দেবদর্শন চন্দ, কোচবিহার: এমাসের বেতন এখনও পেলেন না এজেন্সি মারফত নিযুক্ত পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ জন কর্মী। ফলে তাঁদের ছেলেমেয়েরা হয়তো এবার পুজোয় নতুন জামা পরে ঘুরতে পারবে না। প্রশাসনিক ডামাডোলের জেরে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্তও কারও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতনের টাকা ঢোকেনি। পুজো এগিয়ে এলেও পরিবার-পরিজনদের জন্য কাপড় কিনতে পারেননি এজেন্সি মারফত নিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মী সমীরকুমার সরকার। ক্ষোভের সুরে তিনি বললেন, ‘সবাই বেতন পেয়ে গেলেও আমাদের বেতন আটকে দেওয়া হল। পুজোর আগে কীভাবে পরিবারের সদস্যদের জামাকাপড় কিনে দেব, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।’ সমীরের মতো অনেকেরই একই পরিস্থিতি।
এদিকে, পুজো দোরগোড়ায়। সবার কেনাকাটা শেষের দিকে থাকলেও তাঁদের বাড়ির লোকগুলোর কেনাকাটা এখনও শুরুই হয়নি। টাকা না পেলে কীভাবে কেনাকাটা করবেন, ভেবে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কারওর বাড়িতে ছোট মেয়ে রয়েছে। কেউ আবার সদ্য বিবাহিত। কারওর বাড়িতে রয়েছেন বয়স্ক মা-বাবা। এই পরিস্থিতিতে সাংসারিক খরচ, পুজোর কেনাকাটা, ওষুধপত্রের খরচ কীভাবে সামলাবেন, তা নিয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে সবার।
শুক্রবার কাজের পর সরকারিভাবে পুজোর ছুটি পড়ে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, হঠাৎ করে তাঁদের বেতন কেন আটকে দেওয়া হল, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় খুললে বিষয়টি নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রুয়েল রানা আহমেদ। তিনি বলেন, ‘কোন কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের এজেন্সির কর্মীদের বেতন আটকানো হল। সেটা আমরাও বুঝতে পারছি না। পুজোর আগে এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।’
এজেন্সি মারফত নিযুক্ত কর্মীদের বিষয়ে ফিন্যান্স অফিসারের কাছে সম্প্রতি কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য। সেই কর্মীদের নিয়োগের বিষয়টি আদৌ সেই সময়ের কর্মসমিতির বৈঠকে পাশ করা হয়েছিল কি না, সে বিষয়টিও জানতে চাওয়া হয়েছে বলে খবর। বিষয়টি নিয়ে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অফিসার তাপস মান্নাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন কেটে দেন। ফোন ধরেননি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নিখিলচন্দ্র রায়ও। তাঁকে ফোন করা হলেও তিনি উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ হওয়া আরেক কর্মী বিশ্বদীপ দাস বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক থেকে শুরু করে সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমাদের পরিস্থিতির কথা উপাচার্যকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তা সত্ত্বেও বিষয়টি নিয়ে তিনি কোনও পদক্ষেপ করছেন না।’