শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

Mainaguri | ছাউনির টিনে মরচে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা রামশাই হাটে

শেষ আপডেট:

বাণীব্রত চক্রবর্তী, ময়নাগুড়ি: ছাউনির টিনে মরচে ধরেছে। কংক্রিটের খুঁটির সিমেন্টের ঢালাই খসে পড়েছে। মেঝের অবস্থা আরও খারাপ। শেড ভেঙে কোনওদিন দুর্ঘটনা ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। নেই নিকাশি ব্যবস্থা। অল্প বৃষ্টিতেই গোটা চত্বর জলকাদায় ভরে যায়। মেলে না পানীয় জলও। এমনই দুর্দশা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন ময়নাগুড়ি ব্লকের রামশাই হাটের (Mainaguri)।

সপ্তাহে দু’দিন করে, সোমবার এবং শুক্রবার হাট বসে সেখানে। একদিকে সবুজ চা বাগানের ঘেরা অন্যদিকে গভীর অরণ্যে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর রামশাই গ্রাম। পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে স্রোতস্বিনী জলঢাকা নদী। জনসংখ্যা অন্তত পঁচিশ হাজার। অধিকাংশ বাসিন্দাই চা বাগানের শ্রমিক। তবে কেউ কেউ উৎপাদিত পণ্য বিক্রি কিংবা কিনতে আসেন এই হাটে। বিপদের ঝুঁকি নিয়েই বিক্রিবাটা চলে হাটে।

রামশাই থেকে পানবাড়ি বাজারের দূরত্ব অনেকটাই। আর রামশাই গভীর অরণ্যে ঘেরা। ফলে এলাকার প্রায় পঁচিশ হাজার বসবাসকারীর একমাত্র ভরসা রামশাই হাট। কিন্তু হাটের বেহাল অবস্থা দেখে নাক সিঁটকাচ্ছেন অনেকেই। স্থানীয় বাসিন্দা রাজু মাহালি বলেন, ‘এই হাটের গুরুত্ব অনেক। আশপাশে বাজার নেই। সন্ধ্যার পর মানুষ হাতির ভয়ে ঘর থেকে বাইরে বের হন না। বাড়ির কাছের হাটটিকে কিছুটা সাজিয়েগুছিয়ে দিলে আমাদের সুবিধা হত।’

চার বছর ধরে এই হাটের ইজারা দেওয়া হয়নি। কারণ টেন্ডার ডাকা হলেও কেউ অংশগ্রহণ করেননি। তারপর থেকে হাটের ডাকও দেওয়া হয় না। ব্যবসায়ীরাও কোনও কর প্রদান করেন না।

চা বাগান অধ্যুষিত এলাকা। বেশিরভাগ নাগরিকই চা বাগান শ্রমিক। ভরসা জলঢাকা নদীর চর। এখানকার মানুষের নিজস্ব আবাদি জমি খুব বেশি নেই। কিন্তু প্রতিবছর বর্ষায় জলঢাকা নদীর চরে পলি জমে। সেই জমিতে সোনা ফলে। কী কী চাষ হয় না জিজ্ঞাসা করে কী চাষ হয় না, সেটা বলাটা বেশি সহজ। আরেক স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ ওরাওঁয়ের কথায়, শীতের সবজি আগাম চাষ করা হয় রামশাইতে। অথচ সেগুলো যে বিক্রি করবে, সেই উপায় নেই। হাটের যা দশা!’

রামশাই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বিশ্বজিৎ ওরাওঁ দায় ঝেড়ে জানালেন, রামশাই হাটটি জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন হাট। হাট সংস্কারের বিষয়ে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

শেষ কবে এই সরকারি হাটের সংস্কার হয়েছিল, তা কেউ জানেন না। ছাউনির সমস্ত টিনে মরচে পড়ে গিয়েছে। মেঝেতেও সিমেন্ট কংক্রিটের প্রলেপ উঠে গিয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্য দীপালি রায় বর্মনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, ‘ইজারা দেওয়ার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছিল। তাতে কেউ অংশ নেননি। হাটের শেডের টিন নতুন করে লাগানো এবং শেড মেরামতির জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’

এখন কবে হাটশেড মেরামত করা হয়, সেটাই দেখার।

Shahini Bhadra
Shahini Bhadrahttps://uttarbangasambad.com/
Shahini Bhadra is working as Trainee Sub Editor. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Online. Shahini is involved in Copy Editing, Uploading in website.

Share post:

Popular

More like this
Related

Tea Export | ফের ইরানে দেশীয় চায়ের রপ্তানি 

শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা: যুদ্ধের জেরে বন্ধ থাকার পর ফের...

Kranti | পঞ্চানন এখনও স্বপদে বহাল, দীপাকে সরাল বিজেপি

শুভদীপ শর্মা, ক্রান্তি: জঙ্গলের রাস্তায় গাড়িতে তৃণমূল (TMC) নেতার...

Jalpaiguri | নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন, ৩ জনকে ফাঁসির সাজা দিল জলপাইগুড়ি পকসো আদালত

সৌরভ দেব, জলপাইগুড়ি: দশম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের...

Kranti | মদের আসরে তৃণমূল নেতা-বিজেপি নেত্রী, ভিডিও ভাইরাল সামাজিক মাধ্যমে

শুভদীপ শর্মা, ক্রান্তি: মঙ্গলবার রাতে বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগের আপালচাঁদ...