জলপাইগুড়ি: যোগাসন শুরুটা মাত্র পাঁচ বছর বয়সে। যদিও সেসময় রুবিয়া বা তাঁর পরিবার কেউই ভাবেননি যে, এই পথ ধরেও রূপকথা লেখা সম্ভব। আর চরম আর্থিক অনটনকে সঙ্গী করে বেড়ে ওঠা পরিবারে সেটা না ভাবাই স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু কখন যে নিজের অজান্তেই যোগাসনকে ভালোবেসে ফেলেন সেটা হয়তো নিজেও বোঝেননি। ঠিক করেন এটাকে ধরেই ভবিষ্যতে এগিয়ে যাবেন। চলার পথে বাধা কম আসেনি। কিন্তু তারপরেও টিউশনি করে, নিজের সমস্ত কাজ সামলে সকালে ৫ ঘণ্টা ও বিকেলে ৩ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ চালিয়ে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে গিয়েছেন। আর তার ফলাফলও পেয়েছেন গত ৬ এপ্রিল।
সেদিন কাশ্মীরের শের-ই কাশ্মীর ইন্টারন্যাশানাল কনফারেন্স সেন্টারে আয়োজিত ফিট ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল যোগাসন প্রতিযোগিতায় যোগ ট্রেডিশনালে সিনিয়ার গার্লস বিভাগে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবে প্রথম স্থান অধিকার করে স্বর্ণপদক জয় করেছে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) বছর চব্বিশের রুবিয়া খাতুন। প্রতিযোগিতায় গুজরাট, মহারাষ্ট্র , দিল্লি, কর্ণাটক, গোয়া, পশ্চিমবঙ্গ, জম্মু-কাশ্মীর, অসম সহ বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় ২০০ প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিল। সেখানে প্রথম স্থান লাভের পাশাপাশি থাইল্যান্ডে আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতাতেও অংশ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে সে। এবিষয়ে রুবিয়া বলেন, ‘পোডিয়ামে ভারতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে দাঁড়ানোর পর আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলাম। এরপর আন্তর্জাতিক পর্যায়েও দেশের হয়ে পদক জিততে চাই। সেজন্য বাড়ি ফিরেই অনুশীলন ও ডায়েটে মন দিয়েছি।’ তবে, সেক্ষেত্রে প্রধান চিন্তার বিষয় সেখানে যাওয়ার খরচ৷
রুবিয়ার বাবা গফুর আলি ফুটপাথে জুতো বিক্রি করেন, মা মুন্নি খাতুন আশাকর্মী। গফুরের কথায়, ‘মেয়ের এই সাফল্যে আমাদের আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ও যোগের টিউশন করে, নিজে প্র্যাকটিস করে যেভাবে এগিয়ে চলছে তাতে ওকে আশীর্বাদ করা ছাড়া দেওয়ার আর কিছুই নেই।’