শামুকতলা: কয়েকদিন আগে দেশে ভোটপর্ব মিটল। গদি দখলের লড়াইয়ে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল পরিবেশের কথা বেমালুম ভুলে থাকল। কোনও রাজনৈতিক দলের ভোটের ইস্তাহারে এবার তেমন জোরালোভাবে পরিবেশ রক্ষার কথা দেখা যায়নি। ঠিক সে সময় শামুকতলার (Samuktala) সঞ্জয় অধিকারী, সায়ন সরকার, বিধানকৃষ্ণ দাস, সৌম্যজিৎ চক্রবর্তীর মতো একদল তরুণ নীরবে সবুজ বাঁচানোর লড়াই চালিয়ে গেলেন। তাঁরা রাস্তার পাশে, ফাঁকা জায়গায় ও মাঠে গাছ লাগাচ্ছেন। ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ওই তরুণ দল লাগাতার বৃক্ষরোপণ (Tree plantation) চালিয়ে যাবে। চলতি মাসে তাঁদের লক্ষ্য এক হাজার গাছ লাগানো। শামুকতলা থানার ওসি জগদীশ রায় বলেন, ‘সবুজায়নের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। সবুজ রক্ষা যে কতটা জরুরি সেটা ওঁদের মতো সবাইকে বুঝতে হবে।’
শুধু গাছ লাগানো নয়, চারাগাছ পরিচর্যা করে বড় করে তোলার কাজও তাঁরা সমানতালে চালিয়ে যাবেন বলে জানান। গাছের চারদিকে বেড়া দেওয়ার কাজ করছেন। সঞ্জয়দের এই কর্মকাণ্ডে রমেন গোস্বামী, রাজা কর্মকার, সুশান্ত দেবনাথ, প্রাঞ্জল দেবনাথ, গোবিন্দ দেবনাথের মতো আরও কিছু তরুণ শামিল হয়েছেন। এভাবে তাঁদের দলের সদস্য সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। তাঁদের এই কাজে উৎসাহ দিচ্ছেন বড়রা। শামুকতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অজেন মিঞ্জ জানান, ‘ওই তরুণদের সবুজ বাঁচানোর এই লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছি।’ সদস্যদের কেউ ছাত্র বা ব্যবসায়ী। পড়াশোনা ও ব্যবসার ফাঁকে তাঁদের নেশা গাছ লাগানো ও পরিচর্যা করা। এপর্যন্ত তাঁরা অন্তত ২০০টি গাছ লাগিয়েছেন। ওই দলের অন্যতম সদস্য সঞ্জয় অধিকারীর কথায়, ‘নতুন গাছ লাগানো যায় কিন্তু সেগুলিকে বাঁচিয়ে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। তাই যতটুকু রক্ষা করতে পারব ততটা গাছ লাগাই। সবাই যাতে সবুজ বাঁচানোর কাজে শামিল হন মানুষের কাছে এটাই আর্জি। সকলে এগিয়ে এলে পরিবেশ রক্ষার লড়াইটা আরও ভালোভাবে করা যাবে।’
কিন্তু এত গাছ পান কোথা থেকে? উত্তরে দলের আরেক সদস্য সায়ন সরকার বলেন, ‘অনেক সময় নিজেদের টাকা দিয়েই চারা কিনতে হয়। এর আগে আমাদের এলাকায় এতটা গরম অনুভব করিনি। দিন-দিন গাছ কমে যাচ্ছে। সবুজায়ন একমাত্র পরিবেশকে শান্ত করতে পারে। তাই গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নিয়েছি।’ কামাখ্যাগুড়ি ভলান্টিয়ারি অর্গানাইজেশনের সম্পাদক উদয়শংকর দেবনাথের বক্তব্য, ‘আমি ও আমাদের দলের সদস্যরাও নিয়মিত সবুজ বাঁচানোর লড়াই করে যাচ্ছি। শামুকতলার একদল তরুণ যেভাবে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছেন সেটা সত্যি প্রশংসনীয়।’