কিশনগঞ্জ: প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে আপত্তিকর ভিডিও বানিয়ে ব্ল্যাকমেল। সেই ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আদায় করা হত মোটা অংকের টাকা। এই চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন অনেকেই। সম্প্রতি এমনই এক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে কিশনগঞ্জ থানার পুলিশ। তদন্তে নেমে চক্রের দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রতারণা চক্রের আরও ৬ সদস্যের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন কিশনগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার সাগর কুমার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই চক্রের দুই মহিলা বেছে বেছে বিত্তবান যুবকদের প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে নেন। পরে তাঁদের শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে ফেলে্ন মহিলারা। সেই ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ভিডিও বানিয়ে নেয় চক্রের অন্য সদস্যরা। এরপরই শুরু হয় চক্রের আসল খেলা। ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের সেই ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শুরু হয় ব্ল্যাকমেল। আদায় করে নেয় মোটা অংকের টাকা। লোকলজ্জার ভয়ে প্রতারিত যুবকরা একপ্রকার বাধ্য হয় টাকা দিতে। এই ভাবেই দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এই অসাধু কারবার।
সম্প্রতি এই প্রতারণার ফাঁদে পড়েন এক ট্রাভেল এজেন্ট। প্রতারিত সেই যুবক জানিয়েছেন, চক্রের সদস্যরা মোবাইলে ফোন করে ডেকে নেয় কিশনগঞ্জ সদর থানা এলাকার সিঙ্গিয়া বস্তির এক বাড়িতে। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, ঘরে আগে থেকেই এক মহিলা বিবস্ত্র অবস্থায় বসে রয়েছে। সেই সময়ই মহিলা তাঁকে জাপটে ধরেন। এবং চক্রের অন্য সদস্যরা ভিডিও করে নেয়। সেই ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ২ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করে নেয় বলে অভিযোগ। এরপরই প্রতারিত এই যুবক কিশনগঞ্জ পুলিশের দ্বারস্থ হয়। লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে কিশনগঞ্জ পুলিশ।
শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশ সুপার সাগর কুমার বলেন, তদন্তে নেমে তাঁরা বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছেন। চক্রের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজও হাতে পেয়েছেন। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখে এক মহিলা সহ মোট দুই জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এই চক্রের মূল পাণ্ডা স্থানীয় এক পঞ্চায়েত সদস্যের ভাই বলে সূত্রের খবর। এই অসাধু চক্রের ফাঁদে পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খুঁইয়েছেন শতাধিক মানুষ বলে অনুমান পুলিশের।