চাঁচল: প্রশাসনের তোয়াক্কা না করেই লাঠি হাতে ফুটপাতের দোকান উচ্ছেদ অভিযানে নামলেন এক দম্পতি। চাঁচল (Chanchal) সদরের রাজ্য সড়কের ধারে তরলতলা মোড় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ওই দম্পতির দাদাগিরির ফলে পথে বসার উপক্রম হয়েছে এক ফুটপাত দোকানির। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফুটপাথ খালি করা নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসনকে। তবে সেটাও নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী এবং মানবিকভাবে। কিন্তু চাঁচলের বিনোদ রাম এবং তার স্ত্রী সুমি সরকার কোনওরকম আইনের তোয়াক্কা না করেই সেই নির্দেশ পালনে নেমে পড়েছেন। তরলতলা মোড় সংলগ্ন এলাকায় তাদের বাড়ির সামনে রাজ্য সড়ক এবং নর্দমার সংযোগস্থলে সরকারি জায়গায় রয়েছে একটি অস্থায়ী ফাস্টফুডের দোকান। ঘোষপাড়ার বাসিন্দা মহাদেব ঘোষ দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সেই দোকান চালাচ্ছেন একটি ছোট্ট ঠেলাগাড়ি নিয়ে। যে দোকানের উপরেই মহাদেবের সম্পূর্ণ পরিবার নির্ভরশীল।
অভিযোগ, বুধবার বিকেলে হঠাৎই বিনোদ বাবু এবং তার স্ত্রী মহাদেবকে দোকান তুলে দেওয়ার জন্য হুমকি দেন। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয়ও দেখান। মহাদেব প্রতিবাদ করলে বাড়ি থেকে লাঠি নিয়ে এসে শুরু হয় দোকান ভাঙচুর। ঠেলা উলটে দিয়ে দোকানে থাকা সমস্ত খাবার সহ ক্যাশ বাক্স ফেলে দেওয়া হয় রাস্তায়। কিছুক্ষণের মধ্যে চাঁচল থানার পুলিশ পৌঁছালেও ততক্ষণে সব শেষ। অসহায় মহাদেব এবং তার মা বোনেরা সেই সময় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তাদের দাবি।
যদিও অভিযুক্ত দম্পতির দাবি, তাদের বাড়ির সামনে দোকান চলার ফলে ধোঁয়াতে তাদের প্রচণ্ড অস্বস্তি হয়। সঙ্গে খাবারের গন্ধ। পরিবারের বয়স্ক সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এর আগে মহাদেব মীমাংসায় রাজি হয়েছিলেন এখান থেকে দোকান তুলে নেওয়ার জন্য। কিন্তু তারপরও দোকান না তোলায় তারা আজ নিজেদের সুরক্ষার স্বার্থে এই কাজ করেছেন। যদিও আইন হাতে নেওয়া যুক্তিসঙ্গত কিনা এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেন নি তারা। চাঁচল থানায় ওই দম্পতির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মহাদেব ঘোষ।
মহাদেব ঘোষ বলেন, ‘এই দোকানের উপরেই আমাদের সংসার নির্ভর করে। ব্যাংকে লোন করে দোকান চালাচ্ছি। প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিত। আমিও কিছুদিন সময় চেয়েছি। এভাবে কেন ভাঙল। আমি গরিব বলে।‘
সুমি সরকারের দাবি, এর আগে একটা মীমাংসা বৈঠক হয়েছিল। সেখানে তিন মাসের সময়সীমা ছিল। তারপরও এরা উঠছে না। বাড়িতে আমরা ধোঁয়ার জ্বালায় বাস করতে পারছি না। তাই নিজেদের আত্মরক্ষার কাজ করেছি। চাঁচল থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে নির্দিষ্ট ধারায় পদক্ষেপ নেব। আইন কেউ হাতে নিতে পারে না।‘
