- অম্লান চক্রবর্তী
‘তুই কি সারাটা ট্যুর…এরকম মুখ ব্যাজার করেই থাকবি?’ বিপদভঞ্জন সাহা জিভের ডগা দিয়ে সুপুরির টুকরোটা দাঁতের ফাঁক থেকে উদ্ধার করে ফোঁস করলেন। ‘দু’বেলা গান্ডেপিন্ডে গিলছিস। ড্যাবড্যাব করে কেল্লা-মিউজিয়াম সবই দেখছিস। শুধু মুখখানা বাংলার পাঁচ রয়ে গেছে। বলি যার ওপর এই রাগ, সে কি এই প্যাঁচামুখ দেখতে পাচ্ছে?’
দীর্ঘদিনের বন্ধুর ধ্যাতানি খেয়েও যতীন্দ্রমোহন কুণ্ডুর ভাবান্তর দেখা দিল না। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব বলেই হয়তো না। এমনিতেও দুজনের রঙ্গতামাশা চলে। বিপদভঞ্জনবাবুকে সবাই বিপদবাবু বা বিপদদা বলেই ডাকে। শুধু যতীনবাবু দেখা হলেই ‘কী বিপদ! কী বিপদ!’ করেন। আসলে ভবানীগঞ্জ বাজারে প্রায় চার দশক দুজন পাশাপাশি ব্যবসা করেছেন। দুজনেই বিপত্নীক, কিন্তু বিয়ের আগে থেকেই বিপদে-আপদে একে অন্যের পাশাপাশি থেকেছেন। বছর দুই হল বিপদবাবু তাঁর লক্ষ্মীমন্ত মেয়েটি আর পয়মন্ত গালামালের দোকানটি ভালো দেখে একটি ছেলের হাতে তুলে দিয়ে ভারমুক্ত হয়েছেন।
জামাইবাবাজিটিও বেশ করিতকর্মা। গৃহলক্ষ্মী এবং বাণিজ্যলক্ষ্মী – দুজনকেই খুশি রেখেছে। যতীন কুণ্ডুও আজকাল ফার্মেসিতে বসেন না। কিন্তু ছেলেটাকে নিয়ে মনে শান্তি নেই। সুবীর এমনিতে চালাকচতুর এবং সঞ্চয়ী। কিন্তু হালে বসেই বাবু জেদ ধরেছেন – ফার্মেসির ব্যবসা যথেষ্ট নয়। বাজারে কম্পিটিশন বাড়ছে। পাশাপাশি একটি প্যাথলজিকাল ল্যাব না খুললেই নয়। পাশের জমিটুকুও ওদেরই। কিন্তু ল্যাব করতে গেলে যন্ত্রপাতিও কিনতে হবে, ছেলেমেয়ে রাখতে হবে – বিস্তর খরচ। হয়তো লোনও নিতে হবে। এই নিয়ে বাপ-ব্যাটার আলোচনা ইদানীং তর্কবিতর্কে নেমেছে।
গতসপ্তাহে এই নিয়ে এক চোট হয়ে গেল। দু’দিনের ছোকরা, যার নাক টিপলে দুধ বেরোয়, তার কথা অনুযায়ী যতীন কুণ্ডু নাকি ব্যবসা বোঝেন না! একা হাতে ফার্মেসিটা দাঁড় করিয়েছেন যতীন। ছ’-ছ’টা ছেলে আজ সেই ফার্মেসিতে কাজ করে। গোটা ভবানীগঞ্জ জানে এমন ওষুধ নেই যা কুণ্ডু মেডিক্যালসে পাওয়া যায় না। সেই যতীন কিনা ব্যবসা বোঝেন না? রাগের মাথায় এই দিল্লি-গোয়ালিয়র-আগ্রা ঘোরার পরিকল্পনা করেছিলেন যতীন। সংসারের জোয়াল বিপদবাবুও নামিয়ে রেখেছেন। ঘোরার নামে তাই সবসময় এক পায়ে খাড়া। প্রায়ই বলেন, ‘টাকা কামানোর কষ্টই জেনেছি, এবারে খরচের আনন্দটুকুও জেনে নিতে চাই।’
চেনা এজেন্ট দিয়ে রাজধানীর টিকিট কেটে নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন দুজনে। সেখান থেকে শতাব্দী করে গতকাল এসেছেন গোয়ালিয়র। স্টেশনের কাছে রাজ্য পর্যটন নিগমের ছিমছাম হোটেলেই উঠেছেন। লাঞ্চ সেরে গোলগাল রিসেপশনিস্ট ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করতেই বলে দিল যে, টেম্পো করে কুড়ি-পঁচিশ মিনিটেই পৌঁছে যাওয়া যায় তানসেন নগর। সেখানেই তানসেনের সমাধি। ওখান থেকে গোয়ালিয়র ফোর্ট কিলোমিটার খানেক। ওটুকু হেঁটেই মেরে দেওয়া যায়। তবে রাস্তা খাড়াই। তাছাড়া দুজনেই বয়স্ক। কাছেপিঠে নাকি টোটো আছে। শ-খানেক ধরিয়ে দিলেই কেল্লা ফতে। অর্থাৎ ওরাই ওপরে ফোর্টের গেটের একেবারে কাছে পৌঁছে দেবে।
মোটে সাড়ে তিনটে বাজে কিন্তু রোদটা কেমন যেন ম্যাদামারা। নভেম্বর ফুরোতে চলল, অথচ হাফ জ্যাকেটেরও চেন খুলে রাখতে হচ্ছে। এদিকে টেম্পো চলছে গদাইলস্করি চালে। রাজরাজড়াদের জায়গা হলেও গোয়ালিয়র ছোট শহর। রাস্তাঘাটে ভিড় আছে, ব্যস্ততা নেই। দু’পাশে সারিসারি মূলত কাপড়ের দোকান। ডিভাইডার দেওয়া সরু রাস্তা, দেখেশুনে ওভারটেক করতে হয়। একটা মোড়ের মাথায় এসে টেম্পোর ড্রাইভার ওঁদের নামিয়ে দিল।
‘সামনে পুলিশ আটকে দেবে। বাঁদিকের রাস্তাটা ধরে হেঁটে চলে যান। দশ পা হাঁটলেই বাঁদিকেই মকবরার গেট।’
বিপদবাবু ভাড়া মিটিয়ে চারপাশে ভালো করে দেখে নিলেন। সত্যি বাঁদিকে কোনও গাড়ি যাচ্ছে না। ওই তো, দূরে পুলিশ ব্যারিকেডও দেখা যাচ্ছে। নাহ, টেম্পোওলা তাহলে গুল দেয়নি। মাথার ওপরে সাইনবোর্ডে দেখাচ্ছে ‘কিলা গেট’ ওইদিকেই।
সামনেই একটা দোকানে স্টোভের ওপর কেটলি দেখে দুজনেরই চায়ের তেষ্টা জেগে উঠল। ‘দোঠো গরম চায়চা দেনা, আদ্রক ঢালকে,’ অর্ডার করেই বিপদবাবু দোকানের পাশে গিয়ে সিগারেট ধরালেন। দুজনের মধ্যে ওর হিন্দিটাই অপেক্ষাকৃত ভালো। সেটা জাহির করার সামান্যতম সুযোগ ভদ্রলোক অপচয় করেন না। শুধুমাত্র আত্মবিশ্বাসের জোরে শব্দের দৈন্য আর ব্যাকরণের দুর্বলতা ঢেকে বুক চিতিয়ে হিন্দি বলেন।
‘যাই বলিস যতীন, আমার কিন্তু বেশ উত্তেজনা হচ্ছে,’ বিকেলের আকাশে জেগে থাকা মসৃণ টাকের মতো কেল্লার গম্বুজের দিকে তাকিয়ে বিপদবাবু ধোঁয়া ছাড়লেন। ‘কেল্লাটেল্লা ঠিক আছে, কিন্তু কবর-টবর দেখলে আমার গায়ে কাঁটা দেয়।’
‘কেন?’ যতীন দায়সারাভাবে জিজ্ঞাসা করলেন।
‘কেল্লায় হয়তো একসময় রাজাবাদশারা ছিল। যেমন ভাড়াবাড়িতে বা হোটেলে আমরা থাকি। কিন্তু কবর অন্য ব্যাপার। নীচে সেই জ্যান্ত লোকটা শুয়ে আছে। ভাবা যায়!’
‘জ্যান্ত?’ যতীন এবারে হাসলেন।
‘আহা, জ্যান্ত মানে সাক্ষাৎ। মানে রক্তমাংসের সেই লোকটাই শুয়ে আছে। বুঝলি তো?’
‘রক্ত কবে শুকিয়ে গেছে, মাংসও পোকায় কুরে খেয়েছে। বড়জোর হাড্ডি রয়ে গেছে। নয়তো সেটাও সার হয়ে গেছে,’ যতীন বলেই হাত বাড়ালেন। দুজনের চা এসে গেছে। কাগজের কাপে চুমুক দেবার পর যতীনের মুখ দেখে বোঝা গেল চা পছন্দ হয়নি। সেই চায়েই চুমুক দিয়ে বিপদবাবুর ভাবালুতা কিন্তু কাটল না।
‘খোদ তানসেন শুয়ে আছে কবরের নীচে। ভাবা যায়!’
‘ভাবাও যায়, দেখাও যায়। আমরা দেখতেই যাচ্ছি।’ যতীনবাবু বন্ধুর এই মুগ্ধতাবোধের কারণ খুঁজে পেলেন না।
‘লোকটা নাকি গান গেয়ে বৃষ্টি নামাতে পারত, প্রদীপ জ্বালাতে পারত। আচ্ছা, এগুলো কি সত্যি? তুই তো পড়াশোনায় ভালোই ছিলি। তোর কি মনে হয়? সত্যি?’ বিপদবাবু বন্ধুর দিকে তাকিয়ে রইলেন।
‘ধুর! এসব গুলগাল। শুনতে ভালো লাগে, লোকে তাই বলে। ছাড় তো…’
চায়ের দাম মিটিয়ে দুই বন্ধু হাঁটতে শুরু করলেন। দুজনেই ভেবেছিলেন মকবরার সামনে নবাবি তোরণ জাতীয় কিছু থাকবে। তার বদলে দুই দোকানের ফাঁকে লোহার গ্রিলের একটা সাধারণ গেট দেখে দুজনেই হতাশ হলেন। গেটের একপাশে পরিত্যক্ত চায়ের কাপ আর চিপসের প্যাকেট স্তূপ হয়ে আছে। গ্রিলের ওপারে প্লাস্টিকের চেয়ারে একজন সিকিউরিটি গার্ড এলিয়ে ঝিমোচ্ছে। জিজ্ঞাসা করে জানা গেল টিকিটের বালাই নেই, প্রবেশ অবাধ। বিনা পয়সার জিনিস মূল্যহীন মনে হয়। ঢুকতে পয়সা লাগবে না ভেবে জায়গাটার আকর্ষণ যেন ঝুপ করে পড়ে গেল। ঢোকার রাস্তা সরু হলেও পেছনে দেখা গেল জায়গাটা বেশ একটা পার্কের মতো ছড়ানো। একটু এগোলেই গোলাপের সারির পেছনে একটি বিরাট মসজিদ। এই তবে তানসেনের মকবরা? আচ্ছা, ভদ্রলোক হিন্দু ছিলেন না? পদবি পান্ডে ছিল, অথচ কবর হল – তবে কি ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন?
বিপদবাবু সাতপাঁচ ভেবে একজনকে জিজ্ঞাসা করলেন এটাই তানসেনের সমাধি কি না।
‘না, না। এটা তো সুফি সন্ত গাউস মহম্মদের সমাধি। তানসেনের মাজার ওদিকে। যান না, কেয়ারটেকার আছে।’
সেদিকে তাকিয়ে বিপদবাবু আরেকবার দমে গেলেন। বাঁধানো রাস্তা ডান দিকে যেখানে শেষ হয়েছে, সেখানে বুকসমান উঁচু পাথরের একটা প্ল্যাটফর্ম। তার ওপর ইতস্তত কবর। মাঝখানে পাথরের সভাগৃহ মতন জায়গা। জুতো খুলে দুজনে সিঁড়ি বেয়ে উঠে এলেন। পাথরের মেঝের ওপর দাঁড়িয়ে পাথরের ছাদ ধরে রেখেছে পাথরের একডজন পিলার। ভেতরে ঢোকার সরু রাস্তাটুকু বাদ দিলে চারপাশে মেঝে থেকে কোমর-পর্যন্ত-উঁচু হয়ে উঠেছে দেওয়াল। তাতে জাফরি-বসানো। সূর্যের তেজ বাড়লেই আলো ওপরের শিশব গাছের পাতায় পিছলে জাফরির ফাঁক দিয়ে ঢুকে মেঝেয় কিলবিল করছে। গাউস মহম্মদের ঢাউস সমাধির পাশে তানসেনের সাদামাঠা সমাধি। কবরের ওপর গোলাপি ভেলভেটের চাদর চড়ানো। চাদরের চার কোনা পাথরচাপা – গোস্তাক হাওয়ায় সরে যেন না যায়। চাদরের ওপরে দুটো গাঁদা ফুলের মালা।
কী করা উচিত বুঝতে না পেরে বিপদবাবু কপালে হাত ঠেকিয়ে প্রণাম করলেন। দেখাদেখি যতীনবাবুও হাতজোড় করে মাথাটা একটু নোয়ালেন। তানসেনের কবরের পাশেই আরেকটা কবর। বছর চল্লিশের একটা প্যান্ট-শার্ট পরা লোক খালি পায়ে উবু হয়ে বসে মোমবাতি ধরাচ্ছিল। সাদা ফেজ-টুপির নীচ দিয়ে লম্বা চুল ঘাড় ছাড়িয়েছে। কাঁধে সাদা গামছা ফেলে রাখা। যতীন তাকেই জিজ্ঞাসা করলেন ‘এটা কার কবর?’
‘বিলাস খান, তানসেনের ছেলে। আপনারা কোত্থেকে এসেছেন?’
‘বাঙ্গাল থেকে’, বিপদবাবু হিন্দি বলার দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিলেন।
‘আপনাদের ওখানে গানের খুব চর্চা শুনেছি। আপনারা নিশ্চয়ই বিলাসখানি টোড়ি জানেন?’
বিপদ বুঝে বিপদবাবু বন্ধুর দিকে তাকালেন। যতীনবাবু মেরেকেটে রবীন্দ্র-নজরুল শুনলেও রাগ-টাগ বাপজন্মে শোনেননি। সেকথা স্বীকার করতেই কেয়ারটেকার লোকটা হেসে ছোটখাটো একটা বক্তৃতা দিয়ে ফেলল।
‘তানসেনের প্রিয় রাগ ছিল টোড়ি। বাবা মারা যাওয়ার পর বিলাস খান ভেঙে পড়েন। টুটা দিল নিয়ে বাবার প্রিয় টোড়ি গাইতে গিয়ে সুর থেকে ভটকে যায়। তবে জাতশিল্পী। তাই ভুলেও গলা দিয়ে যেটা বেরোয়, সেটাই হয়ে দাঁড়ায় নতুন একটা রাগ। যার নাম বিলাসখানি টোড়ি। বিলাস খানের সুরে বিচ্যুতি ছিল, কিন্তু বাপের প্রতি শ্রদ্ধায় খামতি ছিল না। উমদা আদাকার, সাচ্চা বেটা। বাবার পথ থেকে ভটকে গেছিল, তাই একটা নতুন রাগ সৃষ্টি হোল। কি আজব কথা, বলুন?’
কবরের কাছাকাছি একটি বাচ্চা তেঁতুল গাছ। সামনে পাথরের ফলকে লেখা ছিল এই গাছের পাতা নিতে নাকি দেশের নানা প্রান্ত থেকে গাইয়েরা আসে। তাদের বিশ্বাস, পাতায় জাদু আছে। খেলেই গলায় সুর-সরস্বতী বাসা বাঁধেন।
‘কিন্তু গাছটা তো অত পুরোনো মনে হচ্ছে না?’ বিপদবাবু অবিশ্বাসের সুরেই বললেন।
‘সে গাছ কি আর আছে বাবু? এটা তারই নাতিপুতি কেউ হবে। নিয়ে যান না কয়েকটা পাতা।’
‘না’, বিপদবাবু হাত নেড়ে বললেন, ‘আমরা গান-টান গাই না। আমরা নিয়ে কী করব?’
‘আরে নিয়ে যান। লোকে বলে, খেলে গলার ছোটখাটো সমস্যাও দূর হয়ে যায়।’ লোকটা প্রায় জোর করেই পাতা সহ ডালের একটা ডগা ভেঙে হাতে দিল।
‘বলো কি! রাগও শেখায়, আবার রোগও সারায়!’ তালুতে হলদে কচিপাতাগুলো দেখে বিপদবাবু যেন মজাই পেলেন। ‘কই হে যতীন, তুমিও কয়েকটা পাতা নিয়ে নাও। বয়েসকালে হোলো না, শেষ বয়েসেই হয়তো তোমার গলায় সুর খেলবে।’
যতীনবাবুর কোনও হেলদোল দেখা গেল না। ভদ্রলোক এখনও বিলাস খানের কবর দেখে যাচ্ছেন। একটা মেরুন চাদর কবরের ওপর বিছানো। তাতে সাদা ফুটকি। বাপের পাশে, চাদরের নীচে শুয়ে আছেন বিলাস খান। উমদা আদাকার। তার চেয়েও বড় কথা – সাচ্চা বেটা। এই বয়েসেও কখনও দুপুরবেলা সুবীর যতীনবাবুর পাশে গুটিশুটি মেরে শুয়ে থাকে।
কেয়ারটেকারের হাতে একশো টাকা গুঁজে মাজার থেকে নেমে দু’বন্ধু জুতোয় পা গলালেন। এদ্দুর এসেছেন, গাউস মহম্মদ কে ছিলেন না জানলেও বিপদবাবু মকবরার ভেতরটা দেখবেন বলে ভেতরে ঢুকে গেলেন। যতীনবাবু ঢুকলেন না। পকেট থেকে মোবাইলটা বার করে ছেলেকে ফোন করলেন।
‘কে, বাবু? হ্যাঁ, ঠিক আছি। শোন, তুই ল্যাবের ব্যাপারটা ভালো করে ভেবেছিস তো? শোন, আমার আপত্তি নেই। ফিরে আসি, লোনটোনের ব্যাপারে ব্যাংকে কথা বলতে হবে। না, নতুন কিছু ভাবছিস, আমি আপত্তি করব কেন? ফিরে আসি, কেমন?’