে রাজনীতি করার জন্য নয়। আমরা এখানেই সীমারেখা টানতে চাইছি।’
এতদিন কংগ্রেসের জাতগণনার দাবিকে দেশে বিভাজন তৈরির চেষ্টা বলে অভিযোগ করছিলেন বিজেপি নেতারা। দেশের মানুষকে ভাগ করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আরএসএসের বার্তার পর কেন্দ্রের শাসক দলের অবস্থান নিয়ে স্বাভাবিকভাবে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ইস্যুতে কোনও বিজেপি নেতা মন্তব্য করেননি।