রায়গঞ্জ: রায়গঞ্জ শহর থেকে প্রায় ১৫ কিমি দূরে অবস্থিত ভিটিয়ার গ্রাম। নাগর নদীর তীরে অবস্থিত বন্যা প্লাবিত এই গ্রামে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন। দিনের বেলায় রায়গঞ্জ থেকে টোটো-অটো চললেও রাতের বেলায় সমস্যায় পড়েন গ্রামের মানুষ। বিশেষ করে রাতের বেলায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা খুবই সমস্যায় পড়েন। তাই গ্রামের মানুষের সমস্যার কথা ভেবে এগিয়ে এসেছেন ভিটিয়ার গ্রামের যুবক সফিকুল হক। ২০১৮ সালে তিনি একটি পুরোনো ছোট গাড়ি কেনেন। ২০২১ সাল থেকে সেই গাড়িটি গ্রামের রোগীদের পরিষেবার কাজে লাগিয়েছেন।
রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত রোগীদের পরিষেবা দেন। গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে নিজের গাড়িতে করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেন। শুধুমাত্র নিজের গ্রাম নয়, আশেপাশের গ্রামগুলি থেকে কেউ ফোন করলে তার বাড়িতে পৌঁছে গিয়ে অসুস্থ রোগীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেন। তবে তার গাড়িতে অক্সিজেন বা স্যালাইনের ব্যবস্থা না থাকায় গর্ভবতীদের গাড়িতে তোলেন না তিনি। গ্রামের মানুষ সফিকুলের এই কাজে খুব খুশি। পেশায় ডেকোরেটার্সের ব্যবসায়ী সফিকুল দীর্ঘদিন ধরে সমাজসেবা করে আসছেন।
সফিকুল জানান, ২০১৪ সালে রাতের বেলায় বাবা তাজিরুদ্দিন হক অসুস্থ হয়ে পড়েন। কোনও গাড়ি না পেয়ে বাইকে করে হাসপাতালে রওনা হয়েছিলাম। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই বাবা রাস্তায় মারা যান। সেই দিনের অভিজ্ঞতার কথা ভুলতে না পেরেই গ্রামের মানুষের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হাসপাতালে পৌঁছে দিতে গাড়ি পরিষেবা চালু করেছি। কারণ রায়গঞ্জের দূরত্ব ১৫ কিমি হলেও রাতের বেলায় গাড়ি পাওয়া যায়না। গাড়ি পেলেও ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা ভাড়া দাবি করে। অসুস্থ রোগী নিয়ে সমস্যায় পড়েন গ্রামের মানুষ। গ্রামের অসহায় মানুষের সমস্যার কথা ভেবে এই পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছি।