রায়গঞ্জ: এ যেন ‘নতুন প্রেরণার দূত’। পেশায় মামুলি প্যান্ডেল ব্যবসায়ী। সাইকেলে চেপে এক চত্বর থেকে অন্য চত্বর চষে বেড়ান। অসুস্থ মানুষ দেখলেই বাহন থামিয়ে শুশ্রূষায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অসুস্থকে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন, চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগের বন্দোবস্তও করেন। খোঁজ নেন, মানুষটির পরিবারে আর কে কে আছেন অথবা সংসার কেমন করে চলছে। খুঁটিয়ে সব জানার পর সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। মঙ্গলবার এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে আচমকাই দেখা রায়গঞ্জ মেডিকেল চত্বরে।
ছাব্বিশের কোঠায় বয়স। ওই যুবকের বাড়ি গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের ভিটিআর গ্রামে। পকেট থেকে ম্যাড়মেড়ে একটা নোটবই বের করে জানালেন, ‘এখানে জেলার সব চিকিৎসকের নাম আর ফোন নম্বর লেখা রয়েছে। ভালো করে বুঝিয়ে বললে গরিব রোগীদের বিনা পয়সায় চিকিৎসা হয়ে যায়।’ নিজের রোজগারের ভাবনা সরিয়ে তিনি একজন জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষকের মতো মানবদেহের নানা অবস্থান সম্পর্কে সবাইকে বোঝান। কীভাবে শরীরের ভিতরে জটিল রোগ তৈরি হয়, প্রতিকারের জন্য কোন চিকিৎসক উপযুক্ত, কীভাবে সরকারি হাসপাতালে যেতে হয় কিংবা রায়গঞ্জ মেডিকেলের আউটডোরে কখন, কবে, কে রোগী দেখেন, সব যেন তাঁর ঠোঁটের ডগায়। বছর দশেক ধরে এভাবেই অসহায় মানুষের সেবায় সমর্পিত সফিকুল হক।
১৫ বছর আগে বিনা চিকিৎসায় সফিকুলের বাবার মৃত্যু হয়েছিল। এখন গ্রামেই প্যান্ডেলের ব্যবসা করে খুব সামান্য আয়। শ্যামবর্ণ, পেটানো চেহারার যুবকটি চুপচাপ থাকেন। এসব – নিয়ে প্রশ্ন করলে আন্তরিকতার সঙ্গে উত্তর দেন, ‘রোজগারের কথা ভাবার এ সময় পাইনি, তবে একটা কাজ তো করছি।’ বন্ধু, আত্মীয় বা স্বজনদের ভিড়েই কেটে যায় সময়। নিজের ভবিষ্যতের কথা ভাবছেন না? সৌম্য – দর্শন যুবকটির বক্তব্য, ‘যদি সাহায্য না – করি তাহলে ওই মানুষগুলির কী হবে ভাবতে পারছেন! তাছাড়া আমার এই কাজ করতে ভালোই লাগে।’
সফিকুলের মনোভাবে খুশি সবাই। রায়গঞ্জের চিকিৎসক এনসি পাল জানালেন, ‘বিশ্বায়িত হাওয়ায় এমন মানুষ যে এখনও আছেন তা ভাবতেও ভালো লাগে। অসহায়ের পাশে দাঁড়াতেই হবে। আর সেটা মানুষই পারবে।’
সফিকুলের কোনও রাজনৈতিক রং নেই। মনের নানা রং নিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়েন আর্তদের সেবায়। খুব অসুবিধে হলে সরকারি আধিকারিকদের শরণাপন্ন হন। প্রয়োজনে গুটি কয়েক বন্ধুকে পাশে পান। যেভাবেই হোক না কেন, সংকল্প সফলে সফিকুল হক অনড়।
গৌরী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান বরেন রায় বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই মানুষের সেবায় নিয়োজিত ওই যুবক। গ্রামের যে সমস্ত রাস্তা ভেঙে গিয়েছে, কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে তিনি সেই রাস্তাগুলি মেরামত করেন। গ্রামের মহিলা-পুরুষদের সই (স্বাক্ষর) শেখানোর জন্য শনি ও রবিবার বাড়িতে বিনা পয়সায় স্কুল খুলেছেন। স্বাক্ষর করতে পারলে পুরস্কার বাবদ মহিলাদের শাড়ি, চুড়িদার, পুরুষদের জামা-প্যান্ট, লুঙ্গি, গেঞ্জি দেওয়া হয়। তিনি সবটাই করেন নিজের গাঁটের টাকা খরচ করে।’
হিলি: যৌনাঙ্গে লুকিয়ে শোনা পাচারের ছক ভেস্তে দিল সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। সোমবার বিকেলে হিলি সীমান্ত…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বলিউডের অভিনেত্রীকে সামনে দেখেও নিষ্পৃহ একটি ফুড ডেলিভারি অ্যাপের ডেলিভারি বয়।…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বিক্ষিপ্ত কিছু উত্তেজনার ঘটনা ছাড়া মোটের উপর শান্তিতেই মিটল পঞ্চম দফার…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের (Lok Sabha Election 2024) আবহে রাজ্য পুলিশে (Bengal Police) রদবদল…
শিলিগুড়ি: উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতে এসে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় তরুণী ছাত্রী ববিতা দত্তের। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই…
আসানসোল: বন্ধুদের সঙ্গে দামোদর নদীতে স্নান করতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হলো এক স্কুল পড়ুয়ার।…
This website uses cookies.