কলকাতা: সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল অনাড়ম্বরভাবেই। মেয়ে দোয়েল মজুমদার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ কলকাতার নিমতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। তার আগে পর্যন্ত শ্যামপুকুর স্ট্রিটের বাড়িতে সাহিত্যিকের দেহ শায়িত ছিল। দোয়েল জানান, আচার-অনুষ্ঠান পছন্দ করতেন না বাবা। তাই কোনও আড়ম্বর হয়নি। সাধারণভাবেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিট নাগাদ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে সমরেশ মজুমদারের। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। ২৫ এপ্রিল শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। টানা দুই সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছিলেন। খুব একটা চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন না বলেই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। আগে থেকে তাঁর সিওপিডি-র সমস্যা ছিল।
১৯৪৪ সালের ১০ মার্চ উত্তরবঙ্গের গয়েরকাটায় জন্ম সমরেশের। এখানেই কেটেছে ছেলেবেলা। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে। তারপর ১৯৬০ সালে কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক হন। মাস্টার্স করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কাজ করতেন সংবাদমাধ্যমে। সাহিত্যের পাশাপাশি গ্রুপ থিয়েটারের প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। মূলত নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনকথা ঠাঁই পেয়েছে তাঁর লেখায়।
তাঁর উপন্যাসগুলির মধ্যে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান, গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তাঁর ট্রিলজি ‘উত্তরাধিকার, কালবেলা, কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্য জগতে তাঁকে আলাদা উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। অনিমেষ-মাধবীলতার মতো একাধিক বহু চর্চিত চরিত্র প্রাণ পেয়েছে তাঁর কলমে। সাহিত্য জগতে অবদানের জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান ১৯৮৪ সালে। এছাড়াও বঙ্কিম পুরস্কার, আনন্দ পুরস্কারের মতো পুরস্কারও ছিল তাঁর ঝুলিতে।
উত্তরবঙ্গের এই ভূমিপুত্রের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সাহিত্য মহলে। সাহিত্যিকের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।