রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫

দীপার পাত্র

শেষ আপডেট:

  • জয়ন্ত দে

 

 

 

 

 

 

দ্যুতিমানকে দুশ্চরিত্র কোন শালা বলে। দ্যুতিমান ভগবান নন! দ্যুতিমান খোদা নন! দ্যুতিমান মানুষ। নিখাদ মানুষ। কিন্তু এটা যদি তিনি ঠিক ঠিক করতে পারেন, তাহলে তিনি সত্যি সত্যি সবাইকে জানিয়ে দেবেন— সবার ওপরে ভগবান আর নীচে আছে দ্যুতিমান! সে খোদ ঈশ্বরের পাঠানো দূত।

দ্যুতিমান ফোনটা নিয়ে নাড়ছেন চাড়ছেন। মনে মনে ভাঁজছেন। তিনি কী করবেন? কী করতে পারেন? কীভাবে করবেন? ছোটবেলায় ষোলোঘুঁটি খেলেছেন, বাঘবন্দি খেলেছেন, বড়বেলায় দাবা খেলেছেন। এখনও তিনি খেলছেন। একটা ঘুঁটি এগিয়ে দিচ্ছেন, একটা ঘুঁটি ডানে বামে। রবিকান্তটা প্রায় ম্যানেজ হয়েই গিয়েছিল—।

রবিকান্ত নয় আসলে ভ্যাবলাকান্ত। অমন একটা মেয়েকে রিফিউজ করল? বলল, ‘না, দাদা আমাকে ছেড়ে দিন।’

দ্যুতিমান বললেন, ‘আমি তো তোমাকে ধরিনি ভাই, একটা প্রস্তাব দিয়েছিলাম। এমন মেয়ে তুমি পাবে না। এই বলে দিলাম।’

‘জানি দাদা।’

‘তাহলে রাজি হচ্ছ না কেন?’
রবিকান্ত ভ্যাবলাকান্ত হয়ে গেল। কিছুক্ষণ অ্যাঁ অ্যাঁ করল।

দ্যুতিমান হালকা গলায় হাসলেন, বললেন, ‘পরে আফসোস করবে। সাধা লক্ষ্মী পায়ে ঠেলছ ভাই। এখনও বলো—’

‘না দাদা, থাক!’

‘থাকবে কেন? তুমি আমাকে খুলে বলতে পারো? তোমার দ্বিধা কোথায়?’

দ্বিধা আর কোথায়? খুলে আর কী বলবে, রবিকান্ত এখনও ভ্যাবলাকান্ত হয়ে আছে। দ্যুতিমান সেনের মুখের ওপর বলা কি যায়? যায় না! অন্য কেউ হলে রবিকান্ত বলে দিত। কিন্তু দ্যুতিমানদা বড়মানুষ, নামী মানুষ, তাঁর মুখের ওপর কি কথা বলা যায়? রবিকান্ত ফোনের এপার থেকেই মাথা চুলকাল।

‘তুমি তো আমাকে বিশ্বাস করো? তুমি জানো আমি জহুরি। আমি বলছি, দীপা একদিন দাঁড়াবে। আজ ছোটখাটো পার্ট করছে। আজ ও জেলার নাট্যদলের একজন কর্মী। হ্যাঁ সামান্যই কর্মী। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি দীপা একদিন দাঁড়াবে। কলকাতার মঞ্চ, ছোট পর্দা, বড় পর্দা  দাপিয়ে বেড়াবে। সব অন্যায়ের জবাব দেবে।’

‘হ্যাঁ, দাদা দীপার কাজ খুব ভালো। আপনি ঠিকই বলেছেন, একদিন ও খুবই নাম করবে।’

‘করবে, করবেই। ও আমার হাতে মানুষ। আমি মানুষ চিনি। আর তোমরা আমাকে চেনো।’

রবিকান্ত মনে মনে বিড়বিড় করল, হ্যাঁ চিনি খুব চিনি। আমরা সবাই জানি দীপা আপনার প্রেমিকা। সারা জেলা জানে। এখন কেন যে আপনি আমার সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন কে জানে? কিন্তু আমি তোমার ফাঁদে পড়ছি না। আসলে দোষের মধ্যে রবিকান্ত বেশ কয়েক মাস হল দীপার সঙ্গে একটু বেশি বেশি গল্প করছিল। একটু বেশিই হয়তো। একটা নাটকে দুজনে একসঙ্গে বেশ ক’টা শো করেছে। বেশ একটা বন্ডিং হয়েছিল। এই বন্ডিং না থাকলে কি অভিনয় করা যায়! সেখান থেকেই ভাব। তবে শুধু ভাবই, ভাব-ভালোবাসা নয়।

রবিকান্তের মনে হল আচ্ছা দীপা কি দ্যুতিমান সেনকে কিছু বলেছে? কই দীপা তো তাকে সরাসরি বলতে পারত?

দ্যুতিমান বললেন, ‘আচ্ছা, এমন নয়তো? দীপা ডিভোর্সি। তুমি ফ্রেশ, অবিবাহিত একটা ছেলে- তাই দ্বিধা! এটাই কি আপত্তির কারণ? তাহলে বলতে হয়, নাটক প্রগতিশীল মানুষের কাজ। আর যার মন সেই মান্ধাতার যুগে পড়ে আছে, সে আর যে কোনও মহান কার্য করুক, নাট্যকর্মী হওয়া তার উচিত নয়। তোমার জন্যও নাটক নয়।’

কথাটা শেলের মতো রবিকান্তর বুকে এসে বিঁধল। দ্যুতিমানদা তাকে এমন কথা বলতে পারলেন! সে আদর্শ নাট্যকর্মী নয়! রবিকান্ত হালকা কাশল, বলল, ‘দাদা আমার ছোটমুখে বড় কথা মানায় না। তাই দাদা আমি এই বিষয়ে থাকতে চাইছি না। আসলে আমার বাড়ি থেকে আপত্তি আছে, পারিবারিক আপত্তি বুঝতেই তো পারেন।’

‘তার মানে তোমার মত আছে। বাধা পরিবার। ছি! মেয়ে ডিভোর্সি বলে? না, ঘরের বৌ নাটক করবে বলে?’

রবিকান্ত এবার সত্যি সত্যি ভ্যাবলা হয়ে গেল। কী বলবে সে? শান্ত গলায় দ্যুতিমান বললেন, ‘তুমি কি তোমার বাবা মায়ের সঙ্গে মুখোমুখি আমাকে একবার বসাতে পারবে? তাহলে তোমার ইচ্ছেটাও আমি ওদের জানিয়ে দিতাম। স্পষ্ট করে বলে দিতাম দীপাকে তুমি বিয়ে করতে চাও, ওঁদের আপত্তির জন্য তুমি স্যাক্রিফাইস করছ, যা ঠিক নয়। তোমার আপত্তি না থাকাটা ওঁরা জেনে যেতেন।’

রবিকান্ত বলল, ‘শুধু পরিবার নয় দাদা, আমারও আপত্তি আছে?’

‘তোমার আপত্তি কোথা থেকে এল? তুমি যে আবার প্রথম থেকে শুরু করলে, এই তো বললে তোমার আপত্তি নেই- এই রবিকান্ত তুমি ভ্যাবলাকান্তের মতো কথা বোলো না। এটা তোমার মতো একটা শিক্ষিত ছেলেকে মানায় না।’

রবিকান্ত ঠান্ডা গলায় বলল, ‘আমি ভ্যাবলাকান্তই দাদা, আমি রবিকান্ত নই। আমার সঙ্গে দীপাকে মানায় না।’

রবিকান্ত রাজি হয়নি। রবিকান্তের নাটকের দলের বন্ধুরা বলল, ‘তুই কিন্তু স্পষ্ট বলে দিতে পারতিস রবি- দাদা আপনার মাল আপনি সামলান!’

রবিকান্ত বুঝতে পারছিল না, দ্যুতিমান সেন হঠাৎ দীপার বিয়ের জন্য খেপে উঠলেন কেন? বেশ তো ছিলেন। সর্বদা পাশে একটা সখী নিয়ে ঘুরতেন। যে কোনও প্রোডাকশনে সেরা রোলটা ওর জন্য তুলে রাখার চেষ্টা করতেন। সবসময় সফল হত না। তবে দীপা গুণী মেয়ে। যথেষ্ট ভালো অভিনয় করে। দ্যুতিমান এমন একটা ভাব করেন যেন দীপাকে তিনি সুচিত্রা সেনের জায়গায় ফিট করে দেবেন। দ্যুতিমানের রকমসকমের জন্য আশপাশের লোকজনও খুব বিরক্ত। রবিকান্ত আলাদা করে দীপার কোনও দোষ খুঁজে পায়নি। যদিও দ্যুতিমানদার স্বভাবের জন্য তাঁকে যাঁরা অপছন্দ করেন তাঁরাও এখন দীপাকে অপছন্দ করেন। যা সত্যি বলতে দীপার প্রাপ্য নয়।

রবিকান্তের পরিষ্কার একটা দৃষ্টিভঙ্গি আছে, সে দীপাকে আলাদা একটা মানুষ হিসেবে দেখে, ভালো অভিনেত্রী হিসেবে দেখে এবং অবশ্যই দ্যুতিমানদার প্রেমিকা হিসেবেই দেখে।

রবিকান্ত নীতিপুলিশ নয়। দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজেদের ভেতর কেমন সম্পর্কে বাঁচবে সেটা তারাই ঠিক করবে। তবে হ্যাঁ, এক্ষেত্রে দ্যুতিমান সেনের স্ত্রীর বলা কথাগুলো রবিকান্ত স্মরণ করতেই পারে।

দ্যুতিমান যখন দীপাকে ডিভোর্স করাচ্ছে, বা বলা যায় ওদের স্বামী-স্ত্রীর ভেতরের টুকরোটাকরা গোলমালের ভেতর নিজে ঢুকে ঘেঁটে ঘ করে দিচ্ছে, তখন বৌদি বারবার বলেছিল- ওটা কোরো না। সব স্বামী-স্ত্রীর ভেতর সমস্যা হয়, হতে পারে, ওরা নিজেরা নিজেদের মতো করে মিটিয়ে নেবে। তুমি ঢুকো না। কিন্তু তখন দ্যুতিমানদা অত্যাচারিতা লাঞ্ছিতা নারী হিসেবে দীপাকে উপস্থিত করল। এবং ওদের মাঝে যদি ছোট ছিদ্র থাকে তার মধ্যে আঙুল, পরে সম্পূর্ণ হাত গলিয়ে বড় করে দিল।

রবিকান্ত এসব কিছু শুনেছে। সরাসরি নয়। দ্যুতিমান সেনের যুক্তি দীপাকে নাটকের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে হবে। ও প্রতিভাময়ী, নাহলে ও নাটক করতে পারবে না। বাইরের কোনও ছেলে ওকে বুঝবে না। একটা প্রতিভা ঝরে যাবে।

কেন? নাটকের লোকজন কি নাটকের বাইরের মানুষের সঙ্গে সংসার করছে না!

একজন একটা কথা বলেছিল- আসলে দীপা এসেছে খুব সাধারণ ঘর থেকে। কিন্তু দীপা নাটক করতে এসে নাটকের সব ঝকঝকে ছেলেদের দেখেছে। ওর কী করে খুব সাধারণ একটা ছেলেকে পছন্দ হবে? ঠিক এই কারণেই ওর প্রথম ডিভোর্সটা হয়েছিল। ওকে কেউ বোঝানোর ছিল না, জীবনটাও একটা রঙ্গমঞ্চ। সেখানে আমরা সবাই অভিনয় করছি। স্বয়ং ঠাকুর বলে গিয়েছেন- সংসারে সং হয়ে থাকতে হয়।

একজন বলেছিল— আচ্ছা দ্যুতিমান কি এখন দীপাকে বিয়ে দিয়ে ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে?

একজন বলেছিল— আচ্ছা দ্যুতিমান কি একটা দীপার জন্য একটা ভ্যাবলাকান্ত স্বামী চাইছে, যে দ্যুতিমানকে নিয়ে কোনও প্রশ্ন তুলবে না।

এসব প্রশ্নের উত্তর দেবে কে? কেইবা দ্যুতিমান সেনের কাছে জানতে চাইবে? সবাই দেখছে আর হাসছে।

দ্যুতিমান সেন গেম সাজাচ্ছেন।

কোথা থেকে শুনেছিলেন বা উড়োখবর পেয়েছিলেন— ইদানীং নরেশের সঙ্গে ওর স্ত্রীর সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছে না।

নরেশ নাটকের ছেলে। অভিনয়ের গুণ এখনও প্রমাণিত হয়নি। তবে ছেলেটার চেষ্টা আছে। উড়োখবরটা দ্যুতিমান ধরতে চাইলেন। একদিন ফোন করলেন নরেশকে। বললেন, ‘নরেশ তোমার সঙ্গে শুনলাম তোমার স্ত্রীর কীসব গোলমাল চলছে?’

এমন আপন কথায় নরেশ বিগলিত, বলল, ‘হ্যাঁ, দাদা আমি আমার স্ত্রীকে ঠিক আমার কাজকর্ম বোঝাতে পারছি না। ও আমার এই নাটক করা পছন্দ করছে না। তার থেকে আমি যদি আরও দুটো টিউশনি করি, আরও বেশি টাকা রোজগার করি— এটাই ওর বক্তব্য।’

দ্যুতিমান গলা ভারী করলেন, ‘ডেঞ্জারাস! এভাবে দুটো টাকা, বাড়তি রোজগারের জন্য কত প্রতিভা মুকুলে ঝরে যায়।’

‘তাই তো দাদা!’

‘তোমার কাজকে যে রেসপেক্ট করছে না, তার সঙ্গে থাকবে কী করে? গোটা জীবন কাটাবে কী করে?’

‘আমি ওকে বোঝানোর চেষ্টা করছি দাদা। সহজে আমি হার মানব না।’

‘কার সঙ্গে লড়বে নরেশ? এই লড়তে লড়তে বোঝাতে বোঝাতে তো তোমার জীবন শেষ হয়ে যাবে ভাই।’

‘আমাকে লড়তেই হবে দাদা। আগে ও এমন ছিল না। প্রথম থেকেই আমার সব জানত— মানে নাটকের কথা—।’

‘তোমার স্ত্রী এখন কোথায়?’

‘ক’দিনের জন্য বাপের বাড়ি গেছে।’

‘নিশ্চয়ই অশান্তি করে গেছে?’

‘না, মানে তেমন না হলেও, নাটক নিয়ে নিত্য অশান্তি আমাদের লেগেই আছে দাদা।’

‘আর নয়। তুমি ওকে আনবে না। তোমার বাড়িতে এলে ঢুকতে দেবে না।’

‘আনব না, ঢুকতে দেবে না বলছেন— তাহলে সবিতা ঠিক হয়ে যাবে।’

‘না, ঠিক হবে না। তোমাকে আরও বিগড়ে দিতে হবে। যদি সত্যি নাটক করতে চাও, তাহলে শক্ত হও। ওকে জীবন থেকে তাড়াও।’

‘মানে?’

‘মানে সহজ। দীপারও তো এমন হয়েছিল, ওর স্বামী বুঝতে চাইছিল না। রিহার্সালে নাটকের শোতে আসবে। আমি বললাম, দীপা এটা হবে না। তোমার স্বামী কি তোমাকে সন্দেহ করে? নাকি তোমার স্বামী তোমাকে পাহারা দেয়? এভাবে আর যা হোক নাটক করা যাবে না। তোমার স্বামী বাড়িতে তোমার স্বামী। বাইরের লোক আমি অ্যালাউ করব না। সে রেগে গেল। দীপা কিন্তু স্বামীকে ট্যাঁকে নিয়ে ঘুরবে বলে ঠিক করেছিল। আমিই আপত্তি তুললাম। দীপাকে বোঝালাম।  তারপর সেপারেশন। তারপর ডিভোর্স। উকিল আমার চেনা, তুমিও সেই পথে হাঁটো।’

‘সবিতাকে ডিভোর্স দিয়ে দেব দাদা, না, না, এটা হয় না। ও ঠিক বুঝতে পারছে না বলে অবুঝপনা করছে।’

‘ওর অবুঝপনা তোমার অভিনয়ের ক্ষতি করছে নরেশ। এখনও পর্যন্ত তুমি একটা ভালো চরিত্র করতে পারলে না। বয়স বাড়ছে— আর কবে স্টেজ পাবে? অথচ আমি জানি, তোমার মধ্যে ছাইচাপা আগুন আছে। একদিন তুমি মঞ্চ কাঁপাবে।’

‘আমি মঞ্চ কাঁপাব!’

‘আমি নিশ্চিত। তোমার মধ্যে ট্যালেন্ট আছে। একশো পারসেন্ট অভিনয় ক্ষমতা আছে। কিন্তু তুমি সাংসারিক অসুবিধায় এমন ফেঁসে আছ, যে নিজেকেই জানতে পারছ না। শেষ, শেষ হয়ে যাচ্ছ। অশান্তির চাপে তুমি চাপা পড়ে যাচ্ছ। সম্পূর্ণাটা দিতে পারছ না।’

‘আপনি ঠিক বলছেন না দাদা। আমার মধ্যে তেমন প্রতিভা নেই। আমি দেখেছি, আমার করা চরিত্র যখন অন্যরা করে তখন কত ভালো হয়। আমি ঠিক ফোটাতে পারি না। আমি নাটক ভালোবাসি, আজীবন নাটকের সঙ্গেই থাকব দাদা। প্রয়োজনে ব্যাক স্টেজে কাজ করব। কিন্তু নাটক ছেড়ে যাব না।’

‘নরেশ তুমি ভালো ছেলে। তুমি আমার কথা শোনো। তোমার উপকার হবে। তোমার সব স্বপ্নপূরণ হবে। তুমি সবিতাকে ডিভোর্স করো। কীভাবে করবে, সব আমি শিখিয়ে দেব। ওকে সরাতেই হবে তোমার জীবন থেকে। ওকে সরতেই হবে। কিছুদিন এভাবে থাকো, তারপর উকিল দিয়ে ডিভোর্স ফাইল করো।’

‘না দাদা আমি ওকে ছাড়তে পারব না।’

‘ওকে না ছাড়লে তুমি দীপাকে কীভাবে পাবে? আমি ঠিক করেই রেখেছি, দীপাকে তোমার সঙ্গে বিয়ে দেব। তুমি আমার কথা শোনো। সবিতাকে ছাড়ো। দীপাকে বিয়ে করো। তোমরাই হবে আমার ডান আর বাঁ হাত। আমি তোমাদের একটা জুটি হিসেবে দেখতে চাই।’

বিব্রত নরেশ বলল, ‘না, দাদা, আমি যেমন নাটক ছাড়তে পারব না। তেমন সবিতাকেও ছাড়তে পারব না। আমি যেমন মঞ্চে সফল হইনি, হয়তো তেমন স্বামী হিসেবেও সফল হব না। এটা মেনে নিয়েই থাকব না। মঞ্চেও চেষ্টা করব, সংসারেও চেষ্টা করব। আমাকে এই আশীর্বাদ করুন দাদা। আর আপনি দীপাকে ছাড়বেন না, আপনাদেরও আমরা একটা জুটি হিসেবেই দেখি দাদা।’

দ্যুতিমান ঠোঁট চেপে বললেন, ‘শোনো নরেশ আমি তোমাকে বলে দিলাম— তোমার কিস্যু হবে না। সব ভস্মে ঘি ঢালা হবে।’

ফোন ছেড়ে গম্ভীর হয়ে বসে থাকলেন দ্যুতিমান। দু’দিনের ছেলে স্টেজে কথা জড়িয়ে যায়— আমাকে জ্ঞান দিচ্ছে। আমাকে বলল— দীপা আর আমি জুটি। কত জুটি গড়লাম কত জুটি ভাঙলাম ও জানে না। এটা দীপা জানে। তাই তো যা বলার আমি বলছি, যা করার আমিই করছি। নাহলে এমন কখনও কারও হয়, দীপার পাত্র চাই, অথচ দীপার কোনও কথা নাই। আসলে দীপা জানে— ওপরে ভগবান, নীচে দ্যুতিমান!

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
Uttarbanga Sambad
Uttarbanga Sambadhttps://uttarbangasambad.com/
Uttarbanga Sambad was started on 19 May 1980 in a small letterpress in Siliguri. Due to its huge popularity, in 1981 web offset press was installed. Computerized typesetting was introduced in the year 1985.

Share post:

Popular

More like this
Related

শ্রীরামকৃষ্ণের গৃহদেবতার কথা

পূর্বা সেনগুপ্ত   তখন বৈষ্ণবদের ভক্তির রসে আপ্লুত, তন্ত্রের আচারে...

শাপলা

মনোনীতা চক্রবর্তী             আরও একটা জন্মদিনের দিকে এগোচ্ছে  স্বচ্ছতোয়া। আরও...

১ আনমনা   সুব্রতা ঘোষ রায়    বসন্ত এসেছিল পলাশের ডালে, আনমনা মেয়ে তার কোন ব‍্যথা...

নাবালিকার বিয়ে আর পাচারচক্র

ছন্দা বিশ্বাস  দোয়েলের শিসে দিন শুরুর পরিবর্তে সেদিন কলিং...