উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: জনগণের বিক্ষোভের (Bangladesh Unrest) মুখে পড়ে শেষপর্যন্ত সোমবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। কিন্তু শেষ সময়েও ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন তিনি। পরিস্থিতি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছে, দেশত্যাগের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত তা মানতে চাইছিলেন না হাসিনা। এমনকি সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের চাপ দিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যরা বোঝানোর পর পদত্যাগে (Resigned) রাজি হন তিনি।
বাংলাদেশের প্রথমসারির একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রবিবার অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় বাংলাদেশে। যা সামাল দিতে পারেনি শেখ হাসিনার সরকার। পরিস্থিতি বুঝতে পেরে রবিবারই হাসিনাকে তাঁর এক উপদেষ্টা ও দলীয় কয়েকজন নেতা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তা কোনওমতেই মানতে চাননি হাসিনা। বরং কার্ফিউ আরও জোরদার করতে বলেছিলেন তিনি।
এমনকি বাংলাদেশের বিভিন্ন বাহিনীর উচ্চপদস্থ আধিকারিক সূত্রে খবর, সোমবার বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ তিন বাহিনীর প্রধান ও পুলিশের আইজিপিকে গণভবনে ডেকে বৈঠক করেন হাসিনা। সেনাবাহিনী কেন পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না, তা নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু বলপ্রয়োগ করে যে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না তা বাহিনীর শীর্ষকর্তারা হাসিনাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু হাসিনা রাজি না হওয়ায় শেখ রেহানার সঙ্গেও আলোচনায় বসেন বাহিনীর কর্তারা। তবে রেখানাও তাঁর দিদি হাসিনাকে বোঝাতে ব্যর্থ হন। এরপর লন্ডন নিবাসী হাসিনা-পুত্র জয়ের সঙ্গে কথা বলেন এক শীর্ষ কর্মকর্তা। শেষপর্যন্ত জয়ের সঙ্গে কথা বলার পরই পদত্যাগে রাজি হন হাসিনা।
তবে শেষ মুহূর্তে জাতির উদ্দেশে একটি ভাষণ রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন হাসিনা। কিন্তু ততক্ষণে আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশের গণভবনের দিকে এগোনো শুরু করে দিয়েছিলেন। এমনকি আনুমানিক ৪৫ মিনিটের মধ্যেই ওই ভিড় গণভবনে পৌঁছে যেতে পারে বলে খবর পান বাহিনীর শীর্ষকর্তারা। এই পরিস্থিতিতে হাসিনাকে ভাষণের সময় দেওয়া হলে পরবর্তীতে তিনি পালানোর পর্যাপ্ত সময় পাবেন না বলে আশঙ্কা করা হয়। তাই আর ঝুঁকি না নিয়ে ওই ৪৫ মিনিটের মধ্যেই হাসিনাকে দেশ ছাড়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল বলে খবর সূত্রের। এরপরই হাসিনা ও রেহানাকে নিয়ে আসা হয় তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরের একটি হেলিপ্যাডে। এরপর সেখান থেকে বঙ্গভবনে গিয়ে পদত্যাগের পরই সামরিক হেলিকপ্টারে করে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। এরপর সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ বিমানে করে দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেসে পৌঁছান তিনি। সূত্রের খবর, বর্তমানে দিল্লিতে গোপন আস্তানায় রয়েছেন হাসিনা।