গয়েরকাটা: রাখে হরি তো মারে কে? এ যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা। ট্রেনের যে কামরাগুলি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে সেগুলির মধ্যে একটি অসংরক্ষিত কামরায় প্রথমে ধূপগুড়ি স্টেশন থেকে উঠেছিলেন সমীরণ চট্টোপাধ্যায়। যদিও ওই কামরায় প্রচুর ভিড় থাকায় ময়নাগুড়ি স্টেশনে নেমে অন্য কামরায় চলে যান।
সোমবার দুর্ঘটনার(Train Accident) কবলে পড়া ১৩১৭৪ ডাউন আগরতলা-শিয়ালদা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে(Kanchanjungha Express) চেপে মালদায় যাচ্ছিলেন গয়েরকাটা বাসিন্দা সমীরণ চট্টোপাধ্যায়। হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনি অনুভব করায় লাফ দিয়ে ট্রেনের কামরা থেকে নেমে পড়েন তিনি। তখন চারিদিকে শুধু হাহাকার, চিৎকার ও কান্না। কোনওরকমে নিজের সঙ্গে থাকা আরও তিন সহযাত্রীকে খুঁজে বের করেন। বাইরে তখন মুষলধারে বৃষ্টি। এরই মাঝে স্থানীয়দের সঙ্গে উদ্ধারকাজে সাময়িক সাহায্যও করেন সমীরণবাবু। বাড়ি ফিরে সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা নিজে মুখে শোনালেন তিনি।
সমীরণবাবুর সঙ্গে ছিলেন সংস্থার আরও তিন টেকনিশিয়ান। তাঁরা সকলেই ধূপগুড়ি স্টেশন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে সকালবেলা ওঠেন। কামরা পরিবর্তন না করলে নির্ঘাত দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হত তাঁদের। যদিও বরাতজোরে কামরা পরিবর্তন করায় বেঁচে গিয়েছেন প্রত্যেকে। সমীরণবাবু বলেন, ‘এনজেপি স্টেশনের পর একটি স্টেশন পার করতেই হঠাৎ তীব্র ঝাঁকুনি অনুভব করি। কোনওরকমে নিজেকে বাঁচিয়ে লাফ দিয়ে ট্রেন থেকে নামি। এরপর সামনের কামরাগুলির পরিস্থিতি দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। চারদিকে শুধু মানুষের চিৎকার, কান্না আর রক্তাক্ত দেহ। নিজের সহযোগীদের খুঁজে বের করেনি। আমরা চারজন যতটুকু পেরেছি বৃষ্টির মধ্যে সাহায্য করেছি। এরপর আমরা অজানা একটি জায়গায় প্রায় ১ কিমি হেঁটে বাস ধরে শিলিগুড়ি পৌঁছোই। ততক্ষণে খবর পেয়ে বাড়ির লোক ফোন করতে শুরু করেছে।’